সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
চাঁদের বুড়ির চরকা-চিঠি ১৪২৬/০১ঃ শুভ নববর্ষ

শুভ নববর্ষ। চোখের সামনে দিয়ে হুশ করে আবারও পেরিয়ে গেল আরও একটা গোটা বছর। আমরা আবার এসে দাঁড়ালাম আর একটা নতুন বছরের দোড়গোড়ায়। আমাদের সকল লেখক, শিল্পী, পাঠক, শুভানুধ্যায়ী বন্ধুদের জানাই বাংলা নতুন বছরের প্রীতি ও শুভকামনা।

ইচ্ছামতী আমাকে বলল- নতুন বছর তো সেই কবেই শুরু হয়ে গেছে, পয়লা জানুয়ারি; এখন তো বরং নতুন ক্লাসে ওঠার সময়। কারোর কারোর নতুন ক্লাস শুরু হয়ে গেছে, কারোর হল বলে… 'শুভ নববর্ষ' না বলে 'হ্যাপি নিউ ক্লাস ইয়ার' বললে কেমন হয়? সেরকম কিছু বন্ধুদের বলা যায় কি না সেটা নিয়ে আলোচনা করার আগেই এল পরের প্রশ্ন- আমরা তো সারা বছর বাংলা ক্যালেন্ডারের হিসাব মেনে কিছুই করিনা- আমার সব বন্ধু তো সবক'টা মাসের নামও সবসময়ে পরপর বলতে পারে না, জন্মদিনই হোক বা স্কুলের পরীক্ষার দিন- সবই তো ইংরেজি ক্যালেন্ডার মেনে হয়, তাহলে শুধুশুধু একটা আলাদা বছর পালন কেন? দুটো ক্যালেন্ডার তোমাদের গুলিয়ে যায়না বুঝি?

যায় বইকী!  এই এক্ষুনি আশেপাশের কোনো গুরুজনকে জিজ্ঞেস করে দেখ দেখি - আষাঢ় মাসের ২০ তারিখ ইংরেজি কোন মাসে আসবে? দেখবে উত্তর দিতে গিয়ে  খানিক্ষণের জন্য ঘেমে-নেয়ে একশা হয়ে যাবেন তিনি। আর হ্যাঁ, এটাও তো ঠিক যে আমাদের আজকের জীবনে ইংরেজি বা আন্তর্জাতিক ক্যালেন্ডার ( যার ভালোনাম গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার)-এর ভূমিকাই সবথেকে বেশি। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্যালেন্ডার তো আর আমাদের একেবারে নিজস্ব উৎসব, নিজেদের পালা-পার্বণের খবর রাখে না। তাকে তো সারা দুনিয়ার খোঁজ রাখতে হয়। তাই শুধু বাঙালিরা না, সারা দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ নিজেদের পালা-পার্বন, ঋতুবদল, কৃষিকাজ ইত্যাদির ভিত্তিতে তৈরি করা ক্যালেন্ডার ব্যবহার করেন, অবশ্যই গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের পাশাপাশি। এই মূহুর্তে সারা পৃথিবীতে অন্তত চল্লিশ রকমের আলাদা আলাদা ক্যালেন্ডার ব্যবহার করা হয়। স্কুলের পরীক্ষা বা জাতীয় ছুটির মত কেজো ব্যাপারের জন্য গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার মেনেই হিসাব করা হয়, কিন্তু স্থানীয় আনন্দ-উৎসবের জন্য স্থানীয় ক্যালেন্ডারের ওপরে আজও নির্ভরশীল অনেক গোষ্ঠীর মানুষ।আর তাই, আষাঢ় মাস নিয়ে করা প্রশ্নটার উত্তর দিতে খানিক হিসেব কষতে হলেও, আমরা বাংলা ক্যালেন্ডার, বঙ্গাব্দ আর নববর্ষ উদ্‌যাপনকে ধরে রাখতে চাই, মনে রাখতে চাই। নববর্ষ উদযাপনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের বাঙালিয়ানা, আমাদের নিজস্ব পরিচিতি। পয়লা জানুয়ারি সারা দুনিয়ার সবার সঙ্গে আমাদেরও; কিন্তু 'পয়লা বৈশাখ' শুধুই বাঙালিদের।

পয়লা বৈশাখ শুধুই খুব আনন্দ করে ,নাচ-গান করে, নতুন জামা পরে, ভালোমন্দ খেয়ে কাটানোর উৎসব নয়। সবার সঙ্গে মিলেমিশে ভালো থাকার এবং একে-অপরকে ভালো রাখার কথা বারে বারে আমাদের মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যেও প্রতিবছর ঘুরে ঘুরে আসে এই দিন। আমরা যেন সেই কথা ভুলে না যাই।

চাঁদের বুড়ির চরকা-চিঠি ১৪২৬/০১ঃ শুভ নববর্ষ

মিলেমিশে থাকার, ভালো থাকার , ভালো রাখার কথা প্রসঙ্গেই, এই পয়লা বৈশাখে, ইচ্ছামতীর নববর্ষ কিস্তিতে , অন্যান্য নতুন লেখার সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে  'যদি শুরু হয় পারমাণবিক যুদ্ধ'  শীর্ষক নিবন্ধ;  মাত্র কিছুদিন আগে পুলওয়ামায় ঘটে যাওয়া জঙ্গী হামলার পরে, আমাদের চেনা পরিচিত মানুষদের মধ্যে অনেকেই চেয়েছিলেন ভারত এবং পাকিস্থানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হোক। আপাতত সেই যুদ্ধ হচ্ছে না। কিন্তু ভবিষ্যতে যদি আবার যুদ্ধ যুদ্ধ রব ওঠে, তাহলে তার আগে আমাদের জেনে নেওয়া দরকার, আজকের দিনে দুই পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন দেশের মধ্যে যুদ্ধ হলে ঠিক কী পরিস্থিতি হতে পারে? এই নিবন্ধে লেখক সেই বিষয়গুলির প্রতিই সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছেন। আমরা বড়রা  যে সবসময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিই না, সেটা তো সুইডেনের কিশোরী গ্রেটা থানবার্গ আমাদের  বড়দের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েই দিয়েছেন। বিশ্বের নামি-দামী নীতিপ্রণয়নকারীদের সামনে গ্রেটা যে বক্তব্য রেখেছিলেন গত ডিসেম্বর মাসে, রইল তার বঙ্গানুবাদ-ও। অবশ্যই পড়ে দেখো, আর তোমার বন্ধুদের সঙ্গে ভাগ করে নিও গ্রেটার স্বপ্ন। একটা সবুজ, সজীব, সরস পৃথিবীর স্বপ্ন তো আমরা সবাই দেখি, তাই না?

সবার ভালো হোক।

চাঁদের বুড়ির চরকা

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা