খেলাঘরখেলাঘর

ছোট্ট ইডার ফুল গুলি

শেষ অবধি ফুলেরা একে অপরকে শুভরাত্রি জানাল। তারপরে ছোট্ট ইডা চুপি চুপি ফিরে এসে তার নিজের বিছানায় শুয়ে পড়ল, আর যা যা দেখেছে তার স্বপ্ন দেখতে শুরু করল। পরের দিন সকালে যখন তার ঘুম ভাঙ্গল, সে ছুট্টে গেল তার টেবিলটার কাছে, ফুলগুলি আছে কিনা দেখার জন্য। সে পুতুলের বিছানার পর্দা সরিয়ে দেখতে পেল, তারা সবাই শুয়ে আছে, কিন্তু আগের দিনের থেকে অনেক বেশি ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। সোফি সেই ড্রয়ারটাতেই ছিল যেখানে ইডা তাকে রেখে গেছিল, কিন্তু তাকে দেখে মনে হল তার খুব ঘুম পেয়েছে।

"তোমার কি মনে আছে তোমাকে ফুলেরা আমাকে কি বলতে বলেছিল ?" জিজ্ঞেস করল ছোট্ট ইডা। কিন্তু সোফিটা বোকার মত তাকিয়ে রইল, কিছুই বলল না।

"তুমি মোটেও ভাল মেয়ে নও, " বলল ইডা, "তাও ওরা তোমার সাথে নাচ করেছিল।"

তারপরে সে সুন্দর পাখির ছবি আঁকা একটা ছোট্ট কাগজের বাক্স নিল, আর শুকিয়ে যাওয়া ফুলগুলিকে তার মধ্যে শুইয়ে দিল।

"এইটা হবে তোমাদের সুন্দর কফিন," সে বলল; "আর হ্যাঁ, আমার দাদারা যখন বেড়াতে আসবে, ওদের সাথে আমি তোমাদের বাগানে কবর দেব, যাতে তোমরা পরের গ্রীষ্মে আরো সুন্দর হয়ে ফুটতে পার।"

তার দুই খুড়তুতো দাদা ছিল জেম্‌স্‌ আর অ্যাডল্‌ফাস। তাদের বাবা তাদেরকে একটা করে তীর ধনুক কিনে দিয়েছিলেন, আর তারা সেগুলি ইডাকে দেখাতে নিয়ে এসেছিল। সে তাদেরকে শুকিয়ে যাওয়া ফুলগুলির কথা বলল। তারপরে বাবা মায়ের অনুমতি নিয়ে বাগানে ফুলগুলিকে কবর দিতে চলল। আগে আগে চলল দুই ভাই, তীর ধনুক কাঁধে নিয়ে, পেছনে চলল ইডা, সেই শুকিয়ে যাওয়া ফুলে ভরা বাক্সটা হাতে নিয়ে। তারা বাগানে একটা ছোট্ট কবর খুঁড়ল। ইডা তার ফুলেদের আদর করে বাক্সটা মাটিতে পুঁতে দিল। তাদের কাছে কিনা বন্দুক বা কামান কিছুই ছিলনা, তাই জেম্‌স্‌ আর
অ্যাডল্‌ফাস কবর দেওয়ার পরে একবার করে তাদের তীর ধনুকই চালিয়ে দিল।




হান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন এর 'লিট্‌ল ইডা'স ফ্লাওয়ার্স' অবলম্বনে।

অনুবাদঃ
মহাশ্বেতা রায়
কলকাতা










মহাশ্বেতা রায় চলচ্চিত্রবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করেন। ওয়েব ডিজাইন, ফরমায়েশি লেখালিখি এবং অনুবাদ করা পেশা । একদা রূপনারায়ণপুর, এই মূহুর্তে কলকাতার বাসিন্দা মহাশ্বেতা ইচ্ছামতী ওয়েব পত্রিকার সম্পাদনা এবং বিভিন্ন বিভাগে লেখালিখি ছাড়াও এই ওয়েবসাইটের দেখভাল এবং অলংকরণের কাজ করেন। মূলতঃ ইচ্ছামতীর পাতায় ছোটদের জন্য লিখলেও, মাঝেমধ্যে বড়দের জন্যেও লেখার চেষ্টা করেন।