সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo

'বার্ডস' শব্দটি শুনলে আগেই মনে পড়ে 'অ্যাংরি বার্ডস'-দের কথা ! যাঁরা একটু বড় তাঁদের মনে পড়বে এই নামের বিখ্যাত হলিউড থ্রিলার ছবির কথা। কিন্তু না, আজকে আমি যে সব বার্ডস্‌ বা পাখিদের সাথে তোমার পরিচয় করিয়ে দেব, তারা অ্যাংরি বার্ডস্‌ গেম -এর পাখিদের মত অত রাগীও নয়, আর হিচককের ছবির মত ভয়াবহও নয়। আজকে আমরা পরিচয় করে নেব সেইসব পাখিদের সাথে, যাদেরকে আমাদের বাড়ির আশেপাশেই দেখতে পাওয়া যায়, যারা বাংলার খুব পরিচিত পাখি।


(ছবি বড় করে দেখার জন্য প্রতিটা ছবিতে ক্লিক কর)

পাখিদের ছবি দেখার সাথে সাথে, চল জেনে নিই, পাখিদের সম্পর্কে কিছু সাধারণ তথ্য।

পাখিরা হল পালকে ঢাকা ও দুটি ডানা যুক্ত এক মেরুদণ্ডী উষ্ণ রক্তের প্রাণী, যারা ডিম পাড়ে ও ডিমে নিজের শরীরের তাপ দিয়ে সন্তানের জন্ম দেয়। পাখি পৃথিবীর একমাত্র পালক বিশিষ্ট প্রাণী।

পাখিদের মধ্যে চেহারার বৈচিত্র দেখার মত-আঙ্গুলের মাপের হামিং বার্ড থেকে ছোটখাটো ঘোড়ার মাপের উটপাখি ও আছে।কিছু পাখি যেমন হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিতে পাড়ে তেমনি কিছু পাখি আবার উড়তেই পারে না। বাবুই, টুনটুনি প্রভৃতি পাখির অতি সুন্দর বাসা যেমন আছে তেমন মাঠে ঘাটে গর্তে ডিম পাড়ার পাখিও আছে। খাদ্যর ব্যাপারেও পাখিদের বৈচিত্র্য কম নয়, কেউ শুধু মধু খায়, কেউ শুধু ফল, কেউ ফলের সাথে ছোট পোকামাকড় আবার কারোর পছন্দ শিকার করা প্রাণীর কাঁচা মাংস, কেউ বা মরা প্রাণীর পচা গলা মৃতদেহ পছন্দ করে। কাক তো ধাতব বস্তু বাদে সব তার খাদ্য তালিকায় রাখে। মোটামুটি ভাবে গাছের ডালে থাকা, জলার আশেপাশে থাকা আর জলে সাঁতার কাটা এই ভাগে ভাগ করলেও আকার আকৃতি, রঙ, আচরণ ইত্যাদির ভিত্তিতেও বহুভাগে পাখিদের ভাগ করা হয়।

কোন পাখি দেখলে লক্ষ্য কর তার ঠোঁট, শরীরের গঠন, নখের আকার আর আকৃতির, আর তার সাহায্যেই প্রাথমিক পরিচয় পাবে সেই পাখির। ধর শক্ত বাঁকানো আংটার মত ঠোঁট, শক্তপোক্ত চেহারা, হিংস্র দৃষ্টি যুক্ত পাখিটি দেখলে বুঝবে সে অবশ্যই শিকারি পাখি গোষ্ঠীর সদস্য। ছোটখাটো যে পাখিটিকে লম্বা সরু ঠোঁট ফুলের মধ্যে ডুবিয়ে দিতে দেখলে সে নিশ্চয়ই মধুখোর মৌটুসি বা সানবার্ড। অবশ্য কিছু কিছু ভুল হবে তবে ক্রমে আরও নিখুঁত করে চিনতে শিখে যাবে পাখিদের।

বর্তমানে ভারতে প্রায় ১২০০ প্রজাতির পাখি দেখা যায়, যাদের ২০টি বর্গ ও ৭৫টি গোষ্ঠীতে ভাগ করা যায়। পাখির পরিচয় দিতে গেলে প্রথমে বর্গ তারপর গোষ্ঠী তারপর গণ ও শেষে প্রজাতি দেখতে হয়।

তুমি যদি ভাল করে পাখি চিনতে চাও তবে পক্ষীনিরীক্ষণ(বার্ড ওয়াচিং) করতে হবে। তার জন্য প্রাথমিক ভাবে তিনটি জিনিষ দরকার (ক)একটা দূরবীন, (খ)পাখি চেনার একটা বই, (গ)যা দেখলে তা লিখে রাখার খাতা। পাখি চেনার জন্য ঠিকমতো খেয়াল করো তার রঙ, ছোপ, ঠোঁটের আকার ও রঙ, পায়ের গড়ন ও রঙ এবং লেজের গঠন।

আমাদের এই শহুরে পরিবেশেও খেয়াল করলে অনেক পাখি দেখেতে পাওয়া যায়। বাড়িতে চড়াই, শালিখ পাওয়াই যায়। চারপাশে খেয়াল করলে পানকৌড়ি, হাঁড়িচাচা, শামুকখোল, ঘুঘু, চিল, মাছরাঙাও দেখতে পাওয়া যায়। তোমরা কি জান আমদের জাতীয় পাখি যেমন ময়ূর তেমনি প্রত্যেক রাজ্যের আলাদা আলাদা রাজ্য পাখি আছে। আমাদের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য পাখি ছোট্ট মাছরাঙা। আবার অন্যদিকে ভুটানের জাতীয় পাখি কাক।

বর্তমানে আকাশচুম্বী আবাসনের দাপটে আমাদের চারপাশের পক্ষীকুল বিপন্ন হয়ে পরেছে। খাদ্য, বাসস্থান সব দিক থেকেই এরা বিপন্ন। যেমন চড়াই পাখির কোথা যদি ধরা যায়ে, ওরা সাধারণত বাসা করে বাড়ির ঘুলঘুলিতে, কিন্তু 'ফ্ল্যাট দৈত্যের' দাপটে সেই ঘুলঘুলি অবলুপ্তির পথে চলেছে। তুমি বা তোমার বন্ধুরা যদি ফ্ল্যাটে থাক তারা আমাদের এই বিপন্ন ছোট্ট বন্ধুদের বাঁচাতে হলে বারান্দায় কাঠের বাক্স রাখতে পার, তার মধ্যে ওরা বাসা করতে পারে। কিংবা বারান্দায় গামলা করে জল আর পাশে কিছু দানা শস্য রাখ যাতে ওরা তোমার বাড়ি থেকে স্নান খওয়া দুটোই করে যেতে পারে।

শীতকালে পশ্চিমবঙ্গে অনেক পরিয়ায়ী পাখি আসে। তুমি যদি পাখি দেখতে চাও তো বড় কারোকে সঙ্গে করে চলে যাও বিভূতিভূষণ অভয়ারণ্য(বনগাঁ), চিন্তামনিকর পক্ষী অভয়ারণ্য (বারুইপুর), বনবিতান(সল্টলেক), নলবন(সল্টলেক), সাঁতরাগাছি ঝিল(হাওড়া) বা শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন(শিবপুর) ।

প্রিয়াঙ্কা দাস ইংরাজিতে স্নাতক। ছবি তোলার নেশা অনেক দিনের, তাই সুযোগ পেলেই ক্যামেরা কাঁধে করে আশেপাশে বেরিয়ে পড়ে। ছবির তোলার পাশাপাশি প্রিয়াঙ্কার অপর নেশা গান । ভবিষ্যতে আরও ভাল করে গান গাওয়ার ইচ্ছা আছে।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা