সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
এক কাঠুরের গল্প

অনেকদিন আগে জয়পুর শহরে এক কাঠুরে বাস করত। সে খুব পরিশ্রমী ছিল। তার বউ লোকের বাড়ি কাজ করত। তাদের এক ছেলে ছিল। তাদের বাড়িটা খুব ছোট ছিল। বাড়িতে একটাই ঘর ছিল।

একদিন তার বউ নদী থেকে জল আনতে গিয়ে নদীর পারে একটা পায়রা বসে থাকতে দেখল। সে বাড়ি ফিরে গেল। পরের দিন কাঠুরে তাকে বলল সে একটা কারখানায় চাকরি পেয়েছে আর সে দশ বছর পরে ফিরবে। কাঠুরে বউ জিজ্ঞেস করল, সে কী করে জানবে কাঠুরে ভাল আছে কীনা? কাঠুরে তাকে একটা সুন্দর গোলাপ দিয়ে বলল যদি গোলাপটা শুকিয়ে যায়, তাহলে তার বউ যেন বোঝে সে মারা গেছে। এই বলে সে একটা ছোট পুঁটলি নিয়ে চলে গেল।

কাঠুরে বউ রোজ কাজ থেকে ফিরে গোলাপফুলের দিকে দেখত। দশ বছর পরে, একদিন সে হঠাৎ দেখল সেই গোলাপ শুকিয়ে গেছে। সে খুব ভয় পেল। সে তার কুড়ি বছরের ছেলেকে বলল যে সে কাঠুরেকে খুঁজতে যাচ্ছে।সে ছেলেকে একটা সূর্যমুখী ফুল দিয়ে বলল যে এই ফুলটা শুকিয়ে গেলে, বোঝা যাবে সে আর বেঁচে নেই। এই কথা বলে সে চলে গেল।

প্রায় এক বছর পরে কাঠুরের ছেলে দেখল সূর্যমুখী শুকিয়ে গেছে। সে তার বাবা আর মায়ের জন্য খুব চিন্তায় পড়ল। তাই সে তাদের খুঁজতে বেরোল।

ছেলেটি যখন বাড়ি থেকে কিছুদূরে গেল, তার খুব জল তেষ্টা পেল। সে কাছে একটা নদী দেখতে পেল। জল খেতে গিয়ে সে নদীতে দুটো ফুল দেখতে পেল। যখন সে জল খেতে গেল, সে শুনতে পেল কেউ বলছে, " ওহে ছেলে, এই জল খেওনা।" ছেলেটি চোখ তুলে দেখল একজন খুব বুড়ো মানুষকে। ছেলেটি তখন তাঁকে জিজ্ঞেস করল কেন সে জল খেতে পারবে না। সেই বুড়ো মানুষ তাকে জল খেতে বারণ করলেন কারণ জলে ডার্ক ম্যাজিক আছে। তিনি বললেন তিনি তাকে সেই নদীর গল্প বলবেন, কিন্তু গল্প শেষ হলে পাঁচটা প্রশ্ন করবেন। ছেলেটা যদি ঠিক উত্তর দায়, তাহলে সে জল ও খেতে পারবে আর সাথে ওই দুটো ফুল ও নিয়ে যেতে পারবে।

নদীর গল্প

এই নদীর এক খুব সুন্দরী রানী ছিল, তার নাম ইন্দ্রানী। তার অনেক শক্তি ছিল। সে তার জাদুবলে অনেক কিছু করতে পারত আর নদীতে থাকত। সেই যুগে, এইট্‌থ্‌ সেঞ্চুরিতে , এই নদী খুব বিখ্যাত ছিল। কাছের গ্রামগুলো থেকে সবাই হল নিতে আর স্নান করতে আসত। তাই নদীটা খুব খুশি আর গর্বিত ছিল। কিন্তু, একবার বর্ষাকালে খুব জোরে বৃষ্টি পড়ল আর বৃষ্টির জল জমে নদীর কাছে একটা ছোট পুকুর তৈরি হল। বর্ষাকাল শেষ হলে সবাই জলে ভরা নতুন পুকুরটাকে দেখে খুব খুশি হল।

কিছুদিন পরে, এক সাধু এসে সেই পুকুরের পাড়ে বসে কয়েকদিন পুজো করলেন। তখন গ্রামের লোকেরা ভাবল পুকুরটা নিশ্চয় পবিত্র। তার সবাই মিলে পুকুরটাকে ফুল দিয়ে পুজো করতে শুরু করল। তারা সাধুকে একটা ছোট কুঁড়েঘর ও বানিয়ে দিল। এইসব দেখে নদীর খুব হিংসে হল। একদিন যখন সাধু ছিলেন না, তখন নদী বিরাট বড় ঢেউ তুলে এসে পুকুরকে ভাসিয়ে দিল। সেই পুকুর হারিয়ে গেল। সাথে সাধুর ঘর ও ভেঙে গেল।

সাধু ফিরে এসে পুকুরের অবস্থা দেখে অবাক হয়ে গেলেন। তিনি বুঝলেন , আর কেউ না, নদীই পুকুরের এইরকম অবস্থা করেছে। তখন তিনি নদীকে অভিশাপ দিলেন যে , কেউ যদি তাঁর করা প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে নদীর জল খায়, তাহলে তারা ফুল হয়ে যাবে। তখন গ্রামের সব লোক নদীতে আসা বন্ধ করে দিল। নদীর রানী খুব দুঃখে কাঁদতে শুরু করল। সাধু তাকে বললেন, কেউ যদি সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে, তাহলে অভিশাপ শেষ হবে।

সেই বুড়ো মানুষ গল্পটা বলে থামলেন। তিনি বললেন তিনি সেই সাধুর শিষ্য।কাঠুরের ছেলে বলল সে তার সবকটা প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য তৈরি।

বুডো মানুষঃ নদীর রানী কে ছিল?
কাঠুরের ছেলেঃ ইন্দ্রানী নামে এক সুন্দর মহিলা
বুড়ো মানুষঃ সেটা কোন সেঞ্চুরি ছিল?
কাঠুরের ছেলেঃ সেটা অষ্টম শতক ছিল।
বুড়ো মানুষঃ বেশি বৃষ্টির ফলে কী হয়েছিল?
কাঠুরের ছেলেঃ নদীর পাশে একটা ছোট পুকুর তৈরি হয়েছিল।
বুড়ো মানুষঃ পুকুরের পাড়ে কে পুজো করতেন?
কাঠুরের ছেলেঃ একজন সাধু।
বুড়ো মানুষঃ নদীর রানী কীভাবে নদীর জল নিয়ন্ত্রন করতেন?
কাঠুরের ছেলেঃ ম্যাজিক শক্তি দিয়ে।

বুড়ো মানুষ কাঠুরের ছেলেকে বল্লেন, তিনি তার বুদ্ধি দেখে খুব খুশি হয়েছেন, আর এই জন্যেও খুশি হয়েছেন যে সে মন দিয়ে তাঁর বলা গল্প শুনেছে। বুড়ো মানুষটি তাকে বললেন, নদী এবার অভিশাপমুক্ত হয়েছে; এখন সে সেখান থেকে জল খেতে পারে আর ফুল দুটিকেও নিয়ে যেতে পারে। ওই দুটো ফুল হল দু'জন মানুষ যারা অভিশাপের ফলে ফুল হয়ে গেছিল, কারণ তারা গল্পের শেষে ঠিক উত্তর দিতে পারেনি।

কাঠুরের ছেলে তখন জল খেল; তার পরে যেই ফুলদুটোকে নিতে গেল, সেগুলি বদলে গিয়ে তার বাবা আর মা হয়ে গেল। কাঠুরের ছেলে তখন খুব খুশি হয়ে মা-বাবাকে নিয়ে বাড়ি ফিরে এল।

লেখা ও ছবিঃ
সমাদৃতা দত্ত
পঞ্চম শ্রেণী
ডি পি এস নিউটাউন , কলকাতা

( মূল ইংরেজি লেখাটি টাইপ করে দিয়েছেন সমাদৃতার মা। গল্পটিকে অনুবাদ করেছেন মহাশ্বেতা রায়।)

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা