সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
অভিযান

বড়দিনের ছুটি, মিতুল, দেবু, তিতির ও সমু দুপুরবেলা জুটেছে প্রিয় গল্পদাদু বিমল দেব এর বাডিতে । দিদু আবার লাঞ্চের নেমন্তন্ন করেছেন, মানে পেটপুজোটাও অসাধারণ জমবে গল্পের সাথে।সামনে দাদু বলতে হলেও আড়ালে যে গল্পদাদু বলে ডাকে এরা সেটা দাদু ভালই জানেন আর উপভোগও করে থাকেন। অল্পবয়সে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গাতে ঘুরে ঘুরে কাজ করেছেন আর তাতেই তাঁর গল্পের ঝুলি অফুরন্ত হয়ে উঠেছে.।নানা স্বাদের স্ন্যাক আসছে দিদুর হেল্পার সুমিত্রাদির হাতে, সেগুলো খুবই মনকারা বটে কিন্ত উৎসাহের সাথে তারা তাকিয়ে আছে দাদুর মুখের দিকে, নড়েচড়ে গুছিয়ে বসছে সোফায় নতুন গল্পের শুরুর আশায়। বিশাল কফিমাগে কালো কফিতে চুমুক দিলেন দাদু।

তিতির একটু বেশী কথা বলে, বলল- “আচ্ছা দাদু তোমার তো সুগার খাওয়া বন্ধ নয়, এই কালো দুধ চিনি ছাড়া কফিতে তুমি কি স্বাদ পাও বল তো?”

দাদু বললেন- বাঃ,ঠিক সময় প্রশ্নটা করেছিস তো, এই অভ্যেস যে ধরিয়েছিল তাকে নিয়ে একটা বড়সড় গল্প হয়ে যায়।

সবাই হইহই করে উঠল, তবে আজ সেটাই শোনা যাক।

স্যামের সাথে আমার প্রথম দেখা হয় ফ্লোরিডাতে, আলাপের শুরুটাও বেশ মজার। ফ্লোরিডার পশ্চিমের বীচগুলো গালফ্ অফ মেক্সিকোর দিকে আর পুবেরগুলো আটলান্টিক,আমি গালফ্ এর দিকে সিয়েস্তা নামে একটা ছোট শহরে বছর দুই ছিলাম একটা কাজ নিয়ে, সাদা গুঁড়ো চিনির মতো বালি আর নীল টলটলে জলের আকর্ষণ যে কি জিনিস কথায় বলে বোঝানো কঠিন। প্রতিদিন দিনের শেষে কাজ থেকে ফিরে আমি যেতাম সাঁতার কাটতে, এরকমই একদিন বেশ একটু দেরি হয়েছে কাজ থেকে ফিরতে, তবু নেমে পরলাম জলে, সূর্য তখন ডুবু ডুবু। সাঁতার কাটতে কাটতে কোনো কারনে অন্যমনস্ক হয়ে পরেছিলাম, হঠাৎ দেখি একটা জেট স্কী প্রায় আমার দিকে ছুটে আসছে, খুব ভয় পেয়ে সরে যাবার চেষ্টা করলাম, কিন্তু মনে হল লোকটা হাতের ইশারায় আমাকে বোট এ ঊঠতে বলছে। কয়েক মিনিটের মধ্যে আমাকে প্রায় ঝুটি ধরে টেনে তুলল বোটে, তারপর প্রচুর বকুনি খেতে হল, আসলে আমি পাড় থেকে আনেকটা দূরে চলে এসেছিলাম আর ঐ দিন সন্ধ্যায় শার্কের ওয়ারনিং ছিল। এভাবেই স্যাম এর সাথে পরিচয় প্রথম আলাপ।

খুব লম্বা, শক্তপোক্ত চেহারা, গায়ের রং ও মুখের গড়ন সাদা আমেরিকানদের থেকে অন্যরকম , পরে জানলাম সে আসলে পলিনেশিয়,তার পুরো নাম ছিল, স্যামুয়েল আকাকা, তবে বর্তমানে সে আমেরিকান।পরপর কদিন বীচে দেখা হওয়ায় বন্ধুত্ব হয়ে গেল,একদিন তাকে আমাদের দেশীয় খাবার খাওয়ালাম, তখনি বুঝলাম অনেক দেশের অনেক ডিশ্ তার খাওয়া আছে। কিন্তু সে কাজ কি করে তা জানতে আমার আরও কিছুদিন সময় লেগেছিল, জিজ্ঞাসা করলে বলত -বেড়িয়ে বেড়াই, সেটাই কাজ।

তোরা তো জানিসই আমার কেমন নেশা বেড়ানোর, আমি তখন হাওয়াই যাবার একটা প্ল্যান করছিলাম, তাই ভাবলাম স্যামের থেকেই টিপ্স নেয়া যাক। তখনি জানলাম স্যাম সেই মাসেই হাওয়াই যাচ্ছে। যদিও হাওয়াই থেকে সে যাবে অন্য জায়গায়, আমি তার সাথে যেতে পারি হাওয়াই পর্যন্ত।

এইখানে দাদু একটু কফি ব্রেক নিলে মিতুল প্রশ্ন করবার সুযোগ পেল,- দাদু তুমি সময়টা বলনি, মানে কত সালের কথা বলছ সেটা।

-ও তাইতো, সেটা ৭০ হবে, ৬৮ থেকে ৭০ দুবছর ছিলাম ফ্লোরিডাতে ,এটা শেষ দিকের ঘটনা।

-তাহলে স্যামের সাথে হাওয়াই গেলে।

- তা গেলাম , তবে গল্পটা সেখানে নয়। যাবার ঠিক আগে আগে স্যামের গাড়ি অ্যাক্সিডেন্ট করল, ডানপায়ে চোট ও মাথায় স্টিচ নিয়ে সে বাড়িতে আটকে পড়ল। আমার মত সেও একা, তাই কদিন তাকে একটু সাহায্য করলাম । যদিও সে এতটাই শক্তপোক্ত যে ওই অবস্থাতেও সে আমার সাহায্যের থোরাই কেয়ার করে, কিন্তু যেটা ঘটল, এর ফলে আমার ওপর তার বেশ একটু বিশ্বাস ও নির্ভরতা জন্মাল । আর সেটাই আমাকে একটা অ্যাডভেঞ্চারের সুযোগ করে দিল।

এখানে স্যাম সম্পর্কে দুটো কথা তোদের বলে নিই, সে ছিল অল্প কথার মানুষ, নিজের সম্পর্কে বা কাজের প্ল্যানের সম্পর্কে কোনো কথা আগে থেকে সে আমাকে জানাত না, ফলে আমার মনে হচ্ছিল আমি "ফলো দ্য লিডার" গেম খেলছি। এতে একটা মজা আছে, তখন তখন ভারি বিরক্ত লাগলেও পরে মনে হয়েছিল এই ধোঁয়াশাটা আমার জন্য ভালই ছিল।

বহরমপুর মুরশিদাবাদে জন্ম ও বেড়ে ওঠা, প্রথম দিকের পড়াশোনা বিঞ্জান নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে, পরে তুলনামূলক সাহিত্যে বিষয় বদল শুধু ভালবাসা থেকে। বর্তমানে আমেরিকার বস্টন শহরে বসবাস। কবিতা আবৃত্তি , লেখা আর বিভিন্ন জায়গা ঘুরে বেড়ানো শখ ।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা