সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
মকড়ি

চুন্নি আর মুন্নি, দুই যমজ বোন । মুন্নিকে দেখতে পুরো চুন্নিরই মত । কেবল মুন্নির ঠোঁটের উপরে ছোট্ট একটা তিল আছে । চুন্নি প্রায়ই মুখে ছোট্ট একটা তিল লাগিয়ে মুন্নি সেজে নেয় । দুই বোনের মুখে যতই মিল থাকুক না কেন, দুজনের স্বভাবে কিন্তু ফারাক অনেক । মুন্নি হল ধীর স্থির,মন দিয়ে পড়াশোনা করে কিন্তু চুন্নি হল তার একদম উল্টো । সে হল চঞ্চল, দুষ্টু, ফাঁকিবাজ, মুন্নিকে দিয়ে নিজের হোমটাস্ক করিয়ে নেয় । চুন্নির একটা বন্ধু আছে নাম মুঘল-এ-আজম, কসাই কাল্লুর পালিত ছেলে । মুঘল -এ- আজম হল চুন্নির পার্টনার -ইন-ক্রাইম যার মানে হল দস্যিপনার সাথী । সারাদিন দুজনে মিলে এটা ওটা করে । কাল্লুর মুরগির খাঁচা থেকে মুরগি ছেড়ে দেয় । ইস্কুলে একজন পড়া না পারলে অন্যজন টিফিনের ঘণ্টা বাজিয়ে দেয় ।

মকড়

একদিন কি হয়েছে, কাল্লু চুন্নির কাণ্ড টের পেয়ে ইয়াব্বড়ো একটা ছুরি নিয়ে চুন্নিকে তাড়া করে । আর চুন্নিও ঝটপট ওই নকল তিলটা লাগিয়ে মুন্নি সেজে নেয় । আর বাঁচার জন্য মুন্নি কে চুন্নি বানিয়ে ও কোন দিক দিয়ে গেছে সেই রাস্তাটা দেখিয়ে দেয় ।

ও বলাই তো হয়নি, চুন্নি-মুন্নিরা যেই গ্রামে থাকে সেই গ্রামে একটা পোড়োবাড়ি আছে আর তাতে নাকি আছে এক মায়াবি ডাইনি । ওই বাড়িতে যেই ঢোকে সে নাকি আর মানুষ হয়ে বাইরে বেরয় না, বেরয় জন্তু হয়ে । তাই গ্রামের লোকেরা সচরাচর ওই দিকটায় যায়না আর গেলেও বাড়ির ভিতর ঢোকে না ।

যাই হোক, কাল্লু তো নকল মুন্নির কথা শুনে মুন্নিকে এমন তাড়াই না করেছে বেচারা মুন্নিতো ভয় পেয়ে গিয়ে ঢোকে ওই পোড়োবাড়িটায় । এদিকে মুঘল-এ-আজম যখন ঘটনাটা চুন্নিকে বলে, চুন্নিও খুব ভয় পেয়ে যায় । সঙ্গেসঙ্গে ও ছোটে গ্রামের বড়দের ঘটনাটা জানানোর জন্য । কিন্তু কেউই চুন্নির মুখের কথা বিশ্বাস করে না আর তা নিছকই চুন্নির দুষ্টুমি বলে উড়িয়ে দেয় । তাই বেগতিক চুন্নি নিজেই ভয়ে ভয়ে বাড়িটায় ঢোকে মুন্নিকে খুঁজতে । বাড়ির ভিতরের ডাইনিটা ততক্ষণে মুন্নিকে মুরগি বানিয়ে দিয়েছে । ডাইনিটা চুন্নিকে শর্ত দেয় যে , যদি চুন্নি তাকে একশোটা মুরগি উপহার দিতে পারে তবেই সে মুন্নির আসল চেহারা ফিরিয়ে দেবে, নচেৎ নয় ।

কি আর করা, চুন্নিতো বেজারমুখে মুরগিটাকে মানে মুন্নিকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসে । আর তারপর থেকেই প্রাণচঞ্চল মেয়েটা কেমন যেন চুপচাপ হয়ে যায় । যে মেয়েটা আগে সবসময় মুন্নির পিছনে লাগত সে এখন সবসবয় মুন্নিকে আগলে রাখে । রাতের বেলায় নিজের প্রানের ঝুঁকি নিয়েও ডাইনির জন্য কাল্লুর খাঁচা থেকে মুরগি চুরি করে । কিন্তু কাল্লু ইদানিং খুব সজাগ হয়ে যাওয়ায় তাও বন্ধ হয়ে যায় । এদিকে তো ডাইনি চুন্নির উপর রেগেই আগুন । তাই ও মুঘল-এ-আজম কে সবকিছু জানাতে বাধ্য হয় । একদিন খাঁচাভর্তি মুরগি ওই পোড়োবাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তায় দেখা হয় ওদের ইস্কুলের বিজ্ঞানের মাস্টারমশাই এর সঙ্গে । তখন ওরা মাস্টারমশাইকে সবকিছু খুলে বলে ।

সব শুনে মাস্টারমশাই ওদের বলেন যে ভূত-প্রেত, ডাইনি এসব হল অন্ধবিশ্বাস । তাই তিনি কিছু একটা সন্দেহ করে পোড়োবাড়িটার মধ্যে ঢুকে যান । অনেকক্ষণ মাস্টারমশাই আসছেন না দেখে চুন্নি মুঘল-এ-আজম কে বাড়ির বাইরে রেখে ভিতরে মাস্টারমশাই কে খুঁজতে যায় । ডাইনিটা মাস্টারমশাইকে একটা কুকুরছানা বানিয়ে মুন্নিকে দেয় । চুন্নি কুকুরছানাটিকে নিয়ে বাইরে আসতেই মুঘল-এ-আজম কুকুরছানাটিকে কোলে নিয়ে আদর করতে থাকে । মুঘল-এ-আজম চুন্নিকে মনে করিয়ে দেয় যে এটা ওর পোষা কুকুর আলাদিন । কাল্লু একদিন চুন্নির বল ভিতরে পাঠিয়ে দেওয়ায় আলাদিন একছুটে সেই যে ভিতরে চলে যায় আর ফিরে আসেনি । তখন ওরা বুঝতে পারে যে ওই কুকুরছানাটি যদি তাদের মাস্টারমশাই না হন তাহলে ওই মুরগিটাও মুন্নি না এবং ওই ডাইনিও আসল ডাইনি না । তখন তারা মনে অনেক সাহস সঞ্চয় করে বাড়ির ভিতরে ঢোকে । আর দেখে...................................................

নাহঃ ! ভেতরে ঢুকে চুন্নি কি দেখতে পেল, সেটা আমি বলব না ! জানতে হলে তোমাকে দেখতেই হবে বিশাল ভরদ্বাজ পরিচালিত ছবি "মকড়ি" । ২০০২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটি কান চলচ্চিত্র উৎসবে (২০০৩) প্রদর্শিত হয় এবং সমালোচক দের কাছ থেকে যথেষ্ট প্রসংশা লাভ করে । এছাড়াও ছবিটি শিকাগো ইন্টারনাশ্যানাল চিলড্রেন ফিল্ম ফেস্টিভালেও পুরস্কৃত হয় । চমৎকার গল্পের বুনট, টানটান চিত্রনাট্য এ ছবির অন্যতম সম্পদ ।

চুন্নি-মুন্নির ছরিত্রে শিশুশিল্পী শ্বেতা প্রসাদের অভিনয় অসাধারন । এ ছবিতে অভিনয়ই তাকে অত ছোট বয়সে জাতীয় পুরস্কার এনে দিয়েছে । এছাড়াও মকরন্দ দেশপাণ্ডে, আর মকড়ি, অর্থাৎ ডাইনির চরিত্রে শাবানা আজমি দুর্দান্ত । ছবিটির যথাযথ নির্মাণ ছবিটিকে শুধু ছোটদের কাছেই নয় বড়দের কাছেও সমান আকর্ষণীয় করে তোলে ।

দীপায়ন সাহা মাল্টিমিডিয়া ও অ্যানিমেশন নিয়ে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে পড়াশোনা করেছেন। ইতিমধ্যেই দীপায়ন বেশ কিছু ছোট ফিল্ম, মিউজিক ভিডিও এবং বিজ্ঞাপনের জন্য নির্দেশক, সম্পাদক এবং সিনেমাটোগ্রাফরের ভূমিকায় কাজ করেছেন।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা