খেলাঘরখেলাঘর

FacebookMySpaceTwitterDiggDeliciousStumbleuponGoogle BookmarksRedditNewsvineTechnoratiLinkedin

প্রথম পাতা

 

শীত এবারে বেশ ভালই পড়েছে। উত্তর দিক থেকে হু হু করে ছুটে আসছে ঠাণ্ডা হাওয়া, দিনের বেলা সূর্যের আলোটা কি আরাম আরাম লাগছে...রাতে মনে হচ্ছে কম্বলের তলা থেকে বেরোবোই না... কি ভাবছ, চাঁদের বুড়ির কি আবার শীতও লাগে নাকি? লাগে বাপু লাগে! চাঁদের বুড়িরও শীত লাগে, ইচ্ছামতীরও লাগে। তাই তো  পৌষের রোদে পিঠ দিয়ে পা ছড়িয়ে বসে কমলালেবু খেতে খেতে আমি আর ইচ্ছামতী একটু বেশি আলসেমি করে ফেললাম। আর সেজে গুজে আসতে দেরীও করলাম একটু।
আসার পথে আবার শীতবুড়োর সাথে দেখা। শনের নুড়ির মত চুল দাড়ি নেড়ে, ঠকঠক করে লাঠি ঠুকে ঠুকে আসছে। তাকে বললাম- তুমি বড় গোলমেলে লোক! খামোখা শীতে কাবু করছ আমাদের। এই কথা শুনে সেই বুড়ো ফোকলা মুখে হেসে বলল- খালি ঠাণ্ডাটাই দেখলে, আর ওদিকে যে বাগান ভরে রঙিন ফুল এনে দিলাম, নানারকমের সব্জী আর ফল এনে দিলাম, সে তো কই বললে না? ইশকুলে ছুটি পাচ্ছ, সে ছুটিতে চড়ুইভাতি করতে যাচ্ছ, এদিক সেদিক বেড়াতে যাচ্ছ, ঘামে হাঁসফাঁস করছ না - কই সে তো ভাবছ না?
এই কথা শুনে আমি আর ইচ্ছামতী ভেবে দেখলাম, বুড়ো তো ঠিক কথাই বলেছে; এদিকটা তো আগে ভেবে দেখা হয়নি। তাই আমি আর ইচ্ছামতী দুজনে ঘাড় নেড়ে নেড়ে বললাম- ঠিক, ঠিক, আমরা একথা তো ভুলেই গেছিলাম।

প্রথম পাতা

ওদিকে শীতবুড়ো তো আমাদের কথায় গোঁসা করে , নিজের ঝুলি থেকে আরো খানিক উত্তুরে হাওয়া বার করে আকাশে বাতাসে ছড়িয়ে দিয়ে বলল- বেশ বেশ, আমি চলে যাব শীগ্‌গির, আর গিয়েই পাঠাব গ্রীষ্মকে। দেখ তখন  বেশি মজা হয় কিনা - এই বলে ফোকলা গাল ফুলিয়ে উল্টোবাগে হাঁটা দিল। ইচ্ছামতী তখন ছুটে গিয়ে তার হাত টেনে ধরল, আর আমি তাকে বললাম - আহাঃ, এত রাগ কর কেন, তুমি  এত তাড়াতাড়ি চলে যেও না, ইচ্ছামতীর  নতুন শীত সংখ্যা আসছে, বন্ধুরা সেটা পড়ে শেষ করা অবধি নাহয় থাক। তোমার গায়ে দেওয়ার জন্য নকশী কাঁথা দেব, গরম গরম আস্কে পিঠে বানিয়ে দেব, বসে বরং খাও, আর আমাদের একটু শীতের আমেজ নিতে দাও।
বুড়ো এত সব ভাল ভাল কথা শুনে মুচকি হেসে বলল- আর নলেন গুড়ের পায়েস খাওয়াবে না?
আমি বললাম - তাও খাওয়াবো।

তা এই যে সবে পৌষ  সংক্রান্তি গেল, তুমিও কি খেলে? নরম গরম পিঠেপুলি? আর কি কি করছ এই শীতে? বেড়াতে গেলে কোথাও? ফাঁক পেলে রোদ্দুরে খুব খানিকটা খেলে নিলে? বড়দিনের উতসব, আর নতুন ইংরেজি বছরের আনন্দ তো সবে গেল। এখনও সামনে আছে নেতাজীর জন্মদিন, প্রজাতন্ত্র দিবসের আড়ম্বর আর হ্যাঁ, অবশ্যই সরস্বতী পুজো। এই সব বাদ দিয়ে কি আর শীত কাল হয় বল?

আর শীতের রোদ মাখা আমেজ নিয়েই এসে গেল ইচ্ছামতীর নতুন শীত সংখ্যা ২০১১। লেপের ওম, কমলালেবু আর নানারঙা চন্দ্রমল্লিকার সাথে এই শীতের শেষ কটা দিনে তোমার সাথে থাকুক ইচ্ছামতী।

 

ভাল থেকো।

চাঁদের বুড়ি
৩রা মাঘ, ১৪১৭
১৮ই জানুয়ারী, ২০১১
মঙ্গলবার