খেলাঘরখেলাঘর

পুরাণঝুলি



''সে তো অনেক অনেক কাল আগের কথা!
ব্রহ্মান্ডের কোনো কোণেই মানুষের পায়ের ছাপ তখনো পড়ে নি।
না ছিলো স্বর্গ,না ছিলো কমলালেবু আকারের পৃথিবী!''
মিটিমিটি হাসছে বুড়ি কুন্‌গুত্যে।

সন্ধ্যের রং বদলানো আকাশটার দিকে এক ঝলক অন্যমনষ্ক চোখ বুলিয়ে পাতলা চাদরে গুটিসুটি মেরে গল্পে ফিরেছে বুড়ি,
''শোন্ তবে........''

সুন্দরী দেবী মাগোর প্রিয় বান্ধবী উল্রাও যেমন সাদাসিধে তেমনি পরোপকারী।মিষ্টি ব্যবহার আর ভালো কাজের সুবাদে অল্পদিনের মধ্যেই  তিনি দেবী হিসেবে স্বীকৃতি পেলেন।আহা তখন কেই বা জানতো সে সুখ হারিয়ে যাবে চিরতরে!
'দেবতারা অমর' কথাটা বহুবার শোনা।কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে ভুরি ভুরি অন্যায় করলেও ওঁদের মোটে সাজা পাবার ভয় নেই।অথবা বিধাতাপুরুষ কিচ্ছুটি বলবেন না।বরং অতি সামান্য একটা দোষ মাফ করা তো যোজন দূরের কল্পনা,বেচারি উল্রাওকে নিজের জীবনটাই খোয়াতে হলো!

সখীর অকালমৃত্যুতে বড্ড আঘাত পেলো মাগো।একা  একা সময় যেন কাটতেই চায় না।উল্রাওর পুতুলগুলো বুকে জড়িয়ে চুপটি করে বসে থাকতে থাকতে হঠাৎই ইচ্ছে হলো,‘‘ইস্ যদি দুটো জ্যান্ত পুতুল পেতাম,কী মজাটাই না হতো।’’যেই  না ভাবা,অমনি দুটি ফুটফুটে মেয়ে কোথা থেকে ঝাঁপিয়ে পড়লো তাঁর কোলে।মাগো তো মহা খুশী।আদর করে দুই মেয়ের নাম রাখলেন গুনেগ্‌ ও সহে।
কথায় বলে না, সময়ের পা অনেক লম্বা।তাই দৌড়তে পারে সবচেয়ে জোরে।বিশেষ করে যেখানে একবার চোখের পলক ফেললেই দেবতাদের বছর ঘুরে যায়,তেমন জায়গায় ছুটেও সুখ!
দেখতে দেখতে বড়  হয়ে ওঠে  কিশোরী গুনেগ্‌ আর সহে।একসময় ভালো ছেলে দেখে বিয়ে দিয়ে দেন মা মাগো।কিছুদিন যেতে না যেতেই গুনেগ্‌ দুটি পুত্র,সহে দুটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেয়।এই চারটি শিশুই স্বর্গের মাটিতে জাত প্রথম মানবসন্ততি।তবে এঁরা ঠিক সাধারণ মানুষের মত নয়,বলা যেতে পারে মহামানব।