সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo

আজ ১৪ই নভেম্বর , শিশু দিবস। এই শিশু দিবসে , তোমার এবং সারা পৃথিবীর সমস্ত ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের জন্য রইল অনেক অনেক ভালবাসা।

আজকের তারিখে প্রতিবছর ভারতে শিশু দিবস পালন করা হয়। কিন্তু জানো কী, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে, সারা বছর জুড়ে, বিভিন্ন দিনে 'শিশু দিবস' পালন করা হয়? ভারতে যেমন আজ, ১৪ই নভেম্বর, পন্ডিত জওহরলাল নেহরুর জন্মদিনে শিশু দিবস পালন করা হয়, তেমনি বাংলাদেশে পালন করা হয় ১৭ই মার্চ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্মদিনে।

বিভিন্ন দেশে আলাদা আলাদা শিশুদিবস পালন করা হলেও, দুটো তারিখ আছে, যে দুই দিন আন্তর্জাতিকভাবেই ছোটদের কথা ভেবে শিশু দিবস পালন করা হয়। ১৯২৫ সালে, সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত হয় `World Conference for the Well Being of Children'। সেই অধিবেশনের পরে, বিভিন্ন দেশের সরকার ঠিক করেন, ছোটদের সুবিধা-অসুবিধার দিকে সকলের দৃষ্টি যাতে সবসময়ে থাকে, তাই প্রতিবছর একটা দিন আন্তর্জাতিক শিশু দিবস হিসাবে পালিত হোক। বিভিন্ন দেশ মিলে ১ল জুল তারিখটিকে আন্তর্জাতিক শিশু দিবস হিসাবে স্থির করে।

এছাড়াও, প্রতি বছর ২০শে নভেম্বর পালন করা হয় ইউনিভার্সাল চিল্ড্রেন্‌স্‌ ডে। ১৯৫৯ সালে, এই তারিখে, ইউনাইটেড নেশ্‌ন্‌স্‌ বা রাষ্ট্রপুঞ্জে Declaration of the Rights of the Child বা শিশুদের অধিকারের বিবৃতি গৃহীত হয়েছিল। আর ১৯৮৯ সালে, এই একই তারিখে, Convention on the Rights of the Child বা শিশুদের অধিকারের নিয়মপত্র গৃহীত হয়। রাষ্ট্রপুঞ্জের এই গুরুতপূর্ণ নিয়মপত্র অনুযায়ী শিশুদের অধিকারের মধ্যে পড়ে জীবনের অধিকার, স্বাস্থ্যের, শিক্ষা এবং খেলাধূলার অধিকার; সাথে রয়েছে পরিবারের অধিকার, সবরকমের হিংসা-হানাহানির থেকে রক্ষা পাওয়ার অধিকার এবং কোন রকমের বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার অধিকার।

ভারতে শিশু দিবস যদিও স্কুলে বা বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে পালন করা হয়, পৃথিবীর অন্যান্য কিছু দেশে,যেমন তুরস্ক, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান - তাদের নিজস্ব শিশু দিবসগুলি জাতীয় ছুটির দিন হিসাবে পালন করা হয়।

তোমার স্কুলে যদি আজ ছুটি থাকে, তাহলে বাড়িতেই আনন্দে কাটাও। আর যদি স্কুলে নানারকমের অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকে, তাহলে তো আর কথাই নেই ! আশা করা যায় ভালই কাটবে দিন। তবে ইচ্ছামতী আর আমি চাই যে মোটে একটা দিন হয়ে বছরের প্রতিটা দিনই হওয়া উচিত একেকটা নতুন শিশু দিবস। কারণ, সারা পৃথিবীর সব ছোটদের রোজই ভাল থাকা উচিত, আনন্দে থাকা উচিত। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, আমরা যারা বয়সের নিয়মে বড়, তারা এই কথাটা বেশিরভাগ সময়েই ভুলে যাই। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে, আমাদের মধ্যে কিছু বড়রা নিজের মধ্যে মতের মিল না থাকায়, একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমে পড়েছে। আর এই যুদ্ধে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেই সেই দেশের শিশুরা। হাজার হাজার শিশু তাদের বাবা-মা-পরিবারকে হারিয়েছে; বন্ধ হয়ে গেছে স্কুলে যাওয়া, বিকেল বেলা পার্কে খেলতে যাওয়া বা শপিং মলে নতুন জামা কিংবা গল্পের বই বা খেলনা কিনতে যাওয়া। পেটের ক্ষিদে মেটাতে বা প্রাণের ভয়ে অনেক ছোট ছোট ছেলেমেয়েকে হতে হয়েছে শিশু-সৈনিক। অনেকেরই জীবন কাটছে অন্য দেশে, অচেনা মানুষদের মাঝখানে, খোলা আকাশের নিচে কোন অস্থায়ী শরণার্থী শিবিরে। তোমার বয়সী এইসব ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের জীবনে আলাদা করে নেই কোন শিশু দিবস। ইচ্ছামতী আর আমি মনে করি, যেদিন সারা পৃথিবীর সমস্ত ছোট ছোট ছেলেমেয়ে সমানভাবে হেসে খেলে খুশি থাকতে পারবে, সেইদিনই সার্থক হবে আমাদের প্রতিবছরের শিশু দিবস পালন।

ভাল থেকো, ভাল রেখো।

চাঁদের বুড়ির চরকা

ছবিঃ পিক্সাবে

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা