শেষরাতে ঘুম ভেঙে যায় হ্যারির। তখনও সকালের আলো ফোটেনি। পাশ ফিরে লুইসকে খুঁজে না পেয়ে সে বেশ ঘাবড়ে যায়। টর্চটা জ্বালিয়ে এদিক-ওদিক ফেলে, তারপরে জোর গলায় ডাক দেয়। কিন্তু কোন উত্তর পায় না। সাহস করে এবারে খাটের তলা থেকে বেরিয়ে আসে সে। তারপর এঘর-ওঘর খুঁজতে থাকে। হঠাৎই একটা ঘরে ঢুকতেই দেখে দূরে দেওয়ালের কাছে কে একজন দাঁড়িয়ে একেবারে তার দিকেই তাকিয়ে আছে। শিঁরদাড়া দিয়ে একটা ঠাণ্ডা স্রোত বয়ে যায়। নিশ্চয় এই ভূতটাই লুইসকে ধরে নিয়ে গেছে – হ্যারি আর কোন দিকে না তাকিয়ে দরজার দিকে দৌড় দেয়।
হানাবাড়ির গেট দিয়ে বেরোতেই সামনে গাছের তলায় ঘুমন্ত লুইসকে চোখে পড়ে হ্যারির। নিশ্চয় ভুতটা ওকে মেরে এইখানে রেখে গেছে। তাও সাহস করে শুকনো গলায় সে লুইসের নাম ধরে ডাক দেয়। এক ডাকেই ধড়মড় করে উঠে বসে লুইস। লুইসকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে ওর হাত ধরে এক টান মেরে হ্যারি বলে, ‘দৌড়া, ভূত’। লুইসও আর দ্বিরুক্তি না করে ছুটতে শুরু করে।
ক্রমে ভোর হয়ে আসে।...
‘সারারাত কোথায় ছিলি?’ ছুটতে ছুটতেই লুইস এবার প্রশ্ন করে হ্যারিকে। হ্যারির কাছে খাটের তলায় বিছানা করা আর মরার মত ঘুমিয়ে পড়ার কথা শুনে সে নিজের ভুল বুঝতে পারে। তারপরে হ্যারিকে জিজ্ঞাসা করে, সে যে ভূতটা দেখেছে তার চেহারা ঠিক কেমন? হ্যারির মুখে ভূতের বর্ণনা শুনে হাসতে হাসতে দাঁড়িয়ে যায় লুইস। বাড়িটা ঘুরে দেখার সময়ই একটা ঘরে যে দেওয়াল জোড়া আয়না আছে সেটা ও লক্ষ্য করেছিল। ভূত নয়, আয়নায় নিজেকেই দেখেছে হ্যারি। নিজের ভুল বুঝতে পেরে হো হো করে হেসে ফেলে হ্যারিও।
হাসতে হাসতেই এবার তারা ফেরার পথ ধরে। ভূতই যখন নেই তখন হানাবাড়ির বাসিন্দা হতে আর ভয় কী?
[ইংরেজিতে মূল গল্পটি লিখেছে আকাশলীনা । বাংলায় অনুবাদ করেছেন তার মা দময়ন্তী।]