সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
মহাবিপদে ভুতুই

তিন.

বাবুইয়ের মুখ থেকে নতুন করে কিছু শোনার দরকার হয়নি ভুতুইয়ের। তাকে খুব চিন্তিত দেখায়।

সুদূর আফ্রিকা থেকে উপহার হিসেবে সে অনেক কিছু নিয়ে এসেছে। তার ভেতরে মাদাগাস্কার দ্বীপের সবচেয়ে সুস্বাদু মধু ও ফুলের রেণুও আছে। বাবুইয়ের ছানাগুলো সেগুলি ঠোঁট-ডানায় মাখিয়ে মহাআনন্দে ছড়িয়ে ছিটিয়ে খাচ্ছে।

অনেকক্ষণ চুপ থাকার পর ভুতুই বিষাদ গলায় বলে, ‘সামনে ভয়াবহ দিন আসছে। মাটি ফেটে চৌচির হবে। কুমার নদের সব জল শুকিয়ে যাবে। আকাশে মেঘ থাকবে না। বৃষ্টি হবে না। চারদিকে আরো আরো গরম হাওয়ার হল্কা বইবে। গাছের পাতা ঝরে যাবে। রস শুকিয়ে যাবে। শস্যদানা মিলবে না। আর সব খাবারও ফুরিয়ে যাবে। তারপর...’

বাবুই ভয় পেয়ে বলে, ‘তার পরেরটার আর শুনতে চাই না ভুতুই দাদু। উপায় কী তাই বলে দাও।’
‘উপায় একটাই।’ ভুতুই বলে, ‘বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণে একটা বড়সড় মেঘ জমেছে। ওখান থেকে এক টুকরো মেঘ ধার করে আনতে হবে। নইলে...’
‘এ তো অনেক সহজ কাজ।’ বাবুই বলে, ‘ওই মেঘ তো এমনি এমনি আমাদের এখানে চলে আসে।’
ভুতুই বলে, ‘না। এবার তা হবে না। সব জায়গায় মাটি ফেটে চৌচির। খরা। এক ফোঁটা বৃষ্টি নেই। আমি এখানে আসার পথে দেখেছি, সবাই ওই মেঘেদের কাছে গিয়ে ধর্না দিয়েছে।’
বাবুই বলে, ‘আমাদেরও কি ধর্না দিতে হবে?’
‘আমি সে কথাই বলছি। দেরি করে পৌঁছুলে আমাদের ভাগে একটুও মেঘ থাকবে না। আজ রাতেই রওয়ানা দিতে হবে। আমি যাব, কিন্তু সঙ্গে একজনকে চাই।’
বাবুই বলে, ‘আমি যেতে পারি, কিন্তু বৌ আর ছানা না খেয়ে থাকবে। ওরা অসুস্থ, দেখার কেউ নেই। তুমি ওই তরুণ বাবুইটাকে নিয়ে যাও।’

তরুণ বাবুইকে ডেকে এ কথা বলতেই সে আমতা আমতা করে।
ভুতুই বলে, ‘যেতে ভয় পাচ্ছ?’
সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। বাবুই কোত্থেকে একটি জোনাকী পোকা ধরে নিয়ে এসেছে তার ঘর আলো করতে। সেই মিটমিটে আলোয় তরুণ বাবুই বলে, ‘তুমি আমাদের দেবতা, তোমাকে বলতে দ্বিধা নেই। আমি খুব সুন্দরী এক বাবুইয়াকে ভালোবাসি। ও-ও আমাকে ভালোবাসে। কিন্তু আমি যে নতুন বাসা বানাচ্ছি সেটি ওর পছন্দ না হলে আমাকে বিয়ে করবে না। তাই...’
ভুতুই তাকে থামিয়ে দিয়ে বলে, ‘শুধু বাসা তৈরি করলেই হবে? তোমাকে সুন্দর স্বচ্ছজলে স্নান করে ভেজা গায়ে নাচতে হবে। নইলে ওই সুন্দরী বাবুইয়া তোমাকে বিয়ে করবে না। যদি মেঘ না আসে, বৃষ্টি হবে না, বৃষ্টি না হলে নদী-সরোবরে জল জমবে না, তখন তোমার সুন্দরী কনে এমনিতেই তোমাকে ছেড়ে চলে যাবে।’
তরুণ বাবুই তাও তেতোমুখে বলল, ‘কিন্তু...’
ভুতুই আবার তাকে থামিয়ে দিল। বলল, ‘ঠিক আছে, কাউকে দরকার নেই। আমি একাই যাব।’

এমন সময় হঠাৎ প্রবল ভূমিকম্প শুরু হলো। ক্ষণে ক্ষণে কাঁপতে থাকলো তাদের ফাঁপা তালগাছটি।

সন্ধ্যার সেই ধোঁয়াটে আঁধারে সব পাখি তখন ডানা মেলেছে আকাশে। তাদের চিৎকার চেঁচামেচিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে সন্ধ্যার স্তব্ধ চরাচর।

চড়ুই পাখির কথা মনে পড়ায় বাবুইয়ের হঠাৎ মন খারাপ হয়ে গেল। তাই দেখে ভুতুই বলল, ‘তোমার চড়ুই বন্ধুকে আমি আগেই জানিয়ে দিয়েছে ভূমিকম্পের কথা।’

তরুণ বাবুই বিষাদ মনে একা একা কী যেন ভাবছিল, হঠাৎ বলল, ‘ভুতুই দাদা, আমি যাব তোমার সাথে।’

অদ্বয় দত্ত পেশায় সাংবাদিক, ঢাকার ইত্তেফাক পত্রিকায় সহকারী সম্পাদক হিসেবে কর্মরত।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা