সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
একটা হস্টেলের সিনেমা

'হীরক রাজার দেশে' মনে আছে তোমার? সেই যে দুষ্টু রাজা - হীরের খনিতে প্রজাদের কাজ করাত অথচ টাকা দিত না। যেই অবাধ্য হত, তাকে ঢুকিয়ে দিত যন্তর মন্তর ঘরে। তারপর এমন মগজ ধোলাই দিত যে তার থেকে বেরিয়ে সবাই শেখানো বুলি বলত। শেষে গুপী আর বাঘা রাজাকে এমন শিক্ষে দিল যে তার সব বদমায়েশি গেল ঘুচে! ওই 'হীরক রাজার দেশে'র শ্যুটিং হয়েছিল পুরুলিয়ায়। মনে আছে? একটা পাথরের ফাঁক দিয়ে গুপী-বাঘা আর টোলের পন্ডিত দেখছে হীরক রাজার সৈন্য? ওটা ছিল পুরুলিয়ার জয়চন্ডী পাহাড়। আর যে হীরক রাজ্যের গরীব প্রজাদের দেখেছিলে, তারা ছিল পুরুলিয়ার সাধারণ মানুষ। তা, পরিচালক সত্যজিৎ রায় চেয়েছিলেন সেখানকার রামকৃষ্ণ মিশনের স্কুল বাড়িটাকে হীরক রাজের রাজপ্রাসাদ বানাতে। আর চাইবেন নাই বা কেন? শান্তিনিকেতনের খ্যাতনামা শিল্পী সুনীল পাল নিজে হাতে তৈরী করেন একে। হবেই তো রাজবাড়ীর মতো দেখতে! তবে তিনি সে বার অনুমতি পাননি। ফলে, তারপর থেকে আর কোনো রামকৃষ্ণ মিশনে শ্যুটিংও হয়নি।

একটা হস্টেলের সিনেমা
পুরুলিয়ার সারদা মন্দির

তা সেই রামকৃষ্ণ মিশনেই এতদিন পরে একটা শ্যুটিং হল। তবে তা পুরুলিয়ায় নয়, এবার নরেন্দ্রপুরে।তাই মনে হল, নতুন গল্পটা বলার আগে পুরনো গল্পটা বলে নিই। আর, এই নতুন শ্যুটিং এর মজা এই যে, এখানের পরিচালক ও প্রধান দুই নামচরিত্রের অভিনেতা এই বিদ্যালয়েরই প্রাক্তনী। সিনেমাটার নাম 'বিলের ডায়রি'।

শ্যুটিং এর গল্পে যাওয়ার আগে হস্টেল জীবন সম্পর্কে একটু ছোট্ট করে বলে নিই। হস্টেল হল এমন একটা জায়গা, যেখানে সব ছাত্রেরা (মেয়েদের স্কুলের হস্টেল হলে ছাত্রীরা) এক সাথে থাকে। তুমি যেমন স্কুলের পরে বাড়ি থেকে স্কুলে যাও, ওরা হস্টেল থেকেই স্কুলে যায়। ওখানেই ওরা খায়, শোয়, খেলে- চব্বিশ ঘন্টা কাটায়। নন্টে ফন্টে পড়েছ তো? ওখানে যেমন সুপারিন্টেন্ডেন্ট হাতিরাম পাতি আছে, যেকোন হস্টেলেই থাকেন সেরকম হাউসমাস্টার বা ওয়ার্ডেন। আর কেল্টুদার মতো চরিত্র্ররা তো থাকেই!

আবার শ্যুটিং এর গল্পে ফিরি।

একটা হস্টেলের সিনেমা

'বিলের ডায়েরি' সিনেমাটা নরেন্দ্রপুর রামকৃসষ্ণ মিশনকে ঘিরেই তৈরি।গল্পের শুরু হচ্ছে এমন এক দৃশ্যে, যেখানে মিশনের পুরোনো ছাত্ররা অনেকদিন পর আবার ফিরে এসেছে। এদের মধ্যে অনাবিল নামে একজন তার ছোটবেলার গল্প বলতে থাকে। সে এখন ইউনিসেফ ইন্ডিয়া সংস্থার একজন child protection specialist হয়েছে। ছোটবেলায় তাকে তার বাবা-মা মিশনে ভর্তি করে দিয়ে যান বটে, কিন্তু তাতে তার অন্যদের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে খুব অসুবিধা হত। এর সঙ্গে যোগ হয়েছিল আবার উঁচু ক্লাসের বিশে বলে একটা ছেলে আর তার দলবল। তারা তার নামকে ছোট করে ডাকত বিলে বলে। জান তো, স্বামী বিবেকানন্দেরও ছোটবেলায় ডাকনাম ছিল বিলে?

যাই হোক, সব মিলিয়ে যখন খুব সমস্যার মধ্যে বিলের দিন কাটছে, তখন এক নতুন সন্ন্যাসী মহারাজ হস্টেলে আসেন। নাম কানু মহারাজ। তাঁর ভালোবাসায় বদলাতে থাকে বিলের জীবন। এর সঙ্গে আবার বিলের হাতে এসে পড়ে এক আশ্চর্য ডায়রি।

একটা হস্টেলের সিনেমা

কি হয় তার পর? জানতে হলে অবশ্যই এই গ্রীষ্মের ছুটিতে পড়াশুনোর ফাঁকে দেখে নিতে পারো 'বিলের ডায়রি'। ছবিটি মুক্তি পেতে চলেছে আগামি জুন মাসে। এই ছবিতে অভিনয় করার জন্য ২৪টা স্কুল থেকে বাছাই করে ওয়ার্কশপ করানো হয় ১০০ জন ছাত্রকে। অবশেষে অনাবিল বা বিলের চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পায় আদিত্য প্রতাপ সিং।

বিশ্বরূপ বিশ্বাস পরিচালিত এই ছবিতে অন্যান্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বিশ্বনাথ বসু, সমদর্শী দত্ত, পলাশ অধিকারী, পার্থসারথি দেব ও অন্যান্য বহু পরিচিত মুখ। প্রতিবেদনের শেষে রইল বিলের ডায়েরির ট্রেইলার। আর এই ছবির সম্পর্কে আরো জানতে চাইলে দেখে নিতে পার এই ছবির নিজস্ব ওয়েবসাইট।


ছবিঃ লেখক এবং বিলের ডায়েরি

ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র। লেখালিখি এবং পড়াশোনার মধ্যেই থাকতে ভালোবাসেন।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা