সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
কেশবচন্দ্র সেন
কেশব চন্দ্র সেন

'অবোধ-বন্ধু' পত্রিকা প্রকাশের প্রায় একদশক পর একটি ভীষণ উৎকৃষ্ট মানের ছোটদের পত্রিকা প্রকাশিত হয়, যার নাম 'বালকবন্ধু'। ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ (নববিধান) এর উদ্যোগে ১৮৭৮ সালে প্রকাশিত পত্রিকা 'বালকবন্ধু'কে বিশেষ ভাবে মনে রাখার দু'টো প্রধান কারণ – এটি ছিল প্রথম জনপ্রিয় পাক্ষিক পত্রিকা, এবং এটি ছিল সচিত্র (মানে লেখার মাঝে মাঝে অনেক সুন্দর সুন্দর ছবিও থাকত এই পত্রিকায়, যা ছোটদের খুব আনন্দ দিত)। পত্রিকার সম্পাদনা করতেন বিশিষ্ট ব্রাহ্ম নেতা এবং সমাজসংস্কারক শ্রী কেশবচন্দ্র সেন। এই পত্রিকার যারা লিখতেন, তাঁরা খুব সচেতন ছিলেন লেখার ভাষা এবং তার সাবলীলতার প্রতি। একদম এখনকার সহজ বাংলা লেখার মতই লেখা হ'ত বালকবন্ধু পত্রিকায়। এর সাথে ছিল একটি বাড়তি পাওনা – তা হ'ল ছোটদের নিজেদের লেখা কবিতা, গল্প, রচনা ইত্যাদি। যে লিখত তার নামের প্রথম অক্ষর, তার সঙ্গে থাকত তার স্কুলের নাম। পত্রিকার একটি বিভাগ ছিল দেশ-বিদেশের নানারকম খবর প্রকাশ করার জন্য। তবে শুধু ছোটদের মনে আগ্রহ জাগানোর মত খবর নয়, তার সঙ্গে থাকত একটি নীতিকথার মত ছোট অংশ, যা সম্ভবত লিখতেন সম্পাদক নিজে। ধারাবাহিক ভাবে গল্প প্রকাশ করা হত, এবং এর সঙ্গে থাকত বিজ্ঞান, নীতি, ছোটগল্প, কবিতা, হেঁয়ালী।... এমন কি গণিত বা ব্যাকরণের মত শিক্ষা বিভাগও। তবে সব থেকে বড় পাওনা ছিল বোধহয় কাঠ-খোদাই ব্লকে (যাকে ব্লক প্রিন্টিং বলা হ'ত) ছাপা রঙিন ছবিগুলো। সেই সময়কার পত্রিকায় লেখার পর লেখা থাকত শুধু, সেই অক্ষরের ভিড়ে এমন রঙচঙে ছবি পেয়ে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের মনে বড়ই আনন্দ হ'ত। অথচ এত রকমের সুন্দর প্রয়াস এবং দক্ষ পরিচালনা সত্ত্বেও এমন উৎকৃষ্ট মানের ছোটদের মাসিক পত্রিকা বেশিদিন চলেনি। প্রথম প্রকাশের তিন বছর, ১৮৮১ থেকেই এটি মাসিক পত্রিকায় রূপান্তরিত হয়। এরপর পত্রিকাটি বেশ কিছুকাল বন্ধ থাকার পর আবার ১৮৮৬ সালে পাক্ষিক রূপেই প্রকাশিত হ'তে থাকে। এরপর আবার কিছুকাল প্রকাশের পর এটি হারিয়ে যায়, 'নূতন প্রকরণ' (মানে নতুন করে সাজিয়ে) হয়ে আবার ফিরে আসে ১৮৯১ সালে। এই ওঠাপড়া এবং অনিয়মিত প্রকাশের মাঝেই 'বালকবন্ধু'-র জনপ্রিয়তা ছিল শিশু-কিশোরদের সাময়িক পত্রিকা হিসেবে। এর পরিবেশন শৈলী, প্রকাশিত লেখার মান, এবং নতুনত্ব সব কিছুর প্রভাবে কেবল শিশু-কিশোর পত্রিকা নয়, শিশু-কিশোর সাহিত্যেও একটা নতুন ধারার সূচনা হয়... ঠিক সেই সময়টা এসে উপস্থিত হয় যখন বিশিষ্ট কবি এবং লেখকরা বাংলা ভাষায় বিভিন্ন পত্রিকার মাধ্যমে ছোট পাঠক-পাঠিকাদের কথা ভেবে নিজের সেরা কাজটি করতে শুরু করেন, বা অনুভব করতে শুরু করেন যে বাংলা সাহিত্য উৎকৃষ্ট শিশু-কিশোর সাহিত্যেরও বিশেষ প্রয়োজন আছে।

দুই শতকের রূপকথাঃ পর্ব ১

১৮৭৮ সালে পাক্ষিক 'বালকবন্ধু'র আবির্ভাবের পর, ছোটদের পত্রিকার মান একটা উৎকর্ষ লাভ করে এবং অন্যদেরও উদ্বুদ্ধ করে ভাল মানের ছোটদের পত্রিকার কাজ করতে। এর ফলে কিছুদিনের মধ্যেই একের পর এক আরও ছোটদের পত্রিকা প্রকাশিত হতে থাকে -

  • ১৮৮১ – 'বালক হিতৈষী' পত্রিকা, সম্পাদক জানকীপ্রসাদ দে।
  • ১৮৮১ নভেম্বর – 'আর্যকাহিনী', ছোটদের প্রথম সাপ্তাহিক পত্রিকা, সম্পাদক সিদ্ধেশ্বর মুখোপাধ্যায়।
  • ১৮৮৩ ১লা জানুয়ারী – 'সখা' মাসিক পত্রিকা, সম্পাদক প্রমদাচরণ সেন।
  • ১৮৮৫ সালে 'বালক' মাসিক পত্রিকা, সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রী জ্ঞানদানন্দিনী দেবীর সম্পাদনায়।

এরকম আরও কত যে পত্রিকা একে একে প্রকাশ হ'তে থাকে তার ঠিক নেই, এই পত্রিকাগুলোর সবগুলোই কলকাতা এবং তার আশেপাশের অঞ্চল থেকে হলেও, কলকাতার বাইরেও সমান তালে উল্লেখযোগ্য ছোটদের জন্য পত্রিকা প্রকাশ হ'তে থাকে, যেমন –

  • ১৮৮৩ - ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয় 'বালিকা', সম্পাদক অক্ষয়কুমার গুপ্ত।
  • ১৮৮৮ – মাসিক পত্রিকা 'শিক্ষা', সম্পাদক প্রিয়নাথ বসু। বনগ্রাম থেকে প্রকাশিত।
  • ১৮৯৮ - শিক্ষা-বিষয়ক মাসিক পত্রিকা 'অঞ্জলি' । চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত এই পত্রিকার সম্পাদক রাজেশ্বর গুপ্ত। কিছু কবিতা ও গল্প ছাড়া সবই পড়াশুনোর কথা থাকত এই পত্রিকায়।
পুরোপুরি কলকাতার মানুষ হলেও, জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়ের নিবাস এখন ব্যাঙ্গালোর বা ব্যাঙ্গালুরু। কলকাতারই কলেজ থেকে বি টেক পাশ করে এখন একটি বহুজাতিক সংস্থায় তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের কর্মী। বাংলা সাহিত্যের প্রতি ভালবাসা থেকেই মাঝে মধ্যে একটু লেখা আর সময় সুযোগ হ'লে ব্যাগ গুছিয়ে কাছে-দূরে কোথাও বেরিয়ে পড়া, এই নিয়েই জয়দীপ। সেই সব বেড়াতে যাওয়ার নানা রকম অভিজ্ঞতা ছোটদের কাছে বলার ইচ্ছে বহুদিন। সেই ইচ্ছাপূরণ করতেই ইচ্ছামতীর ছোট্ট বন্ধুদের জন্য কলম ধরা।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা