সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
অষ্ট বসু

তারা ছিল আট ভাই, সকলেরই নাম বসু। দেবলোকের বার্তাবাহক তারা, সেখানেই তাদের নিবাস। দেবলোকে একটা সুন্দর বাগানের ভিতর বিশাল বাড়িতে থাকত। অত্যন্ত রূপবান এই আট ভাই খুবই সুখে ছিল; যখন যা চাইত পেয়ে যেত। একদল ভৃত্য হুকুম তামিল করার সর্বদাই তৈরি থাকত। উৎকৃষ্ট শ্রেণীর হাতি ও ঘোড়ায় আস্তাবল ভর্তি থাকত। খাবার-দাবার, আমোদ-আহ্লাদ, কোন কিছুরই অভাব ছিল না। তবে এততেও তাদের শান্তি নেই। খালি অন্য লোকের কি আছে, যা তাদের নেই সে চিন্তাতেই মশগুল। ন্যায় বা অন্যায় - কোন পথে তা নিজের আয়ত্বে আনা যায়, সারাদিন তারা সেই ফন্দি আঁটত।

একদিন তারা কোন কাজে পৃথিবীতে এসেছিল, ফেরার সময় হঠাৎ নজর পড়ল ঋষি বশিষ্ঠের আশ্রমের দিকে। ঋষির তপস্যার প্রভাবে আর আশ্রমজননী অরুন্ধতীর পুণ্যবলে আশ্রমটি সর্বদাই স্নিগ্ধ আর শান্তির আশ্রয় বলে মনে হত। বসুরাও একটু বিশ্রামের জন্য সেখানে উপস্থিত হল। ঠাণ্ডা বাতাস তাদের আপ্যায়িত করল; গাছের ফল তাদের ক্ষুধায় শান্তি দিল আর কাঁচের মত টল্‌টলে সরোবরের জল তাদের তৃষ্ণা নিবারণ করল।

কিন্তু কোন ভাল ব্যবহারই দুষ্টবুদ্ধিকে শান্ত করতে পারে না। বিশ্রাম নিতে নিতে তাদের চোখ গেল ঋষির গোয়ালের দিকে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন সুন্দর গোয়ালটিতে যত্নলালিত ভাল জাতের দুগ্ধবতী গাভীতে ভর্তি। এদের মধ্যে শ্রেষ্ঠা গাভীটি হল নন্দিনী। দেখেই আট ভাইএর চোখ লোভে চক্‌চক্‌করে উঠল। তাদের কাছে তো এমন গাভী নেই! বশিষ্ঠ তখন আশ্রমে ছিলেন না। তিনি যে খুব শক্তিশালী ঋষি, তা তারা জানত। চাইলে তিনি যদি না দেন, তাই তাঁর ফেরা পর্যন্ত তারা আর অপেক্ষা করতে পারল না। তারা গাভীটাকে চুরি করার মতলব করল। কিন্তু ভয়ও আছে, যদি ঋষি শাপ দেন! তাই যখন চুরির সময় হল, তখন প্রথম সাত ভাই পিছিয়ে এল। কিন্তু কনিষ্ঠ ভাই প্রভাসের সাহস আবার সবচেয়ে বেশি। সেই এগিয়ে এসে নন্দিনীর গলার দড়ি ধরে টানতে টানতে তাকে নিজেদের বাড়ি নিয়ে গেল; পিছনে হল্লা করতে করতে গেল তার বাকি সাত ভাই।

বশিষ্ঠ বাড়ি ফিরতেই নন্দিনীর খোঁজ পড়ল। তাদের অজ্ঞাতসারে কিভাবে নন্দিনী চুরি হয়ে গেল সেজন্য প্রথমে ঋষি সবাইকে বকলেন, তারপর তাকে খুঁজতে বের হলেন। সম্ভবপর সব জায়গায় খুঁজেও যখন তাকে পাওয়া গেল না, তখন তিনি ধ্যানে বসলেন। তাঁর মনের আয়নায় ভেসে উঠল নন্দিনীর ছবি। তিনি দেখলেন, কারা নন্দিনীকে কোথায় লুকিয়ে রেখেছে। ক্রুদ্ধ ঋষি নন্দিনীকে উদ্ধার করে তাকে সঙ্গে করে অষ্ট বসুর কাছে উপস্থিত হলেন। ঋষিকে দেখেই তো বসুদের মনে ভয় ঢুকেছে, কিন্ত তবুও তাদের স্বভাবমত তারা বশিষ্ঠের সঙ্গে তর্ক জুড়ে দিল। "আমাদের দোষ কোথায়? কার গরু, কখন আমাদের বাগানে ঘাস খেতে ঢুকেছে, আমরা কি করে জানব।" একে চুরির দোষ, তাতে এই মিথ্যাভাষণ! বশিষ্ঠের ধৈর্য আর বাঁধ মানল না। তিনি ভীষণ স্বরে অভিশাপ দিলেন, "তোমাদের মত দুর্বৃত্তের এই স্বর্গভূমিতে থাকা উচিত নয়। এই পবিত্র ভূমিকে তোমরা কলুষিত করছ। যাও, পৃথিবীতে জন্ম নিয়ে সাধারণ মানুষের জীবন কাটাও, তাদের মতই দুঃখ-কষ্ট ভোগ কর। এই অপার আনন্দ আর সুখের জীবনের উপযুক্ত নও তোমরা।"

শাপ শুনে এবার বসুদের চৈতন্য হল। একি! এই স্বর্গ ছেড়ে চলে যেতে হবে? পৃথিবীর ধুলোকাদায় তারা থাকবে কেমন করে? সেখানে আবার কাজ করে খেতে হয়, তারা তো কোন কাজই জানে না। তবে কি হবে? তারা একসঙ্গে ঋষির পায়ে পড়ে কান্নাকাটি জুড়ে দিল। "মহর্ষি, আমাদের মাপ করে দিন। আমরা অবোধ, অপরাধের গুরুত্ব বুঝতে পারিনি। পৃথিবীর কষ্ট আমাদের সহ্য হবে না। আমাদের সেখানে পাঠাবেন না। দয়া করুন, শাপ তুলে নিন ঋষিবর।"

বশিষ্ঠ সহজে রাগ করেন না; আবার রাগ হলে সে রাগ শীধ্রই দমন করতে পারেন। বসুদের কান্নাকাটি তাঁকে নরম করে দিল। একটু শান্ত হয়ে তিনি বললেন, "আমার শাপ মিথ্যা হবার নয়। তবে এটুকু বলতে পারি, পৃথিবী বাসের মেয়াদ তোমাদের দীর্ঘ হবে না। কিন্তু এই অন্যায় কাজের মূল হোতা প্রভাস। তাই প্রভাসের পৃথিবীবাস অবশ্যই দীর্ঘতর হবে। এখন কিভাবে পৃথিবীতে জন্ম নেবে সে বিষয়ে সুরনদী গঙ্গার সঙ্গে পরামর্শ কর।"

বাকি সকলেই বিদায় নিলে প্রভাস হাত জোড় করে বলল, "মহর্ষি, আপনার আদেশ শিরোধার্য। অন্যায় করেছি, শাস্তি তো পেতেই হবে। শুধু দয়া করে বলুন আমার পৃথিবী বাসের দিনগুলি কেমন কাটবে। কোন গৃহে আমার জন্ম হবে, কেমন কর্মে আমার দিন কাটবে, সেটাই জানবার ইচ্ছা করি।"

বশিষ্ঠ বললেন, "প্রভাস, তুমি অনুতপ্ত হয়েছ, সেটা ভাল। পৃথিবীতে তুমি রাজবংশে জন্মগ্রহণ করে দীর্ঘস্থায়ী কীর্তির অধিকারী হবে। এখন গঙ্গার সাথে আলোচনা করে যাত্রার আয়োজন কর। তোমার কল্যাণ হোক।"

যে রাজবংশগুলি এই সময় পৃথিবীতে রাজত্ব করছিল, তাদের মধ্যে গুণে গরিমায় শ্রেষ্ঠ কুরুবংশে তখন রাজাসনে বসে শান্তনু। রূপে গুণে বীরত্বে অদ্বিতীয় রাজার তখনও বিবাহ হয় নি। এক অলস বিকেলে রাজা নদীর তীরে পায়চারি করছিলেন, দেখলেন জলে পা ডুবিয়ে এক অলোকসামান্যা সুন্দরী সেখানে বসে আছেন। তাঁর রূপের ছটায় রাজা মুগ্ধ হয়ে গেলেন। কৌতূহলী রাজা সুন্দরীর পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বললেন, তিনি সুরনদী গঙ্গা। রাজা তক্ষুনি তাঁকে বিবাহ করতে চাইলে গঙ্গা বললেন, "মহারাজ, আপনাকে বিবাহ করতে হলে আমাকে কথা দিতে হবে, আমার কোন কাজে আপনি কখনও বাধা দেবেন না, কোন কাজের কৈফিয়ৎ চাইবেন না। তবেই আমি সম্মত হব।" মুগ্ধ রাজা কোন প্রশ্নই করলেন না। তাড়াতাড়ি গঙ্গাকে বিয়ে করে বাড়ি নিয়ে এলেন।

কিছুদিন আনন্দেই কেটে গেল। গঙ্গা কিন্তু ভোলেননি, কেন তিনি পৃথিবীতে এসে মানুষকে বিবাহ করেছিলেন। স্বর্গে থাকাকালীন অষ্ট বসু যে তাঁকে দিয়ে প্রতিজ্ঞা করিয়ে নিয়েছিল, তাদের শাপমোচনের জন্য তিনি সাহায্য করবেন। গঙ্গা সন্তানসম্ভবা হলেন, অর্থাৎ অষ্ট বসুর একজন তাঁর কোলে জন্ম নিল।

রাজপুরীতে সেদিন বড় উৎসব। কুরুবংশে দেবশিশুর মত উত্তরাধিকারীর জন্ম হয়েছে। নিশীথ রাতে উৎসবক্লান্ত রাজপুরী যখন ঘুমে আচ্ছন্ন, গঙ্গা নবজাতককে কোলে নিয়ে নদীর জলের ধারে নেমে এলেন, ধীরে ধীরে শিশুটিকে শুইয়ে দিলেন জলের মধ্যে। অতটুকু শিশু মুহূর্তেই তলিয়ে গেল জলের তলায়; প্রথম বসুর শাপমুক্তি ঘটল।

পরের দিনই রাজা দেখলেন শিশুটি নেই। গঙ্গার নির্বিকার মুখের দিকে তাকিয়ে তাঁর বিবাহের শর্তের কথা মনে পড়ে গেল। অবাক হলেও মনের প্রশ্ন মনেই রয়ে গেল। রাজকার্যের মধ্যেই অস্থিরতার সান্ত্বনা খুঁজে নিলেন।

অষ্ট বসু

বছর ঘুরে এল। গঙ্গার কোলে আবার ছেলে এল। রাজার মনে খুব আনন্দ, কিন্তু আবার গভীর রাতে গঙ্গা সেই শিশুকে জলে বিসর্জন দিয়ে এলেন নির্মমভাবে, রাজার জিজ্ঞাসু দৃষ্টিকে উপেক্ষা করে। তৃতীয়বার থেকে রাজা গঙ্গাকে খুব সতর্কভাবে পাহারা দিয়েছিলেন, কিন্তু এই অদ্ভুত নির্মম ঘটনাকে নিবারণ করতে পারেন না। এক নিদারুণ যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে তাঁর দিন কাটে। গঙ্গার সব কিছু এত সুন্দর, কিন্তু এব্যাপারে এত কাঠিন্য, এত নিষ্ঠুরতা কেন?

অষ্টম বসু যেদিন শিশুরূপে গঙ্গার কোলে এল, সেদিনও রাজপুরীতে যথারীতি উৎসব হয়েছে; কিন্তু রাজার মনে আনন্দ নেই, ভ্রূকুটিকুটিল মুখে তিনি এক অজানা আশঙ্কায় প্রহর গুনে চলেছেন। ধীরে ধীরে তাঁর মধ্যে এক কঠিন সংকল্পের জন্ম হচ্ছিল। আর নয়, এই নৃশংসতার শেষ করতেই হবে, গঙ্গাকে বাধা দেবার ফল যাই হোক না কেন। তাই যেইমাত্র গঙ্গা নবজাতককে নিয়ে আগের মতই ঘরের বাইরে পা দিয়েছেন, রাজা তাঁর পথ রোধ করে দাঁড়ালেন আর শিশুটিকে মায়ের হাত থেকে ছিনিয়ে নিলেন।

"বারে বারে এ কাজ তুমি কেন কর দেবী, এ কাজ কি তোমায় সাজে? আমার বংশধরকে এইভাবে হত্যা করছ তুমি! আমার কি অপরাধ? পরপর সাতবার তুমি একই কাজ করেছ, আমি কিছু বলিনি। কিন্তু আজ তোমায় বলতেই হবে এর কারণ কি।"

"মহারাজ," গঙ্গা পদ্মের মত দুই চক্ষু রাজার মুখে রেখে বললেন, "আপনি কি ভুলে গেলেন বিবাহের পূর্বে আপনি কি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন? আপনার কি মনে নেই, আমার কোন কাজে বাধা দিলে আমি আর আপনার সঙ্গে থাকব না?"

"জানি দেবী, কিন্তু কোন মূল্যেই আমি এই শিশুকে তোমায় হত্যা করতে দেব না। ও আমার বংশের পরবর্তী পুরুষ, এই রাজ্যের ভবিষ্যত রাজা।"

"মহারাজ, শর্ত অনুযায়ী আজ আমি এই রাজপরিবার ছেড়ে চলে যাব। আর সঙ্গে নিয়ে যাব আমাদের এই পুত্রটিকে। আপনি ভয় পাবেন না, এর কোন ক্ষতি আমি করব না। নবজাতক শিশু মা ছাড়া বাঁচতে পারে না। তাই আমি একে নিয়ে যাব, আর কুরুকুলের উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত করে যথাসময়ে আপনার কাছে পৌঁছে দিয়ে যাব। এখন আমায় বিদায় দিন।"

পুত্রকে নিয়ে গঙ্গা চলে গেলেন। শূন্য হৃদয়ে শান্তনুর দিন যেন আর কাটে না। বছর কেটে যায়। সেদিন রাজার হৃদয় পুত্রের বিরহে বড়ই উতলা হয়েছিল। কোনক্রমে রাজকার্য শেষ করে রাজা বিকালবেলা নদীর তীরে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। ঠাণ্ডা হাওয়াও তাঁর ব্যথিত মনকে শান্ত করতে পারছিল না। হঠাৎ তিনি খেয়াল করলেন, নদীতে স্রোত স্বাভাবিকভাবে বইছে না। বরং জলের অভাবে মাছগুলি ছট্‌ফট্‌ করছে। তিনি কারণ অনুসন্ধান করতে করতে খানিক দূরে গিয়ে দেখলেন, নদীর জলে দাঁড়িয়ে একটি কিশোর জলস্রোতকে তীরের জালে এমনভাবে বদ্ধ করেছে যে জল স্বাভাবিকভাবে বইতে পারছে না। তিনি কিশোরের শরচালনার নৈপুণ্যে মুগ্ধ হয়ে তাকে কাছে ডাকলেন, তার পরিচয় জিজ্ঞাসা করলেন। গর্বিত স্বরে কিশোর জানাল যে সে গঙ্গাপুত্র দেবব্রত। এই সময়ই গঙ্গা আবির্ভূত হলেন আর দেবব্রতকে শান্তনুর হাতে সমর্পন করে বললেন, "মহারাজ, দেবব্রত আপনার পুত্র, ওকে আমি সর্বশিক্ষায় শিক্ষিত করেছি, কুরুকুলের উপযুক্ত করে তুলেছি। আপনি ওকে গ্রহণ করুন।"

পুত্রকে দেখে আনন্দে শান্তনুর চোখ জলে ভেসে গেল; তিনি তাকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন। রাজপুরীতে খবর গেল, কাড়া-নাকাড়া বেজে উঠল। সমস্ত রাজ্যবাসী নেচে গেয়ে আনন্দে নতুন রাজকুমারকে বরণ করে নিল। শুরু হল অষ্টম বসু প্রভাসের নতুন পার্থিব জীবন। সে জীবন কেমন? সে আরেকটা বড় গল্প।

উৎসঃ মহাভারত।

ছবিঃ অনুভব সোম

শুক্তি দত্ত ভালবেসে প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। রূপকথা, প্রাচীন সাহিত্য, দেশবিদেশের লোকসাহিত্য, গল্পকথা পড়তে ভালবাসেন। সেগুলো নিয়ে আলোচনা বা শিশুদের সেই গল্প শোনাতেও ভালবাসেন। প্রধানতঃ শিশুমনস্তত্ত্ব ও তাদের শিক্ষাসংক্রান্ত কাজে দীর্ঘকাল কাটিয়েছেন। সেটা শুধু পড়ানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; তিনি শিশু সাহিত্য, লোকসাহিত্য প্রভৃতিকে তাদের মূল্যবোধ বিকাশে কাজে লাগাতে চান।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা