সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
   রুমকি আর মিনি

আজ মহাষষ্ঠী। ঢাকের আওয়াজ শুনে মিনির ঘুম ভেঙে গেল। কি মজা। দুর্গাপুজো শুরু হয়ে গেল। কত আনন্দ হবে। মিনির বাড়ির কাছেই পুজো প্যান্ডেল। একটু পরেই মিনির সব বন্ধু টিঙ্কু, রেশমী, সোমা, ঝিমলি, মিতু সবাই চলে আসবে। ওরাও এই পাড়াতেই থাকে। আর এক স্কুলেই পড়ে। ক্লাস সেভেনে। সবাই মিলে পাড়ার পুজো প্যান্ডেলে বসে অনেক গল্প করবে। তারপর অঞ্জলি দেওয়া, প্রসাদ খাওয়া, নতুন জামা পরে কাছেই ঠাকুর দেখতে যাওয়া সেসব তো আছেই। মিনি তাই বেজায় খুশি। তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে নিল। এরপর একটু কিছু খেয়েই দৌড়ল বন্ধুদের বাড়ি। আজ থেকে ক'দিন মিনির পড়ার ছুটি। খুব আনন্দ করবে। বাড়িতে কেউ কিছু বলবে না।
 
প্রথমেই মিনি গেল টিঙ্কুদের বাড়ী। সেখানে ঝিমলি আর মিতুও ছিল। ওদের নিয়ে প্যান্ডেলে চলে এল। সেখানে তখন বাকিরাও চলে এসেছে। ওখানে সবাই একসঙ্গে বসে ঠিক করল যে এই কদিন সকালবেলা ওরা প্যান্ডেলে বসে গল্প করবে আর একদিন বিকেলবেলা কাছের প্যান্ডেলগুলো দেখে আসবে। সেইমত সারাদিন হইহই করেই কাটল। সন্ধেবেলা পাশের পাড়ায় গিয়ে ঠাকুর দেখাও হল। আইসক্রীম খাওয়াও হল।
 
আজ মহাসপ্তমী। মিনি আর তার বন্ধুরা প্যান্ডেলে বসে গল্প করছে। কার এবার পুজোয় ক'টা জামা হল এইসব নিয়ে। টিঙ্কুর সবচেয়ে বেশী জামা হয়েছে—ছয়টা। বাকিদের চার-পাঁচটা করে। এমন সময় হঠাৎ ওরা দেখল যে একটা বাচ্চা মেয়ে উঁকি মারছে। মেয়েটাকে আগে কোনোদিন দেখেনি ওরা। খুব সাধারণ জামা পরে ছিল মেয়েটা। ওদের থেকে বয়সে একটু ছোটই হবে। চুলটা উস্কোখুস্কো। "তোমার নাম কি?" মিনি জিজ্ঞেস করল। "রুমকি" - মেয়েটা আস্তে আস্তে বলল। মিনিরা ওকে চেয়ারে বসাল। তারপর ওর সাথে গল্প করতে লাগল। কথায় কথায় মিনিরা জানতে পারল যে রুমকিরা আর্থিকভাবে খুব একটা স্বচ্ছল নয়। ওর মা সেলাই করে সংসার চালায়। আর ওর বাবা অসুস্থ। এ বছর রুমকির একটাও পুজোর জামা হয়নি। তাই ওর খুব মন খারাপ। শুনে ওদের সবার খুব মন খারাপ হয়ে গেল।

মিনি আর তার বন্ধুদের পাড়ার সবাই খুব ভালোবাসে। কারণ ওরা খুব ভদ্র। আর এত কম বয়স হওয়া সত্ত্বেও খুব পরোপকারী। মিনিরা সবাই মিলে ঠিক করল যে ওদের সবার পুজোর জামা থেকে একটা করে জামা ওরা রুমকিকে দিয়ে দেবে। তাহলে রুমকির মনে আর কোনো দুঃখ থাকবে না। যেই না ভাবা তেমনি কাজ। মিনিরা লাফাতে লাফাতে যে যার বাড়ির দিকে দৌড়ল। তারপর একটা করে জামা নিয়ে প্যান্ডেলে ফিরে এল। ওদের বাবা-মাও খুব খুশি ওদের সিদ্ধান্ত শুনে। তারপর যে যেমন পারল বাড়ি থেকে চিপস্‌ এর প্যাকেট, ক্যাডবেরি নিয়ে এল রুমকির জন্য। এতগুলো নতুন জামা পেয়ে রুমকি তো আনন্দে আত্মহারা। মিনিরা সবাই মিলে রুমকিকে তার বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে এল। রুমকির মা ওদের অনেক আশীর্বাদ করলেন। মিনিরা ঠিক করল এরপর থেকে প্রত্যেক বছর পুজোয় একটা করে ভালো কাজ করবে।

 

ছবিঃঅঙ্কুশ চক্রবর্তী

কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনে স্নাতকোত্তর। বইয়ের মধ্যে হারিয়ে যেতে ভালো লাগে। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় এবং ই-দুনিয়ায় লেখালেখি করেন। মনের কথা বলা এবং ছোটদের বন্ধু হবার জন্য ইচ্ছামতীর সঙ্গে পথচলা। আর চলতে চলতে আবার নিজের শৈশবে ফিরে যাওয়া।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা