। দ্বিতীয় দৃশ্য ।
(যতীনের বাড়ি। একমাস যেতে না যেতে চটি ছিঁড়ল। যতীন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে। হাতে একটা ছেঁড়া ঘুড়ি।)
যতীন : আমার কপালটাই মন্দ। একমাস তো হল না, এরই মধ্যে চটির একটা পাশ একটু হাঁ করে আছে। বাবা দেখলে যা বকবে! ওই তো মা আসছে।
(যতীনের মায়ের প্রবেশ)
মা : চটি আবার ছিঁড়েছে? পারিস বটে। ওরে এই বেলা মুচি ডেকে সেলাই করা, নাহলে একেবারে যাবে।
যতীন : মুচির কাছে যেতে বলছ, পয়সা তো লাগবে।
মা : আমার কাছে বাপু পয়সা নেই। সেটি থাকে তোমার বাবার কাছে।
যতীন : ওরে বাবা! বাবার কাছে গেলে আর রক্ষে নেই। হাজারটা কৈফিয়েৎ দিতে হবে।
মা : তবে থাকো ছেঁড়া চটি পরে। আর খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটো। তা এখন রান্নাঘরের দিকে কেন?
যতীন : একটু আঠা দেবে মা?
মা : আঠা দিয়ে আবার কী করবি?
যতীন : দেখছ না ঘুড়িটা ছিঁড়ে গেছে। জোড়াতাড়া দিয়ে যতদিন সম্ভব টিঁকিয়ে
রাখতে হবে যে!
(আঠা খুঁজে মা যতীনের দিকে এগিয়ে দেয়।)
মা : পারিসও বটে! এক্ষুনি নিশ্চয়ই বলবি মা একটু কাঁচিটা দেবে?
যতীন : ঠিক বলেছ মা। আমার সোনামণি মা! সুতো কাটতে কাঁচিটা তো লাগবেই।
মা : তবে আর কী! যাও, আমার সেলাইয়ের বাক্স ঘেঁটে ঘন্ট করে রেখে দিয়ে এসো।
যতীন : না গো মা, তোমার সেলাইয়ের বাক্স অত ঘাঁটব না। শুধু কাঁচিটা দেখে সেখান থেকে তুলে নেব। তুমি দেখে নিও।
মা : তা খাওয়া দাওয়া করবি, নাকি তা-ও মনে নেই?
যতীন : (ঘুড়িতে আঠা লাগাতে লাগাতে) দেখছ না, ঘুড়ির ল্যাজ লাগাচ্ছি। ছেঁড়া জায়গায় এখন তাপ্পি মারব। ঘুড়িটাকে বেশ করে ওড়াব। তারপর খেতে আসব।
মা : মনে থাকলে তবে না আসবি! যাও গিয়ে ঘুড়িটাকে ঠিক করে ওড়াও। ঘুড়ি উড়িয়েই দিন কাটাও।