সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
পেঁচোর গুপ্তধন সন্ধান

"বোসো, জ্যোতির্ময়। আমি কুহেলির মেজোকাকা জয়ন্ত সান্যাল।"
বিয়ের পর পেঁচো বিশেষত শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়স্বজনদের সম্বোধনে তার পোশাকি নামটা শুনতে শুনতে কিছুটা 'আইডেন্টিটি ক্রাইসিস'-এ ভুগছে। তার একটু দেরিতেই হুঁশ হল কথাটা তাকে লক্ষ করে। ধড়মড়িয়ে বলে উঠল, "ইয়ে আজ্ঞে, নমস্কার কাকাবাবু।"
"তুমি নাকি রহস্যভেদ করো?" দু-চার কথার পর কাকা জিজ্ঞেস করলেন।
"তেমন কিছু নয় – ঐ মাঝে মাঝে, শখের খাতিরে।"
"তাহলে আমি তোমাকে একটা সমস্যা দেব। বা বলতে পারো, এক সেট সমস্যা।"
পেঁচোর বৌ কুহেলি গদগদ ভঙ্গীতে পেঁচোর দিকে তাকিয়ে বলল, "মেজকা রহস্য কাহিনি পড়তে খুব ভালোবাসে, হেঁয়ালি করে কথা বলতেও। তোমার নিশ্চয়ই ওর সঙ্গে দারুণ জমবে।"
"তা তো বটেই।" পেঁচো বিনয়ের অবতার হয়ে বলল, "আর কাকাকে দেখে মনে হচ্ছে, ওনার দেওয়া সমস্যাগুলি বেশ প্যাঁচালোই হবে। পারব কি না জানি না, তবে মাথা খাটিয়ে চেষ্টা তো করব। আর সেটাই লাভ।"
"তাহলে আর ধানাই-পানাই না করে বলেই ফেলি।" কাকা মুখে এক বিচিত্র হাসি ফুটিয়ে বললেন, "তোমাদের বিয়েতে যেতে পারিনি। তাই বুড়িকে বলেছিলাম একবার তোমায় সঙ্গে নিয়ে এখানে আসতে। আসতে পেরেছ দেখে খুব ভালো লাগছে। এবার আমার উপহার দেওয়ার পালা। কিন্তু আমি সেটা এমনি এমনি দেব না, মাথা ঘামিয়ে তোমায় বের করতে হবে। তুমি 'ট্রেজার হান্ট'-এর কথা নিশ্চয়ই শুনেছ, যাতে একটা 'ক্লু'-র সাহায্যে প্রতিযোগীরা পরবর্তী জায়গায় গিয়ে পরবর্তী 'ক্লু'-র সন্ধান পায়। তারপর সেটার সমাধান করে পৌঁছোয় তার পরের জায়গায় ও 'ক্লু'-তে। এভাবে শেষ গন্তব্যে পৌঁছলে মেলে প্রার্থিত পুরস্কার। আমার সমস্যাগুলিও বলতে পারো তেমন। তবে প্রত্যেকবারই তোমাকে জায়গাটা খুঁজে বেড়াতে হবে না, কখনও সেটা আমিই বলে দেব। কিন্তু একটা ক্লু-র সমাধান করে তবেই পাবে পরের ক্লু-টা। এইভাবে পাঁচটা ক্লু'র সমাধান করতে পারলেই বাজিমাৎ। কী, রাজি?"
"ইয়ে, হ্যাঁ। তবে আপনি যেমন ঘোড়েল –"
"ও আবার কেমন ভাষা!" কুহেলির স্বরে ভর্ৎসনার ছাপ।
"সরি, আসলে আমার বাংলা শব্দজ্ঞান তেমন –" পেঁচো থতমত খেয়ে বলতে যাচ্ছিল। কিন্তু কাকা অট্টহেসে বললেন, "না, ও ঠিকই বলেছে, আমি লোক খুব ঘোড়েল। তারপর?"
"তাই আমার দু-একজন সহকারীর দরকার হতে পারে। চলবে?"
কাকা একটু ভেবে বললেন, "সহকারী মানে ঐ যে সুকান্ত না কে তোমার সঙ্গে রহস্য সমাধানে থাকে? বেশ, তাকেও ডেকে নাও না। তোমরা তো এখানে দিন তিনেক আছো। ও যদি ফ্রি থাকে তবে নিশ্চয়ই আজ বিকেলের মধ্যে পৌঁছে যাবে। তবে দু-একজন বললে তো, তার মানে?"
"হ্যাঁ, সুকান্ত মানে গবুকে ডাকা যেতেই পারে। গবেট হলেও ও মাঝে মাঝে ভুল করেই ঠিকটা বলে ফেলে। তবে আমি বলছিলাম আপনার ভাইঝির কথা। দরকারে ওর থেকে সাহায্য নিতে পারি কি? নাকি আমাকেই যা করার করতে হবে?"
"বুড়ি? হ্যাঁ, ওর সাহায্য তো নিতেই পারো। তবে – মানে কাকা হয়ে বলছি – ও তো কখনও লেখাপড়ায় তেমন ব্রাইট ছিল না। ও কি তোমাকে –"
"বিদ্যেয় না হোক পাটোয়ারি বুদ্ধিতে ঠিক –" পেঁচো বিড়বিড় করে বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু কুহেলির ভ্রুকুটি দেখে কথাটা গিলে ফেলল। কাকা সেদিকে চেয়ে মৃদু হেসে বললেন, "বেশ তো, তুমি চাইলে ও থাকবে তোমার টিমে। তাহলে এবার ফোন করে দ্যাখো, সুকান্ত আসতে পারবে কি না। সেভাবে ব্যবস্থা করতে হবে।"
"কিন্তু মেজকা, উপহারটা কী?" কুহেলি আদুরে গলায় বলল।
"সেটা এখন বলা যাবে না। তবে এটুকু বলতে পারি – অর্থমূল্যে যাই হোক, তোর বরের সেটা পছন্দ হবে।"

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনীয়ার ও মুম্বইয়ের টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চের অবসরপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী অনিরুদ্ধ সেন কলকাতা-মুম্বইয়ের বিভিন্ন সাময়িকপত্র ও ওয়েব ম্যাগাজিনের নিয়মিত লেখক। তাঁর লেখা ও অনুবাদ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়, এবং সংকলিত বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা