এবার আমরা জেনে নিই ঈদুল ফিতরের অর্থ। ফিতর অর্থ রোজা ভাঙা, খাওয়া ইত্যাদি। ঈদুল ফিতর এর রোজা শেষ হওয়ার আনন্দ। সেই আনন্দকে আমরা পালন করি ঈদুল ফিতর হিসেবে। পুরো একমাস রোজা রাখবার পর ঈদের আনন্দ তাই অপরিসীম।
ঈদের আলোক সজ্জা
আরবী শাওয়াল মাসের ১ তারিখ ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হয়। আরবী মাস যেহেতু চান্দ্র মাস, তাই চাঁদ দেখার ওপর ঈদ কবে হবে তা নির্ভর করে। ২৯তম রমজানে সন্ধ্যার আকাশে চাঁদ দেখা গেলে পরদিন ঈদের দিন ঘোষণা করা হয়। আর সে রাতে চাঁদ দেখা না গেলে রমজান ৩০টি হয় এবং এর পরের দিন নিশ্চিতভাবেই ঈদুল ফিতর বা ঈদের দিন হয়। কেননা আরবী মাস কোনো ভাবেই ৩০ দিনের বেশি হয় না। অর্থাৎ চাঁদ দেখা গেলেই সে রাতটিকে বলে চাঁদরাত আর তার পরদিন হলো ঈদ। ঈদের চাঁদ দেখা গেলেই চারদিকে আতশ পুড়িয়ে উল্লাসে মেতে ওঠে সবাই। মেয়েরা হাতে মেহেদির নকশা আঁকে। ছোটোরা উল্লাসে বেরিয়ে পড়ে ঘর থেকে। বড়রা ঈদের বিশেষ রান্নার আয়োজনে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
চাঁদরাত পেরিয়ে যে সকালটি এসে উপস্থিত হয় তা ঈদের সকাল। মজাদার সব খাবারের সুবাস বাতাসে ভেসে বেড়ায়। ঈদগাহতে সকালেই ঈদের নামাজটি পড়া হয়। কাজেই গোসল (স্নান) সেরে, পরিষ্কার নতুন জামাকাপড় ও টুপি পরে, আতর (সুগন্ধী) লাগিয়ে নামাজ পড়তে বেরিয়ে পড়ে ছোট বড় সবাই। নামাজ শেষে একে অন্যকে শুভেচ্ছা জানায় কোলাকুলি করে। তারপর বাড়ি ফিরে পরিবারের সকলের সাথে আনন্দে মেতে ওঠে। পরিচিত,বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন একে অন্যের বাড়ি বেড়াতে যান।
মনে রাখতে হবে ঈদ শব্দের সাথে আরো একটি শব্দ রয়েছে তাহলো ফিতর, আর ফিতর শব্দের অর্থ হলো উপবাস ভঙ্গ করা, স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসা, আজকের ঈদ তাদের জন্যে যারা রমজান মাসে রোজা রেখে প্রয়াস করেছেন আত্ম সংযম করার, সৃষ্টিকর্তাকে ভয় করেছেন, ক্রোধ দমন করেছেন, অন্যের কষ্ট লাঘব করার প্রয়াস অব্যাহত রেখেছেন, প্রতিবেশির ব্যথাবেদনা দূর করার চেষ্টা করেছেন, নিঃস্বের ক্ষুধা যন্ত্রণা নিজে রোজা রেখে উপলব্ধি করার, উঁচু নীচুর ভেদাভেদ ভুলে যাবার চেষ্টা করেছেন। ঈদ শুধু নিজেদের মধ্যে আনন্দ বা খুশির উৎসব নয় বরং ঈদ মানে ধনী-গরীব সকলের জন্যই বিশেষ আনন্দের দিন। শুধু নিজের জন্য নয়, শুধু ভোগে নয়, বরং সবাইকে নিয়ে আনন্দে মেতে ওঠার দিন হলো ঈদ।
মেঘ অদিতি
ঢাকা, বাংলাদেশ
ছবিঃ
উইকিপিডিয়া