সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo

গাছেদের তৈরী খাবার আমরা যেমন খাই, তেমনিই শুঁয়োপোকার মত পোকা-মাকড়েও খেয়ে বেঁচে থাকে। সেই পোকাদের আবার খায় সাধারনত পাখীরা। যে কোন প্রাণীই ত কোন না কোন দিন মারা যাবেই, তাই পাখীরাও মরে যায় কোন দিন। এর পর পাখীদের দেহ পচিয়ে দেয় আনুবীক্ষনিক জীবানুরা, যেমন , ফাঙ্গাস (ছত্রাক),ব্যাকটিরিয়া ইত্যাদি। (ছত্রাক অবশ্য বড় বড়ও হয়, যেমন ব্যাঙের ছাতা। পচনশীল পদার্থের ওপর সাধারনত এরা জন্মায়)। পচনশীল পাখীর দেহ মাটিতে মিশে যায়, আর গাছেদের ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় নাইট্রোজেন ইত্যাদি সরবরাহ করে। সেই মাটিতে আবার গাছ জন্মায়। গাছেদের জন্ম থেকে শুরু করে ব্যাকটিরিয়াদের ক্রিয়াকলাপ মিলিয়েই হল একটা 'খাদ্যশৃংখল' বা 'Food Chain'।

এটা বোধ হয় সবচেয়ে ছোট খাদ্যশৃংখল।

এর চেয়ে বড় হতে পারে এই ছবির মত কোন শৃংখল, যেখানে পরের প্রানী আগেরটাকে খেয়ে নিচ্ছে!

খাদ্য শৃঙ্খল

শকুন বা হায়েনাজাতীয় পশুরা মৃত জীব জন্তু খেয়ে সাফাই কর্মীর কাজ করে। তাই অনেক সময় ফাঙ্গাসদের আগে ওরা মৃত প্রানী সাবাড় করে, পরে নিজেরা ফাঙ্গাসদের দ্বারা সাফ হয়!

এমনটা প্রকৃতিতে আছে কেন ? জীবনপ্রবাহ চালু রাখার জন্য এটা দরকার। আমরা সবাই জানি সুন্দরবনে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার থাকে। ওদের খাবার জন্য আছে প্রচুর হরিণ। আর হরিণরা খায় গাছপালা। শৃংখলটা এরকম-

খাদ্য শৃঙ্খল

আরও বড় বড় শৃংখল হতে পারে এরকম---

খাদ্য শৃঙ্খল

এক্ষেত্রে এই শৃংখলে কেউ না থাকলে কি হতে পারে ? ধর, যদি সাপ যদি না থাকে ? তাহলে কি হবে ? ইঁদুর অত্যন্ত দ্রুতহারে বেড়ে গিয়ে আমাদের খাবার-দাবার সব লুটপাট করে খাবে, অত্যাচার করে আমাদের জীব ধারন অসহনীয় করে তুলবে! তখন আবার একটা হ্যামলিনের বাঁশীওয়ালার মত কারুরে খুঁজতে হবে, তাই না ?

মানুষের লোভের (হাড়-চামড়া সংগ্রহের লোভ) জন্য বাঘের সংখ্যা কমে এসেছে। বাঘ কমতে কমতে শেষ পর্যন্ত না থাকলে কি হবে ভাবতে পার ? হরিণ হু হু করে বাড়তে থাকবে, সুন্দর বনের খাবার তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাবে। আর তাহলে জঙ্গলে খাবার না পেয়ে হরিণরা লোকালয়ে ঢুকে আমাদের খাবার লুট করবে আর সুন্দরবনটা হয়ে যাবে শ্মশান! আর সুন্দরবন থাকায় সমুদ্র থেকে আসা প্রচন্ড ঝড় ঐ বনে বাধা পায়, ঝড়ের হাত থেকে আমরা রক্ষা পাই। তাই ঐ বন না থাকলে কি সাঙ্ঘাতিক কান্ড ঘটবে ভেবে দেখ একবার! আমাদের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশটাই বিপদে পড়ে যাবে, তাই না ?

এখন মাঝে মাঝে সুন্দরবন সংলগ্ন গ্রামে বাঘ ঢুকে পড়ে। বিশেষজ্ঞেরা বলেন যে ওদের খাবারে টান পড়েছে অর্থাৎ হরিণের সংখ্যা কমে গেছে, তাই ওরা লোকালয়ে খাবারের সন্ধানে আসে। সুতরাং হরিণ কমে গেলে বাঘ আমাদের আক্রমন করবে। তেমনি যদি সেখানে গাছপালা না থাকে, তাহলেও একই অবস্থা হবে।

তাই প্রাকৃতিক খাদ্যের ভারসাম্য বজায় রাখতেই খাদ্য শৃংখল একান্ত জরুরী।

বড় হয়ে এ সম্পর্কে আরও জানতে পারবে।

 

 

( ছবিগুলি নেওয়া হয়েছে ফ্রি ইমেজ ওয়েবসাইট থেকে)

সন্তোষ কুমার রায় অবসরপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক। বিষয় পদার্থবিজ্ঞান। শৈশব ও কৈশোর যথাক্রমে বাংলাদেশে এবং কলকাতায় কাটলেও, কর্মজীবন কেটেছে বাংলা বিহার সীমান্তের হিন্দুস্থান কেব্‌ল্‌স্‌ শিল্পনগরীতে। শিল্পনগরী থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন পত্রিকায় ছোটদের এবং বড়দের জন্য বিজ্ঞানভিত্তিক লেখা লিখেছেন বহুবছর। বর্তমানে ইচ্ছামতীর পরশমণি বিভাগে নিয়মিত লেখা ছাড়াও তিনি একটি গ্রুপ ব্লগের সদস্য রূপে লেখালিখি করেন ।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা