বলল- তুমি কি জানো ঐ রকম পোষাক শুধুমাত্র কেউ মারা গেলে পরা হয়, আজকাল কেউ বিশেষ পরেও না, আগে আগে চল ছিল। যেহেতু শুনে এসেছ এটা অশুভ জায়গা তাই মাথায় ওসব ঘুরছে।
বকা খেয়ে গুম হয়ে বসে আছি, স্যাম আমাকে স্বাভাবিক করতে বলল-এরকম হতেই পারে, নির্জন জায়গায় মন ও চোখের ভুল খুব সাধারন ব্যাপার। সে ঠিক করল যে জায়গায় লোকটাকে দেখা গেছে সেখানেই যাব আমরা। অল্প ব্রেকফাস্ট সেরে আমরা রওনা দিলাম , এদিকটায় গাছপালা একটু বেশি, যেখানে লোকটাকে দেখা গিয়েছিল সেখানে একটা বড় পাথর আছে প্রায় গোলাকৃতি, আমরা ওটাকেই টার্গেট করে এগোলাম, না হলে হয়তো জায়গাটা খুঁজে পাওয়া সম্ভব হতো না। দূরত্ব খুব না হলেও আধঘন্টার বেশি লাগল ঝোপ জঙ্গল পেরিয়ে সেখানে পৌঁছতে, প্রচুর পরিচিত গাছ কলা ও নানা ধরনের কচু, নারকেল তো আছেই, কটা পড়ে থাকা নারকোলের জল ও শাঁস খেলাম পথে।
দেবু বলল -“দাদু, সেদেশে নির্বাসন দিলেও কেউ না খেয়ে মরবে না তাহলে।">
-সেকথা ঠিক, আর প্রানীর উপদ্রবও বেশ কম দেখেছিলাম, একরকম বড় আকারের বাদুর পাওয়া যায় যারা দিন রাত সবসময় ওড়ে, তবে রংবেরঙের পাখি প্রচুর। যাহোক সে জায়গায় পৌঁছে পাথরটার চারপাশে কোনো মানুষ কিছুক্ষণ আগে চলাফেরা করেছে এমন কোনো প্রমান দেখা গেল না। স্যাম বলল - কি বলেছিলাম তোমার চোখের ভুল।
কিন্তু কথাটা শেষ করতে করতেই সে থমকে গেল, ঝোপঝাড় সরিয়ে কি যেন দেখছে দেখে আমিও সেদিকে এগিয়ে গেলাম। দেখি পাথরের পিছনের ঢালে একটা বড়সড় গর্ত ঢাকা পরে আছে জঙ্গলে। মনে হচ্ছে পাথরটা ওই গর্তটা ঢাকতেই ব্যবহার হয়েছিল, এখন ওটা একটু সরে এসেছে। স্যামের সঙ্গের ব্যাকপ্যাকে সব প্রয়োজনীয় জিনিসই যাদুটুপির মতো বেরিয়ে আসে, ঝোপজঙ্গল সাফ করার জিনিসও বেরোলো, আর কিছুক্ষণ পরে গর্তটা পরিষ্কার হল। এবার আমি স্যামকে আর না বলে পারলাম না যে এর মধ্যে যাবার প্ল্যান না করাই ভাল, বলা যায় না কোনরকম হিংস্র প্রাণী তো থাকতে পারে। স্যাম বলল- ইঁদুর বাদুর ছাড়া কোনো বড় জন্তু এর মধ্যে যাতায়াত করলে এভাবে গাছ গজাতো না। আমার ওজর আপত্তি টিঁকবে না বুঝে টর্চ জ্বেলে স্যামের পিছু পিছু সুরঙ্গে ঢুকলাম।
(আগামি পর্ব পরের সপ্তাহে)