সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo

কেমন আছ, ইচ্ছামতীর বন্ধু?

অ-নে-ক-দি-ন পরে তোমার সাথে আবার কথা হচ্ছে। তুমি কি ভাবছিলে আমার কথা? আমাদের কথা? ভাবছিলে কি, এই যে চাঁদের বুড়ি আর ইচ্ছামতী মাঝে মধ্যে একটা করে চিঠি পাঠাচ্ছে, কিন্তু আর কিছু বলছে না, এদের ব্যাপারটা কি? আসলে কি হল জানতো, গত বেশ কিছুদিন ধরে চাঁদের বুড়িকে অনেক ঝড় ঝাপ্টার সামনে পড়তে হচ্ছিল। সে বড় দুঃসময় ছিল - তার চরকা গেছিল ভেঙে, তার সাত রঙা সুতো সব গেছিল জড়িয়ে-মড়িয়ে...কিন্তু যেমন সব আঁধার রাতের শেষেই আশার আলো নিয়ে আসে নতুন ভোর, ঠিক সেইরকমই, চাঁদের বুড়িও সেই ঝড় ঝাপ্টা কাটিয়ে উঠতে পেরেছে। আর ইচ্ছামতীকে সাজিয়ে গুছিয়ে, এক্কেবারে নতুন করে হাজির করছে তোমার সামনে !

নতুনই বটে, তাই না? সেই গত সেপ্টেম্বরে , ইচ্ছামতীর পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার সময়েই বলেছিলাম, জন্মদিনে ইচ্ছামতীর দাবী অনেক। লিস্টি মিলিয়ে মিলিয়ে একে একে সেইসব দাবী পূরণ করা হবে।সেই সমস্ত দাবীর অনেকগুলিকেই পূরণ করে একেবারে নতুনভাবে সাজিয়ে তোলা হল তাই ইচ্ছামতীকে। ২০১৪ সালে ইচ্ছামতীতে নতুন কি কি বদল বা সংযোজন হল, জানতে হলে একবার পড়ে দেখ এই দুটি লিঙ্কঃ

যত প্রশ্ন আছে তোমার মনে
২০১৪-এর ইচ্ছামতীতে নতুন কি কি?

এতদিন ধরে তোমাকে চিঠি পাঠানো হয়নি, তাই তোমার সাথে কত বিষয় নিয়ে গল্প করাও বাকি থেকে গেছে।তাহলে চল, এবার একটু গল্প করা যাক।ইচ্ছমতী আর আমি সবসময়েই আমাদের পরিবেশ নিয়ে চিন্তিত। পৃথিবীর চারিদিকেই পরিবেশ এবং আবহাওয়ায় তীব্র পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। এবারের শীতে হঠাৎ এক ভয়াবহ শীতল মেরুঝড়ের প্রকোপে, নায়াগ্রা জলপ্রপাতের অনেকখানি অংশ হঠাত করে জমে বরফ হয়ে গেল। পুরোপুরিই জমে গেছিল, না কি শুধুমাত্র জলের ওপরের অংশ জমেছিল, তাই নিয়ে অবশ্য দ্বিমত ছিল।


বাঁদিকে জমাট নায়াগ্রা; ডান দিকে চীনে ডিজিটাল সূর্যোদয়

কিন্তু পুরো হোক বা ওপরের অংশ, সেই জমে যাওয়া নায়াগ্রা প্রপাতের ছবি দেখে তো সারা বিশ্ব হাঁ হয়ে গেছিল।এবারে ভাব, একটা গোটা জলপ্রপাতকে জমিয়ে দিতে পারে, এরকম একটা মেরু ঝড় উত্তর আমেরিকা ও কানাডার মানুষদের কিরকম শীতে কাবু করে ফেলেছিল। আবার আরেকদিন ইচ্ছামতী আমাকে আরেকটা অবাক করা ছবি দেখাল। চীনের বেজিং পৃথিবীর সবথেকে বেশি দূষিত মহানগর গুলির মধ্যে একটি। এই শীতে বেশ কিছুদিন ধরে বেজিং-এ দূষণের ফলে এতই ধোঁয়াশার সৃষ্টি হচ্ছিল যে মানুষ সূর্যের মুখ দেখতে পাচ্ছিলেন না। চীন সরকার তাই শেষে এক অবাক কান্ড করল। রাস্তার ধারে স্থাপন করা বিশাল এলসিডি স্ক্রীনে সূর্যোদয়ের ছবি দেখাল মনমরা নাগরিকদের। সত্যিকারের নয়, ডিজিটাল সূর্যোদয় দেখেই তুষ্ট থাকতে হল মানুষজনকে।

তুমি পৃথিবীর যে কোণাতেই থাক না কেন, নিজের পরিবেশ এবং প্রকৃতি সম্পর্কে সচেতন থাক। আমরা পৃথিবীর সাথে বড্ড বেশি দুর্ব্যবহার করছি, তাই মনে হয় পৃথিবী রাগে-দুঃখে আমাদের মাঝে মাঝে এইরকম ভয়ানক শাস্তি দেয়।আমাদের মনে করিয়ে দেয়, চাইলে সেও আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করতে পারে।

>দেবদাস ছায়াছবিতে পার্বতী চরিত্রে সুচিত্রা সেন
দেবদাস ছায়াছবিতে পার্বতী চরিত্রে সুচিত্রা সেন
গত কয়েকদিনে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন আমাদের প্রিয় দুজন মানুষ। প্রথম জন হলেন বাংলা সিনেমা জগতের মহানায়িকা সুচিত্রা সেন। সুচিত্রা সেন অভিনীত সিনেমা তুমি হয়ত কিছু দেখেছ, হয়ত দেখনি। বাংলা সাদা-কালো ছবির দুনিয়ায় অন্যতম সেরা অভিনেত্রীদের মধ্যে একজন সুচিত্রা সেন। সুচিত্রা সেনই বাংলার একমাত্র অভিনেত্রী, যাঁকে "মহানায়িকা" আখ্যা দেওয়া হয়েছিলে। সত্যিকারের একজন সুপারস্টার ছিলেন তিনি। অনেকদিন আগে, নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করতে করতেই স্বেচ্ছায় কাজ থেকে অবসর নেন তিনি। তারপরে তাঁকে আর বাইরের কোন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে, বা অভিনয় করতে দেখা যায়নি। ফলে মানুষ তাঁর সেই দারুণ সুন্দর অল্পবয়সের চেহারায়, চিরকালের নায়িকা রূপেই মনে রেখেছে।
২০০৯ সালের ক্লিয়ারওয়াটার ফেস্টীভ্যালে পিট সিগার
২০০৯ সালের ক্লিয়ারওয়াটার ফেস্টীভ্যালে পিট সিগার
আমাদের আরেকজন মনের মানুষ যিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেল, তিনি হলে প্রবাদপ্রতিম আমেরিকান লোকসঙ্গীতশিল্পী পিট সিগার।পিট সিগার আমাদের কাছে সবথেকে বেশি পরিচিত we shall overcome, where have all the flowers gone, if i had a hammer- এই সমস্ত গানের জন্য।১৯৪০ থেকেই তিনি ছিলেন আমেরিকান রেডিওর নিয়মিত শিল্পী। ১৯৬০ এর দশক থেকে তাঁর পরিচিতি বাড়তে থাক যুদ্ধবিরোধী, মানবদরদী, সমাজসচেতন, পরিবেশসচেতন গান গাওয়ার জন্য।মারা যাওয়ার মাত্র চার মাস আগেও, ৯৪ বছর বয়স অবধিও পিট সিগার সঙ্গীতের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন।

এদিকে সবেমাত্র শেষ হল কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা। তুমি কি বইমেলা যাও? বা তুমি যে শহরে থাক, সেখানে কি বইমেলা হয়? বই আমাদের সবথেকে ভাল বন্ধুদের মধ্যে এক বন্ধু। মন খারাপ হোক, বা একলা থাকো, বা অবসর কাটানোর উপায় খোঁজ- বই হল এই সব কিছুরই সমাধান।ভাল একটা গল্পের বই, বা ভাল একটা পত্রিকা আমাদের শুধু নিছক আনন্দ দেয় না, যেকোন ভাল বই থেকে পাওয়া তথ্য থেকে আমরা আমাদের অভিজ্ঞতার ঝুলিকে একটু একটু করে ভরে তুলতে পারি।

আজকাল নাকি ছোটদের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস কমে গেছে অনেক। সবসময়ে ডিজিটাল মাধ্যমেই আটকে থাকছ তোমরা। খালি কম্পিউটার গেম্‌স্‌ অথবা টিভির কার্টুন চ্যানেলে চোখ তোমাদের? আমি অবশ্য এই কথাটা পুরোপুরি বিশ্বাস করিনা। এই তো দেখছি, তুমি কেমন বসে ইচ্ছামতী পড়ছ ! কেমন লাগছে? সবে আজকে প্রথম দেখছ ইচ্ছামতী? তাহলে বলব, কার্টুন বা গেম্‌স্‌ এর পাশে পাশে, পড়ার বই পড়ার সাথে সাথে, ভাল পত্রিকা পড়া অভ্যাস কর। নিয়মিত ইচ্ছামতী পড়। ইচ্ছামতীর শুধু নতুন গল্প নয়, পুরনো ২০টা সংখ্যায় গল্প-কবিতা-বেড়ানোর গল্প- জানা-অজানা বিষয়ের ভাঁড়ার অফুরন্ত। ইচ্ছামতীর পাতায় নতুন কি কি আসছে, জানার জন্য রেজিস্টার কর ইচ্ছামতীর নিউজলেটারের জন্য।

আজ এইটুকুই থাক। আমাদের গল্প তো চলতেই থাকবে। নতুন ইচ্ছামতীকে তোমার কেমন লাগছে জানাতে মেইল কর আমাদের, অথবা আমাদের মতামত দেওয়ার পাতায় ও তোমার মতামত জানাতে পার।

খুব ভাল থাক।

   

ছবিঃ উইকিপিডিয়া, ফার্স্টপোস্ট, ডেইলিমেইল

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা