সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo

।।প্রথম দৃশ্য।।

(নাইন 'এ'-র ক্লাসরুম। ক্লাস টিচার অহনা ম্যাম, মিউজিক টিচার রায়ান স্যার, নাইন এ-র ত্রিধা, বি-র স্যমন্তক আর সি-র মঞ্জিমা কয়েকটা চেয়ারকে গোলাকারে সাজিয়ে বসে আলোচনায় মগ্ন। রায়ান স্যারের হাতে একটা খাতা আর পেন, মাঝেমাঝে কিছু নোট করে রাখছেন। ম্যামের টেবিলের ওপর রাখা আছে একটা খবরের কাগজ।)

অহনা : পুজোর ছুটি পড়ার দিনের প্রোগ্রামের অন্যান্য আইটেম তো ফাইনাল হয়ে গেছে, বাকি শুধু নাটকটা। কী করা যায় ওটা নিয়ে?

মঞ্জিমা : পুজো সামনে, মহিষাসুরমর্দিনীই করা হবে, নাকি ম্যাম?

রায়ান : লাস্ট ইয়ারের আগের ইয়ারেও তো সেম থিমে পারফর্ম করা হয়েছিল! অসুর হিসেবে দেখানো হয়েছিল পলিউশনকে। বারবার একই থিম, একঘেয়ে হয়ে যাচ্ছে না?

স্যমন্তক (ডান হাত ওপরে তুলে) : স্যার, আমার একটা প্রোপোজাল আছে। বলবো?

রায়ান : বলো বলো।

(স্যমন্তক উঠে গিয়ে ম্যামের টেবিল থেকে খবরের কাগজটা নিয়ে আসে। ভেতরের একটা পাতা খুলে একটা খবর সবাইকে দেখায়।)

অহনা : ওহ্ নো! নিউজ অফ চাইল্ড অ্যাবইউজ অ্যাণ্ড মলেস্টেশন, এগেইন! দিস ইজ হ্যাপেনিং রিপিটেডলি অ্যাণ্ড উই পিপল্ কাণ্ট ডু এনিথিং!

স্যমন্তক : ম্যাম, আমাদের হাতে তো আইন নেই, কিন্তু সবাইকে সচেতন করার ক্ষমতা কিছুটা হলেও তো আছে, তাই না?

অহনা : কী করতে পারি আমরা?

স্যমন্তক : এই যে ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চা ছেলেমেয়েগুলোর ওপর কতগুলো মানুষের চেহারাওয়ালা শয়তান যৌন নির্যাতন করে চলেছে দিনের পর দিন, হাজার শাস্তি, হাজার আইন, কোনওকিছুতেই এই অন্যায়ের কোনও প্রতিকার হচ্ছে না, এই অপরাধীরাই তো অশুভ শক্তি, তাই না ম্যাম?

ত্রিধা : ঠিক বলেছিস সমু, রাস্তাঘাটে, ভিড় বাসে, কতরকমভাবে যে এই শয়তানগুলো সুযোগ নেয়, নোংরা দৃষ্টি, ভিড়ের সুযোগে গায়ে হাত দেওয়া, ফাঁকা রাস্তায় একটু রাত করে ফিরতে হলেই ফলো করার চেষ্টা, অশ্লীল অ্যাবইউজিভ কমেন্টস, উফ্! (দুহাতে মুখ ঢাকে ত্রিধা।)

রায়ান : প্লিজ! ডোন্ট বি আপসেট বেটা। যদি তুমি ভয়ে অস্বস্তিতে কুঁকড়ে যাও, তবে ওদের নোংরা হাত তোমায় কবজা করে ফেলবে। আমাদের নানাভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে, প্রচণ্ড রেগে গিয়ে চিৎকার করতে হবে, জানবে এসব অপরাধীরা আসলে খুব ভীতু হয়, ওদের ভয়টাকে আরও বাড়িয়ে দিতে হবে, সেটা করবে আমাদের রাগ। মনে রাখবে, তোমরাই দুর্গা।

স্যমন্তক : ইয়েস স্যার, আমি এটাই বলতে চাইছি। এবারের নাটকের থিম যদি এটা হয়? পিডোফাইল ক্রিমিনালরা, ইভটিজাররা আর রেপিস্টরা অশুভ শক্তি, আর তাদের দমন করছি আমরা, আধুনিক মানুষেরা, যাদের মধ্যে ঘুমিয়ে আছে একেকজন দুর্গা, একেকজন সুপারহিরো!

ত্রিধা : এই দানবদের দমন করার, বা এদের হাত থেকে নিজেদের বাঁচানোর কিছু উপায় নিয়ে বলা যেতে পারে নাটকে? আসলে, আমরা তো কিছুটা বড় হয়েছি, কে খারাপ নজরে তাকাচ্ছে, কার ইনটেনশন খারাপ, সেটা সিক্সথ সেন্স অনেক সময় বুঝতে পারে, কিন্তু ছোট্ট বাচ্চারা? ওরা তো কিচ্ছু জানে না এসব, ওরা কীভাবে নিজেদের বাঁচাবে? সেসব নিয়ে যদি নাটকে কিছু বলা যায়?

অহনা : ভেরি গুড আইডিয়া চিল্ড্রেন! গুড টাচ ব্যাড টাচ বুঝতে পারা নিয়ে কিছু লেসনস রাখা যায় নাটকে, এসব বিকৃত মানসিকতার লোকজনের কাছ থেকে কীভাবে নিজেদের সরিয়ে রাখবে, গার্জেনদের জানানোর, প্রতিবাদ করার সাহস কীভাবে আনবে, নাটকের মধ্যে দিয়ে সেসব বোঝাতে চেষ্টা করতেই পারি আমরা।

মঞ্জিমা : ম্যাম, তাহলে স্ক্রিপ্ট রেডি করব? সময় তো নেই খুব বেশি, বাচ্চাদের নিয়ে রিহার্সাল দিতে হবে তো!

অহনা : ইয়েস ইয়েস, রেডি করো।

রায়ান (খাতায় কিছু নোট করে নিয়ে) : ওক্কে, সব ফাইনাল হলো তো? চলো, মিটিং শেষ। এবার ছুটি! কাল থেকে আদাজল খেয়ে লেগে পড়ো সব।
(হাসতে হাসতে সবাই চেয়ার ছেড়ে উঠে ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে যায়।)

।।দ্বিতীয় দৃশ্য।।

(স্কুলের অ্যাসেম্বলি হল। স্টেজ সাজানো হয়েছে। অন্যান্য অনুষ্ঠান শেষ, নাটক শুরু হচ্ছে।)
নেপথ্যে নাটকের নাম ঘোষণা হয় : A Lesson on Good Touch and Bad Touch
(স্টেজে দেখা যায় স্কুলের জুনিয়র সেকশনের সাত আটজন ছেলেমেয়ে খেলাধুলো করছে, তাদের সঙ্গে রয়েছে ক্লাস নাইনের তিনজন, ত্রিধা, সামন্ত্যক আর মঞ্জিমা। স্টেজের মাঝখানে মেঝেতে রাখা আছে একটা প্যাকেট।)

মঞ্জিমা (স্টেজের মাঝখানে এসে) : বাচ্চারা, সবাই এখানে এসে পাশাপাশি লাইনে দাঁড়াও তো দেখি!
(ত্রিধা আর স্যমন্তক সব বাচ্চাদের লাইনে দাঁড় করিয়ে নিজেরাও ওদের সঙ্গে দাঁড়ায়।)

ত্রিধা : আজ আমরা নতুন একটা লেসন শিখব, গুড টাচ আর ব্যাড টাচের ডিফারেন্স।

বাচ্চা ১ : সেটা কী দিদি?

স্যমন্তক : মা দুর্গার পায়ের নিচে যে মহিষাসুর থাকে, তাকে চেনো তো তোমরা? সেই অসুর দুষ্টুমি করেছিল, তাই তাকে মা দুর্গা ত্রিশূল দিয়ে মেরেছিলেন। কিন্তু তার চেয়ে অনেক বেশি খারাপ মানুষ আমাদের চারপাশে ঘুরে বেড়ায়। সেই লোকগুলো আমাদের ছোট্ট ছোট্ট বন্ধুগুলোকে ভুলিয়ে তাদের সঙ্গে ভাব করে তাদের বডির প্রাইভেট পার্টসে জোর করে হাত দেয়, যেটা খুব বড় অন্যায়। ছোট্ট বন্ধুরা তাতে শরীরে কষ্ট পায়, ওদের ব্যথা লাগে।

মঞ্জিমা : তাই আমরা এখন শিখবো কীভাবে এই খারাপ লোকগুলোকে শাস্তি দিতে হয়, কীভাবে এদের হাত থেকে নিজেদের সেভ করতে হয়, বন্ধুদের বাঁচাতে হয়। কেউ যখন আমাদের গায়ে হাত দেয়, কীভাবে বুঝবো সেটা ভালো ছোঁয়া না খারাপ ছোঁয়া?

বাচ্চা ২ : হোয়াট আর প্রাইভেট পার্টস?

ত্রিধা : ভেরি গুড কোশ্চেন। এসো তোমাদের একটা জিনিস দেখাই।

(প্যাকেট থেকে ত্রিধা একটা স্যুইমস্যুট বের করে সবাইকে দেখায়।)
এটা কী বলো তো?

বাচ্চা ৩ : এটা স্যুইমস্যুট!

স্যমন্তক (হাততালি দিয়ে) : বাহ্, তুই কত্ত কিছু জানিস রে!

ত্রিধা : এই স্যুইমস্যুটটা যদি আমরা পরি, তাহলে আমাদের বডির কোন্ কোন্ পার্ট ঢাকা পড়ে যায় বল তো? এই দ্যাখ, এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে...
(প্রজেক্টর চালিয়ে স্টেজের ব্যাকগ্রাউন্ডে সাদা স্ক্রিনে একটা ছবি ফেলা হয়। ছবিতে ফুটে ওঠে স্যুইমস্যুট পরা একটি বাচ্চা মেয়ের ছবি। ছবিতে পয়েন্ট করে শরীরের কিছু অংশের নাম লেখা। সেদিকে দেখিয়ে ত্রিধা বলতে থাকে...)

স্যুইমস্যুট

ত্রিধা : দ্যাখ, স্যুইমস্যুটে ঢাকা থাকে আমাদের বুক, পেট, আমাদের হিসুর জায়গা, পাছু, আর পিঠ। এর মধ্যে পিঠ অতটা নয়, কিন্তু বাকি সব পার্টস হচ্ছে এক্কেবারে প্রাইভেট বডি পার্টস। মানে এই জায়গাগুলোয় তুই নিজে, আর তোর মা ছাড়া আর কেউ কক্ষনও হাত দেবে না। তুই আর মা-ও হাত দিবি কখন? চানের সময় যখন সাবান মাখবি, হিসু আর পটি করার পর যখন ধুবি, শুধু তখন।

মঞ্জিমা : যেহেতু অন্য কারও এই পার্টগুলোয় হাত দেওয়া বারণ, তাই এদের আমরা বলি প্রাইভেট পার্টস। কোনও আঙ্কেল বা আণ্টি যদি তোমাদের আদর করবে বলে জড়িয়ে ধরে, তারপর এইসব পার্টসে হাত দেয়, ধরো তোমার তখন ব্যথা হচ্ছে না, তাও কিন্তু সে অন্যায় করছে। কারণ ওই বডি পার্টগুলো শুধু তোমার তো, অন্য লোক সেখানে হাত দিচ্ছে মানেই অন্যায় করছে। কেউ যদি তোমার বুকে, হিসুর জায়গায়, পাছুতে হাত দেয়, সেটা তাহলে ব্যাড টাচ।

স্যমন্তক : গুড টাচ আর ব্যাড টাচের এগজ্যাম্পল দিই কতগুলো? ধরো, তুমি স্কুল থেকে ফিরলে, দাদু বা ঠাকুমা তোমায় জড়িয়ে ধরলেন, তোমার কাকু তোমায় কোলে তুলে একপাক ঘুরে নিলেন হুইই করে, তোমার খুব আনন্দ হলো। এগুলো হচ্ছে গুড টাচ। এইসব ভালো ছোঁয়া, আদরের ছোঁয়া পেলে আমরা খুশি হই।
কিন্তু, ধরো, বাসে তুমি দাঁড়িয়ে আছো মায়ের হাত ধরে, কোনও আঙ্কেল বা আণ্টি তোমায় ডেকে কোলে বসালো, তারপর তোমার পিঠে, থাই তে হাত বোলাতে লাগলো, তোমায় কোলে চেপে ধরে সে তোমার বুকে, হিসুর জায়গায় হাত দেওয়ার চেষ্টা করলো, এগুলো সব ব্যাড টাচ। এরকমভাবে কেউ তোমায় ছুঁলেই তুমি খুব জোরে চিৎকার করবে। কত জোরে বলো তো?

বাচ্চারা সবাই : অনেএএক জোরে, আআআ করে।

ত্রিধা : হ্যাঁ। এত জোরে চেঁচিয়ে উঠবে, যাতে আশপাশের সব লোক শুনতে পায়। মা, বাবা সব্বাই জানতে পারে যাতে। তোমরা রেগে গিয়ে চিৎকার করলেই খারাপ লোকগুলো ভয় পেয়ে যাবে। আর যদি দ্যাখো চিৎকার করলেও কেউ আসছে না, তখন নিজের দাঁত দিয়ে নখ দিয়ে খারাপ আঙ্কলটাকে বা আণ্টিটাকে আঁচড়ে কামড়ে দেবে, যাতে সে খুব ব্যথা পায়।

বাচ্চা ৪ : মা যে বলে কাউকে কামড়ে দেওয়া খারাপ? ব্যাড হ্যাবিট?

স্যমন্তক : হ্যাঁ, নিজের ইচ্ছে হলেই যাকে তাকে কামড়ানো ব্যাড হ্যাবিট, কিন্তু খারাপ লোক যদি তোমার প্রাইভেট পার্টে হাত দেয়, তোমায় খারাপভাবে টাচ করে, তবে তাকে কামড়ে দেওয়া ব্যাড হ্যাবিট নয়। তুমি এটা নিজেকে বাঁচানোর জন্য করছ। যেমন করে মা দুর্গা অসুরকে শাস্তি দেন, তেমন করেই তুমি ওই লোকটাকে শাস্তি দিচ্ছো।

ত্রিধা : আচ্ছা, বল তো, কামড়ে দেওয়ার পর কী করবি? দেখি তোরা কেমন চটপটে?

বাচ্চা ৫ : দৌড়ে মায়ের কাছে, ম্যামের কাছে পালিয়ে আসবো। এসেই কমপ্লেইন করব ওই পচা লোকটার নামে, ওই দুষ্টু আণ্টিটার নামে। ওকে পুলিশ আঙ্কল এসে ধরে নিয়ে যাবে।

মঞ্জিমা : এক্সেলেন্ট! ভেরি গুড! এই তো সবাই কত্ত সাহসী ছেলেমেয়েরা! আচ্ছা, এবার একটা কথা শোনো। ধরো একজন তোমার কাছে এসে খুব আদর করে বলল, তোমায় সে কিসি দেবে, তোমায় কোলে বসিয়ে জড়িয়ে ধরে অনেক হামি দেবে, তোমায় অনেক চকলেট দেবে। তুমি কি তার কাছে চকলেট নেবে? তাকে কিসি করতে দেবে?

বাচ্চা ৬ : মা বলেছে অচেনা কারও কাছে চকলেট নিতে নেই, অচেনা কাউকে কিসি করতে নেই।

মঞ্জিমা : যদি সে তোমার চেনা কেউ হয়? কিন্তু সে আদর করলে তোমার খারাপ লাগে, কষ্ট হয়, যদি তুমি বুঝতে পারো সে ব্যাড টাচ করছে? সে যদি তোমার বুকে, হিসুতে, পাছুতে হাত দেয়? তাহলেও কি চকলেট নেবে?

বাচ্চা ৭ : না না, তাহলে একদম ছুট্টে পালিয়ে যাবো তার কাছ থেকে। পচা লোক, বাজে লোক। ওদের দেওয়া চকলেট নিতে নেই।

মঞ্জিমা : আরেকটা জিনিস বলি তোমাদের। তোমরা ফোনে ভিডিও দেখতে ভালবাসো?

বাচ্চারা একসঙ্গে : হ্যাঁঅ্যাঅ্যা...

মঞ্জিমা : কী কী দেখো তোমরা ফোনে?

বাচ্চা ৮ : ইউটিউবে কার্টুন, রাইমস, অ্যালফাবেট...

বাচ্চা ৩ : কালারস...সিনেমা...

মঞ্জিমা : এবার ধরো, কোনও আণ্টি বা আঙ্কল তোমায় ডেকে অন্য কোনও ভিডিও দেখালো, যেখানে কারও বডির প্রাইভেট পার্টসে অন্য কোনও লোক হাত দিচ্ছে। সেই ভিডিও কি তুমি দেখবে?

বাচ্চা ১ : ওটা কি ব্যাড টাচের ভিডিও?

মঞ্জিমা : ঠিক, একদম ঠিক। ওটা ব্যাড টাচের ভিডিও। কেউ ওরকম কিছু দেখাতে এলে তুমি দেখবে না। সোওজা গিয়ে মাকে বলে দেবে, মনে থাকবে?

বাচ্চারা একসঙ্গে : হ্যাঁঅ্যাঅ্যা...

ত্রিধা : ভেরি গুড। আচ্ছা, এবার বল তো, ধর, কেউ ব্যাড টাচ করলো। জোর করে তোর বুকে, হিসুর জায়গায়, পাছুতে হাত দিলো। লোকটার গায়ে খুব জোর, তুই চেঁচিয়ে, আঁচড়ে কামড়েও তাকে শাস্তি দিতে পারলি না। লোকটা তোকে ভয় দেখালো। বলল, যদি তুই কাউকে বলিস, তাহলে তোকে সবাই বাজে ছেলে বলবে, বাজে মেয়ে বলবে। তোর সঙ্গে কেউ মিশবে না, মা তোকে ভালবাসবে না। তাহলে কি তুই ভয় পেয়ে যাবি? লোকটার ব্যাড টাচের কথা কি কাউকে বলবি না?

বাচ্চা ২ : মাকে বললে কি মা সত্যি সত্যি আর ভালোবাসবে না দিদি?

স্যমন্তক : না না বাবু, একদমই তা নয়। মা বাবা সবাই তোমায় সবসময় খুব ভালোবাসবে। কখনও কোনও খারাপ লোক জোর করে ব্যাড টাচ করলে মাকে গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে বলবে তোমরা। মা, বাবা, দাদু, দিদা, কাকু, পিসি, মামা, মাসি, স্কুলে ম্যাম, স্যার এরা সবাই তোমাদের খুব ভালোবাসেন। কেউ জোর করে তোমায় আদর করলে, তোমার প্রাইভেট পার্টে হাত দিলে অবশ্যই বড়দের জানাবে। কেউ বকবে না, কেউ তোমায় বাজে ছেলে বা বাজে মেয়ে বলবে না।

গুড টাচ, ব্যাড টাচ

মঞ্জিমা : ছোট্ট বন্ধুরা, সব সময় মনে রাখবে, তোমরা কেউ বাজে ছেলে, বাজে মেয়ে নও। তোমরা সবাই খুব ভালো, খুব সাহসী। ব্রেভ বয়েজ অ্যাণ্ড ব্রেভ গার্লস। যারা তোমাদের ব্যাড টাচ করে, জোর করে প্রাইভেট পার্টসে হাত দেয়, তারাই সব খারাপ লোক, ভেরি ভেরি ব্যাড পার্সনস। দে আর ক্রিমিন্যালস, অপরাধী ওরা। ওদের শাস্তি দিতে হবে। শাস্তি দেবো আমরা সবাই মিলে। তার জন্য তোমাদের সবাইকে দুর্গা হতে হবে, সুপারহিরো হতে হবে।

বাচ্চারা সবাই : দুর্গা? সুপারহিরো?

স্যমন্তক : ইয়েস! লিটল চ্যাম্পস, তোমরা সবাই সুপারহিরো, তোমরা সবাই মা দুর্গা। এইসব যত্ত আজেবাজে লোক আসবে তোমাদের ব্যাড টাচ করতে, ধাঁইধাঁই করে সব্বাইকে পিটিয়ে ঘ্যাঁক করে কামড়ে দিয়ে পাঁইপাঁই করে দৌড়ে মা বাবার কাছে চলে যাবে তোমরা। তারপর দেখবে খারাপ লোকগুলো কেমন ভেউভেউ করে কাঁদবে। পানিশমেন্ট পাবে যে ওরা!

ত্রিধা : তারপর আমরা সবাই মিলে বলব, থ্রি চিয়ার্স ফর লিটল সুপারহিরোস...

সবাই সমস্বরে : হিপ হিপ হুররে!!

(সমাপ্ত)

 

ছবিঃ
সুইমস্যুট পরনে শিশু - উৎস
গ্রাফিক্সঃ মহাশ্বেতা রায়
বিশেষ কৃতজ্ঞতাঃ নারায়ণীজ কিড্‌জ্‌ প্লে স্কুল

ভূতপূর্ব ইঞ্জিনিয়ার, বর্তমানে সাংসারিক কাজের মাঝে সু্যোগ পেলেই পড়া আর লেখার আনন্দে মাতার চেষ্টায় থাকেন। সেই গোত্রের মানুষ, যারা আর কিছু না পেলে ঠোঙ্গায় ছাপা খবরও মন দিয়ে পড়েন। সারাদিনের অনেকটা সময় কাটে মেয়ে কুটুনের সঙ্গে; তার কীর্তিকলাপ মাঝেমধ্যে লিখতে চেষ্টা করেন;বর্তমানে ধানবাদের বাসিন্দা।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা