ওপরে, বাঁদিক থেকেঃ আসাদো, লোক্রো, এম্পানাদা
নিচে, বাঁদিক থেকেঃ দালচে দে লেচে, মাহ্তে
এবার আসি খাওয়াদাওয়ার কথায়। আর্জেন্টিনা হল বিশ্বের সর্বাধিক মাংস ব্যবহারকারী দেশ। এদেশের নিজস্ব খাবারের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় পদ হলো আসাদো (Asado), ঠিক একটা পদ নয়, বারবিকিউয়ের আর্জেন্টিনীয় সংস্করণ হলো এই আসাদো।
এছাড়া আছে পুরভরা পেস্ট্রি, যার নাম এম্পানাদা (Empanada)
ভুট্টা, বীনস, মাংস, পেঁয়াজ, আর্জেন্টিনার বিশেষ আলু (Papachola) মিশিয়ে তৈরি পদ লোক্রো (Locro)
দালচে দে লেচে (Dulce de leche) হল মিষ্টি দুধ ঘন করে তৈরি এক বিশেষ সস যা বিভিন্ন মিষ্টি খাবার তৈরি করতে ব্যবহার হয়। এই পদটি নানা নামে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ব্যবহার হয়। বলাই বাহুল্য, আর্জেন্টিনার খাবার-দাবারের মধ্যে দেশীয় উপকরণের সঙ্গে ইউরোপীয় প্রভাব অনেকটাই রয়েছে।
খাঁটি আর্জেন্টিনীয় পানীয় হলো মাহ্তে (Mate)। এটি তৈরি এবং পান করার জন্য বিশেষ সরঞ্জামের প্রয়োজন হয়।
ইয়ের্বা মাহ্তে (Yerba Mate) -র পাতা গরম জলে ভিজিয়ে চা- এর মত পানীয় তৈরি করা হয়। তারপরে একধরনের বিশেষ আকৃতির পাত্রে (Mate / Guampa) ঢেলে বম্বিলা (bombilla) নামক একটি ধাতব স্ট্রয়ের সাহায্যে পান করা হয়।মাহ্তে-এর ও 'টীব্যাগ ' সংস্করণ রয়েছে আর্জেন্টিনাবাসীর জন্য, 'তারাগি (Taragui.)' নামের ব্র্যান্ড।
খেলাধূলা সম্পর্কে দু'কথা না বললে আর্জেন্টিনা দেশটা সম্পর্কে অনেক কথা বলা বাকি থেকে যায়।
বাঁদিক থেকেঃ দিয়েগো মারাদোনা, গ্যাব্রিয়েলা সাবাতিনি, লিওনেল মেসি
ফুটবলের রাজপুত্র দিয়েগো মারাদোনার দেশ, নতুন প্রজন্মের ফুটবল-আইডল লিওনেল মেসির দেশ আর্জেন্টিনা, এ তো জানাই আছে। গ্যাব্রিয়েলা সাবাতিনিকে চেনো কি? আশি এবং নব্বইয়ের দশকের প্রথম সারির মহিলা পেশাদার টেনিস খেলোয়াড়দের মধ্যে একজন গ্যাব্রিয়েলা, ১৯৮৮ সালের সিওল অলিম্পিকে রৌপ্য পদক জেতেন।
ওপরেঃ আর্জেন্টিনার মহিলা হকি টীম
নিচেঃ পাটো খেলা
বিশ্ব ফুটবলে আর্জেন্টিনার সাফল্যও কারও অজানা নয়। কিন্তু, জানো কি, মহিলাদের হকিতে সেদেশের ঝুলিতে কী কী সাফল্য জমা হয়ে আছে? চারটে অলিম্পিক পদক, দুবারের বিশ্বকাপ, একবারের ওয়ার্ল্ড লীগ আর সাতটা চ্যাম্পিয়নস ট্রোফি।
বাস্কেটবল, টেনিস, পোলো, বক্সিং, কার রেসিং, এগুলোও দেশবাসীর কাছে খুবই জনপ্রিয়।
যদিও দেশের জাতীয় খেলা হলো পাটো (Pato), পোলো আর বাস্কেটবলের মিশ্রিত এক সংস্করণ, ঘোড়ায় চড়ে খেলতে হয় এটি, তবে জনপ্রিয়তার নিরিখে ফুটবল, কার রেসিং, টেনিস ইত্যাদির ধারেকাছে আসে না এই খেলাটি।
কেমন করে খেলা হয় পাটো, দেখতে পারো এই ভিডিও তেঃ
জাতীয় খেলা নিয়ে যখন কথাই হল, তখন আর্জেন্টিনার অন্যান্য জাতীয় চিহ্ন গুলির সম্পর্কেও জেনে নিইঃ
জাতীয় প্রতীকঃ মে মাসের সূর্য / সল দে মেয়ো (Sun of May)। ঐতিহাসিকদের মতে, এই সূর্য হলেন ইন্কাদের সূর্যদেবতা ইন্তি-এর প্রতিরূপ। আর 'মে' বলতে ১৮১০ সালের মে বিপ্লবকে বোঝানো হয়, যখন প্রথম স্পেনের শাসনের থেকে স্বাধীনতা চেয়েছিল আর্জেন্টিনা। এই সল দে মেয়ো আর্জেন্টিনা এবং উরুগুয়ে- দুই দেশেরই প্রতীক, কিন্তু তাদের ছবি দুইভাবে আঁকা হয়।
জাতীয় পতাকাঃ দুটি সমান্তরাল হালকা আকাশী নীল অনুভূমিক ফালির মাঝে একটি সাদা ফালি, সেই সাদার ওপরে এক সোনালি হলুদ সূর্যের প্রতীক - এই হল আর্জেন্টিনার পতাকা। ১৮১২ সালে, আর্জেন্টিনার স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন পতাকাটি প্রথম তৈরি করা হয় । ১৮১৮ সালে পতাকার মাঝে সল দে মেয়োকে বসানো হয়।
জাতীয় প্রাণীঃ রেড ওভেনবার্ড (Rufous hornero) হল আর্জেন্টিনার জাতীয় প্রাণী।
জাতীয় গাছ ও ফুলঃ ককস্পার কোরাল গাছ (Erythrina crista-galli) আর্জেন্টিনার জাতীয় গাছ আর এই গাছের ফুল আর্জেন্টিনার জাতীয় ফুল। এই গাছ সাধারন ভাবে সেইবো নামেও পরিচিত।