খেলাঘরখেলাঘর

পটলবাবু ও একজন বিজ্ঞানী


সেই মর্ণিং ওয়াকে গিয়ে গাড়ির অ্যাক্সিডেন্ট দেখার পর দু মাস কেটে গেছে। উড়ুক্কু ট্যাক্সিতে চেপে কলকাতার পুজো প্যান্ডেল আর আলোকসজ্জা দেখতে বেরিয়েছেন দুই বন্ধু। এই সবটাই সম্ভব হয়েছে পটলবাবুর জন্য। এর জন্যই আজ সর্বত্র পটলবাবুর জয়জয়াকার।

“তুই একটা কীর্তি করলি বটে বুড়ো। আমি তো ভেবেছিলাম তোর দ্বারা এসব কিচ্ছু হবে না”

বন্ধুর কথায় মনে মনে সত্যিই বেশ গর্ববোধ করলেন পটলবাবু। তারপর হাসতে হাসতে বললেন, “ওরে বিজ্ঞানটাকে তো কোনদিন ভালোবেসে দেখলি না -যে কোনটা সম্ভব আর কোনটা নয়। তবে তোর কৃতিত্বও কম নয় রে গোবিন্দ। তুই না বললে আমিই কি কখনো এটা নিয়ে ভাবতাম।”

উড়ুক্কু ট্যাক্সি সমস্যার কিরকম সমাধান হতে পারে তা জানিয়ে পটলবাবু একটা চিঠি লিখেছিলেন বিজ্ঞান কাউন্সিলের প্রধানকে আর তাতে বলেছিলেন - অনেক প্রাণী, প্রজাপতি, পাখি পৃথিবীর চুম্বকশক্তি অনুভব করতে পারে। তারা যখন দলে দলে কোন এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যায় তখন এই ক্ষমতার প্রয়োগ করে। শহরের এক দিক থেকে অন্যদিকে উড়ে যাওয়া ট্যাক্সিরাও যদি এইভাবে পৃথিবীর চুম্বকশক্তির সাথে নিজের চুম্বকশক্তি সাজিয়ে নিতে পারে, তবে একদিকে উড়ে যাওয়া গাড়িগুলো একই সমতলে থাকবে। আর বেকায়দায় যদি কখনও দুটো গাড়ি সামনা সামনি এসে পড়ে? এ তো সব্বাই জানে যে চুম্বকের সমান মেরু একে অপরকে বিকর্ষণ করে।

বিজ্ঞানীরা সেই চিঠি একবার পড়লেন, দুবার পড়লেন। তারপর বললেন -সত্যিই তো। সঙ্গে সঙ্গে পটলবাবুর ডাক পড়ল। এত তাড়াতাড়ি আর এত সহজে যে এই সমস্যার সমাধান হবে তা কেউ ভাবতেও পারেনি। কাউন্সিলও যারপরনাই খুশি কারন ট্যাক্সিতে খুব বেশি কিছু বদলাতেও হল না।  

আজকে ২০৫০ সালে যে কলকাতার বাঙালি এই প্রথম ট্যাক্সিতে চড়ে দুর্গাপুজো দেখছে, সেসব পটলবাবুর জন্যেই। তবে পটলবাবু ঠিক করেছেন এখানে থামার প্রশ্নই ওঠে না। তিনি আরেকটা চিঠি লিখবেন। কি নিয়ে তাই নিয়েই ভাবনাচিন্তা করছেন। তবে দিনরাত ছুটোছুটি, ব্যাডমিন্টন, লাইব্রেরী এসব সামলানোর পর আর সময় কোথায়।    

 

অভ্র পাল
কলকাতা

ছবিঃ
কৌস্তুভ রায়
কলকাতা