খেলাঘরখেলাঘর

এবারে যে বইটা নিয়ে বলব সেটার কথা শুনলে তুমি অবাক হয়ে যাবে। আমি কিছুদিন আগে ইচ্ছামতীর লাইব্রেরিতে ঘুরতে ঘুরতে এই বইটা দেখেছি। আগে বইটার মলাটের ছবি দেখ।

এটা একটা পাতলা মত বই, বেশ রংচঙে করে ছাপা। এই বইটার লেখক শ্রী প্যারী চরণ সরকার। আর বইটা কবে লেখা হয়েছিল জান? সেই-ই ১৮৪৫ সালের কাছাকাছি! আর কেন লেখা হয়েছিল জান? একটু বলি গল্পটা।

প্যারীচরণ সরকার ছিলেন সেইরকম একজন মানুষ, যিনি প্রথম বৃটিশ শাসিত বাংলার মানুষদের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চেয়েছিলেন। কলেজের পড়াশোনা শেষ করে তিনি বারাসতের এক স্কুলে প্রধাণ শিক্ষকের দায়িত্ব পান। সেখানে পড়াতে গিয়ে দেখেন, এদেশীয় ছাত্রদের জন্য ঠিকঠাক ইংরেজি শেখার বই নেই। তখন তিনি নিজেই লিখে ফেললেন 'ফার্স্ট বুক অফ রিডিং ফর নেটিব চিলড্রেন'। পরে তিনি এর দ্বিতীয় ভাগ ও লিখেছিলেন। আর শুধু লেখেন নি, নিজে সেই বই ছাপাতেনও। উত্তর কলকাতায় এখনো রয়েছে তাঁর সেই বাড়ি এবং ছাপাখানা, যদিও জরাজীর্ণ অবস্থায়।

এই বই কে না পড়েছেন? স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ নিজে ছোটবেলায় পড়েছেন এই বই। আর এই বই তাঁর খুব পছন্দের বই ছিল। একটু পুরনো গল্প-উপন্যাস পড়লেই তুমি 'প্যারীবাবুর ফার্স্ট বুক' অবধি পড়াশোনা করেছে...এইরকম বর্ণনা পেতে পার। সেই ফার্স্ট বুক হল এই বই।

কি আছে এই বইতে? ইংরেজি ভাষা উচ্চারণ বিধির একেবারে গোড়ার নিয়মকানুনগুলি লেখা আছে এই বইতে। অতি সহজ সরল ভাষায়। যদি তোমার নিজের ইংরেজি ভাষা শেখার ব্যাপারে সমস্যা থাকে, অথবা এমন কাউকে জান তুমি, যে সহজে ইংরেজি ভাষার উচ্চারণ শিখতে পারছে না, তাহলে কোন চিন্তা না করে কিনে আন এই বই। আর পড়াশোনার জন্য যদি দরকার নাও হয়, তাহলে শুধুমাত্র সংগ্রহ করে রাখার জন্যেও এই বইটার এক কপি নিজের কাছে রাখাই যায়।

প্যারীচরণ সরকারের ফার্স্ট বুক হয়ত আজকাল আর কোন স্কুলে পড়ানো হয়না । কিন্তু তাঁর লেখা এই বই এর একটা কবিতা এখনো অনেকে মুখস্থ রেখেছেন, আর ছোটদের মুখস্থ করান। সেটা হল এইরকমঃ

Thirty days have September,
April, June and November,
February has Twenty -Eight alone,
And the rest have thirty-one.

কোন মাসে কত তারিখ, মনে রাখার কত সহজ উপায়, তাই না?

----------------

ফার্স্ট বুক অফ রিডিং
আনন্দ পাবলিশার্স
ষাট টাকা

(কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ এই রচনার অনেক তথ্য নেওয়া হয়েছে রোববার পত্রিকা থেকে। )


বইপোকা অবশ্যই নতুন নতুন বই পড়তে ভালবাসেন। আরো ভালবাসেন সেইসব বই এর খোঁজ সবাইকে দিতে। নতুন নতুন বইয়ের খোঁজ পেতে চোখ রাখ বইপোকার দপ্তরে। আর তোমার কাছে যদি কোন খুব ভাল বই থাকে, যেটার কথা তুমি বন্ধুদের এবং বইপোকাকে জানাতে চাও, তাহলে বইপোকাকে সেই বইয়ের খবর জানিয়ে চিঠি লেখ ইচ্ছামতীর মেইল ঠিকানায়।