সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo

সিরাজুল,

এই মাত্র একটা নীল রঙের খামে একরাশ মন কেমনের ঘন্টা বাজিয়ে আমার হাতে যেটা এসে পৌঁছোলো সেটা সান্তাক্লজের উপহার নয়। আমার সিরাজুলের গোমড়া মুখের ছবি। আর মন খারাপের গদ্য। কয়েকদিন এমনটাই আশঙ্কা করছিলাম তোমার চুপচাপ থাকা দেখে। তুমি কি জানো তোমার আর আনন্দীর খোঁজ নিয়েছে কতজন? তারমধ্যে মছলন্দপুরের মৌন আছে। ইলিনয় থেকে বাতিঘর আছে। সবাই জানতে চাইছে সিরাজুলের গোঁফটা কতবড় হল? ও আচ্ছা...ঠিক আছে। একি? এক্কেবারে গম্ভীর। তাহলে আগে শোনো। মন দিয়ে শুনবে কিন্তু। তুমি জানতে চেয়েছো অনেক কিছু। আমি সব তো জানি না সিরাজুল। তবে দেখো না আর তো কদিন পরেই বড়দিন। আর আজকের সকালটা দেখে আমার কাদের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে জানো? তাহলে শোনো...

তুমি কি জানো সিরাজুল ঠিক এখন, এই শীতের সকালে উত্তরবঙ্গের ছোট ছোট নদী গুলোর ওপর থেকে এক জলীয় বাস্প ওড়ে? মনে হয় যেন নদী গুলো থেকে ধোঁওয়ার আস্তরণ উঠছে। ঠিক যেমন কাপ থেকে গরম চায়ের ধোঁওয়া ওঠে। ভোরের স্বচ্ছ কুয়াশায়, সূর্যের প্রথম আলোতে সেই দৃশ্য বড় সুন্দর। চিলাপাতার জঙ্গলে আন্দুবস্তির সুরেন রাভা আমাকে জানিয়েছে ঘটনাটা। একটা সময় আমি আর সুরেন অনেক শীতের রাতে একসঙ্গে যে হাতি তাড়াতাম। তোমার মনে আছে নিশ্চই। সুরেন, বিকাশ, ওরা সবাই সারাদিন স্কুলে পড়ে, মাঠের কাজ করে যখন ক্লান্ত ঠিক সেই সময়েই খবর এলো চিলাপাতার জঙ্গলের তোর্সার পাড় দিয়ে ঢুকছে বুনো হাতির পাল। আমরা ছুটতাম রাতের খাবার কোনো রকমে খেয়ে। বাঁশের মাঁচা করা টঙে উঠে, হো হো করে চিৎকার করে, টিন পিটিয়ে, আগুনের মশাল জ্বেলে হাতির দলকে তাড়ানো হত। না হলে সব ফসল তো ওরা নষ্ট করে দেবে। গ্রামের ভিতরে ঢুকে ক্ষতি করবে। বাড়িঘর ভাঙবে। এই ত্রাস যে শুধু মাত্র আন্দুবস্তির তা কিন্তু নয়। এই ভয় মেচ বস্তির সুনীল নার্জিনারিন, অমলা নার্জিনারিনেরও। কিম্বা দক্ষিণ বঙ্গের শবর পাড়ার বিমল শব্বো, অমর শব্বো। মেদিনীপুরের জঙ্গল ঘেরা গ্রামের নীতু সোরেনেরও। এরা কিন্তু সবাই তোমার বয়সী সিরাজুল। হ্যাঁ জানি তুমি এবার বলবে নীতু, সুনীল, বিমল, অমলা যা করে তা তুমিও করে থাকো। তবে ওরা ধান ক্ষেতে মাচা বেঁধে, হোহো করে টিন পিটিয়ে, মশাল জ্বালিয়ে, টঙে বসে এইসব করে। আর তোমরা সুন্দরবনের বাঁধের রাস্তা বরাবর হেঁটে হেঁটে চিৎকার করতে করতে, চকলেট বোম ফাটাতে ফাটাতে করো। ওদের মূর্তিমান ত্রাস হাতি আর তোমাদের স্বয়ং রয়েল বেঙ্গল টাইগার। যাকে তুমি আদর করে ভয়ে ভক্তিকে "কুঁদো" বলে ডাকো। তোমার নানী বনবিবি আর বাবা দক্ষিণরায়ের মাচায় মানত করে পূজো দেয়। কুমীরদের হাত থেকে রক্ষা পেতে তাদের দেবতা কালু খাঁর থানে সাদা বাতাসা দেয়। সবাই ভয়ে ভক্তিতে নানা রকম পন্থায় বিপদের সঙ্কেত অনুসারে সেই বিপদ আটকাতে চেষ্টা করি। তাই তো? দেখ সিরাজুল, এই এতোবড় ভূমিকা এই সকালে তোমাকে লিখলাম এই কারণে, নীল রঙের খামে ভারত সরকারের ডাক মোহর লাগানো যে চিঠিটা আমার হাতে সুন্দরবনের রূপ-রঙ-গন্ধ-স্পর্শ নিয়ে আমার দিকেই তাকিয়ে আছে, সে সঙ্গে করে এনেছে সদ্য গোঁফ ওঠা এক কিশোরের প্রচন্ড মনকেমন, আর কষ্টের কথা। আমি জানি সিরাজুল কতটা কষ্ট পেয়েছো তুমি এবং তোমার বন্ধুরা। জানি এখনো তোমার চোখের চাহনি ছলছল। এখোনো তোমার একটুও পড়তে ভালো লাগছে না।

তোমার যদি সত্যি মন কেমন করে সিরাজুল, তোমার যদি ভালো না লাগে, সত্যি চোখের কোনে জমে ওঠে জল তুমি তাহলে উলটে রেখো খবরের কাগজটাকে। পড়ো না। কিন্তু এটাও মনে রেখো তোমার সামনে যা ঘটে যাচ্ছে, তাকে তুমি অস্বীকার করছো। তুমি তাকে হয়তো ভুলে থাকতে চাইছো। ওই রক্তাক্ত জুতো...জামা...তাদের আর্তনাদ। আমিও ভুলে থাকতে চাইছি সিরাজুল। সত্যি বলছি আমিও টিভির কাছে যাইনি। আমিও খবরের কাগজ পড়িনি বেশ কয়েকদিন। কিন্তু আমরা দুজনে কার কাছ থেকে পালাচ্ছি একবার বলতে পারো?

পাকিস্তানের পেশোয়ারের ওই স্কুলটা বিশ্বের যেকোনো দেশে হতে পারতো। আমি জানি তুমি প্যালেস্তাইনের স্কুলের জন্য আমাকে একটা লম্বা চিঠি দিয়েছিলে। ব্যাথায় বুক ভরে গিয়েছিল তোমার সেই চিঠি পেয়ে আমাদের সবার। তুমি প্রশ্ন তুলেছিলে কেন স্কুলের ওপর আক্রমণ হবে? কেন মারা যাবে ওই ছোট্ট ছোট্ট ছেলে মেয়েগুলো। তখন তো ঈদের মাস। চারিদিকে খুশির উৎসব। কিন্তু একটুও খুশির ছোঁওয়া লাগছিল না তোমার মনে। তোমার পাখিরালা গ্রামের চারপাশে বর্ষা শেষের সবুজ তোমাকে ভোলাতে পারেনি সেই মারণ আক্রমণের কথা। আজ শীত তার পাতা খসানোর সময় আরো কত প্রাণ নিমেষে খসিয়ে দিল। সত্যি এর সান্ত্বনা কোনো লেখায়, কোনো মিছিলে, কোনো তীব্র প্রতিবাদে হয় না। কিন্তু ওই যে শুরুর হাতি আর বাঘ তাড়ানোর গল্পের মতো আমরা যদি সাবধানী না হই আমাদের দোর গোড়ায় তাহলে উঁকি মারবে রক্তাক্ত চাহনি। তাই তুমি ঠিক বলেছো তোমার সেই মন কেমনের চিঠিতে লিখেছো "আমাদের সজাগ, সতর্ক এবং সাবধানী হতে হবে। আমাদের নজর থাকবে সুরক্ষিত প্রাচীরের মতো। যাতে আর একটা শিশুও মারা না যায় বুলেটের আঘাতে।" এতো সুন্দর ভাষা তোমার সিরাজুল। আমি গর্বিত। আর এটাও জানি তুমি কতটা ব্যাথা পেয়ে চিঠি লিখেছো আমাকে। আমি জানি তুমি কেমন ভয় পেয়ে গেছো যখন তোমার পাশের বন্ধু তোমার কাছে জানতে চেয়েছে "মুসলিম মানেই কি টেররিস্ট!" তুমি সেদিনের টিফিন খাওনি সিরাজুল। আর কোন ক্লাস করোনি। চলে এসেছিলে বাড়ি।

আজ এই সকালে তোমার কষ্টের সেই ঝোড়ো শীতালু হাওয়া এসে লাগছে আমার উত্তরপাড়ার চিলেকোঠার জানলায়। আমার দুঃখ হচ্ছে তোমার সাথেও। আসলেই তোমার বন্ধু দীপক, ভারতের অনেক লোকের মতোই তোমার দিকে আঙুল তুলেছে সিরাজুল। ভুলে গেছে দীপক সে এই প্রশ্নটা করে নিজের বন্ধুত্ত্বের অপমান করেছে। টিফিন ভাগ করে, পেয়ারা পেড়ে, নৌকা বাওয়ার যে ছবি তোমাদের দুজনের মধ্যে ছিল দীপক তার মাঝে একটা প্রশ্ন চিহ্ন বসিয়ে দিয়েছে। যে আঙুল দীপক তোমার দিকে তুলেছে সেই আঙুলটা কেউ আমার দিকেও তুলতে পারতো। ইচ্ছে করলে এখোনো পারে। এখনি পারে। কিন্তু জানো তো খুব সহজেই কারো দোষ যদি অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে পারি আমরা, তাহলে কত সুবিধেই না হয়! আমরা এবং তোমরার গল্পে সহজেই উলটো পক্ষকে ভিলেন করে দেবার মজা ওরা নিতে চায়। তুমি তো এখন বড় হয়ে গেছো সিরাজুল। ক্লাস নাইনে পড়ছো। অনেক কিছুই তুমি বোঝো। তুমি ১৯৪৭ জানো, তুমি ১৯৭১ জানো, তুমি ১৯৯২ জানো। তুমি গোধরা জানো, তুমি প্যালেস্তাইন জানো, তুমি হিরোশিমা নাগাসাকি জানো, তুমি বার্লিনের পাঁচিল জানো... তুমি আমেরিকা জানো, রাশিয়া জানো, বিশ্বের তাবড় খেতে পাওয়া আর না পাওয়া দেশের কথা জানো। তুমি এটাও জানো "ধর্ম মানে আফিম"। ভাবসম্প্রসারণে বাংলার স্যার তোমাকে যে পিঠ চাপড়ে দিয়েছিলেন সেটা হয়তো তোমার বন্ধু দীপক লক্ষ্য করেনি। সে যদি তোমার লেখাটা মন দিয়ে শুনতো কিম্বা বোঝার চেষ্টা করতো তাহলে হয়তো এই প্রশ্নটা সে করতে চাইতো না।

কিন্তু এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর আমাকে, তোমাকে আমাদের সবাইকে দিতে হবে সিরাজুল। কেন জানো তো? কারণ বিশ্বটা এখন তারাই সামলাচ্ছে যাদের টাকা বেশি, ক্ষমতা বেশি, অস্ত্র বেশি। যাদের কাছে আছে কিনে নেওয়ার মতো সব কিছু। তারা শুধু যুদ্ধাস্ত্র কিনছে না। তারা কিনছে মানবতাকেও। মানুষকেও। তারা কিনছে মিথ্যেকে। সত্যি গুলো তারা রবার দিয়ে মুছে দিচ্ছে। আর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেইসব মানুষ যাদের কাছে খাবার নেই, শিক্ষা নেই, মাথা গোঁজার ঠাই নেই, কাজ নেই। দেখছো না ওরা লক্ষ্য করছে ওদের বন্দুকের, বোমের আর মিশাইলের নিশানা ঠিক ওই বাচ্চাগুলোর দিকেই। তবুও তো তাদের মধ্যে থেকে কেউ না কেউ প্রতিবাদ করে। কেউ না কেউ এখোনো টাকার কাছে বিক্রি হয়না। কেউ না কেউ গুলি খেয়েও নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে বলে "আমাদের খাবার দাও, আমাদের বই দাও, আমাদের স্কুলে যাবার অধিকার দাও।" মনে পড়ছে সিরাজুল তোমার মালালাকে। যাকে তুমি সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামে বসে নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছো!

সব মুসলমানরাই যদি সন্ত্রাসবাদী হয় তাহলে পৃথিবীর বাকি ইতিহাস গুলোর পাতা থেকে যে অনেক কিছু বাদ দিতে হবে। অনেক অনেক মর্মান্তিক মৃত্যুগুলোকে ধ্বংসগুলোকে উপেক্ষা করতে হবে। অনেক মিথ্যে কথাকে সত্যি বলে মানতে হবে। অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন তাঁর "পরিচিতি ও হিংসা" বইতে খুব মজা করে লিখেছেন, তোমাকে একটু শোনাই? আরো অনেক যখন বড় হবে তখন গোটা বইটা পড়ো সিরাজুল। তিনি তাঁর বইয়ের ভূমিকায় বলছেন, "দুঃখের বিষয় হল এই যে আমাদের পরিচয় নির্বাচন করার স্বাধীনতা নেই-এমন ধারণার ফলে হিংসা বন্ধ করার বহু সদুদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রয়াস ব্যাহত হয় এবং হিংসাকে পরাজিত করার ক্ষমতার তীব্র ক্ষতি করে। মানুষ পরস্পরের সাথে যে নানাভাবে সংযোগ স্থাপন করে সেটা উপেক্ষা করে বিভিন্ন মানুষের মধ্যে সুসম্পর্কের সম্ভাবনা যখন প্রধানত 'সভ্যতার মধ্যে সদ্ভাব', অথবা 'ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে সংলাপ', অথবা 'বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বন্ধুত্ত্বপূর্ণ যোগাযোগ' হিসেবে দেখে দেয় (যেটা ক্রমশই হচ্ছে); শান্তির উদ্দেশ্যে গঠিত প্রকল্পের গোড়াতেই থাকে মানুষের গুরুত্ত্বপূর্ণ সংকোচন।"

কী? ঘাবড়ে গেলে? ভাবছো যেখানে আমার চিঠিতে থাকে শুধু পুলি পিঠের কথা তখন এতো কঠিন পথে এগোচ্ছি কেন আমরা? কারণ দীপকের কথায় তোমার আঘাতটা যতটা না তোমার বুকে বেজেছে তার চেয়েও বেশি কষ্ট দিয়েছে আমাকে। হ্যাঁ...খুব দুঃখ পেয়েছি আমি। কিন্তু খবর কাগজটাকে উলটে রাখার মতো সরিয়ে রাখতে পারছি না তাকে। আসলে ধর্ম আর সংস্কৃতি দিয়ে মানুষকে অনন্য উপায়ে অসংখ্য ভাগে ভাগ করা যায়। এই প্রাচীন ধারণা পৃথিবীতে আজও বলবৎ। সেখান থেকেই হিংসার উৎপত্তি। কিন্তু মানুষের পরিচয়ের যে বহুমাত্রিকতা আছে সেটাই যে ভুলে যাই আমরা। এই যে তোমার মধ্যে খানিকটা 'আমি' আর আমার মধ্যে খানিকটা 'তুমি' নিয়ে সুন্দরবন আর উত্তরাপাড়া করছি, তা কিন্তু আমাদের সমাজের 'পরিচয়ের', 'ধর্মের' 'সংস্কৃতির'- কড়া সীমানাগুলো মানবে না সিরাজুল। তারা শুধু চেষ্টা করবে তোমাকে তোমার মতো, আমাকে আমার মতো গড়ে দিতে। তারা বিশ্বাসই করবে না আমরা একই নৌকায় কাঁকড়া ধরতে যাই। একই গ্লাসে খেজুরের রস পাট কাঠি ডুবিয়ে শোঁ শোঁ করে সাবাড় করি। পান্তা ভাত কাঁচা পেঁয়াজ আর লঙ্কা দিয়ে একই থালায় খেয়ে গাজনের মেলা দেখতে যাই। ওরা বিশ্বাসই করবে না অনেক রাতে বনের দুষ্টু কুঁদো বাঘটা ডেকে উঠলে তোমার, আনন্দী, আর করিম চাচার মতো আমার কলজেটাও ভয়ে ছোট হয়ে যায়। প্যান্টে ছোট বাইরে হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। সবাইকে বোঝাতে পারবো না সিরাজুল আসলে আমরা প্রত্যেকে আমাদের এই যে 'পরিচিতির' চিহ্ন গুলোকে বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছি সে চিহ্ন গুলোকে এত সহজে 'তোমার'-'আমার' বলে আলাদা করা যায় না। ইচ্ছে হলেই আমাদের প্রতিদিনের জীবনযাপনের বেশ কিছু অংশকে একপাশে ঠেলে সরিয়ে বা মুছে বা বাদ দিয়ে দেওয়া যায়না। কোন 'এক'কে স্বীকৃতি দেওয়া বন্ধ করলে অন্য কোন 'এক' ডেকে আনবে নতুন কোন বিপদ।

হাঁ করে তাকিয়ে দেখছো কি? সর্দি তো নাক গড়িয়ে সবে ওঠা গোঁফের রেখার ওপর হরিণ ভাঙা নদীর ঢেউয়ের মতো আছড়ে পড়ছে। নাক ঝাড়ো ভালো করে। যাও খাতা বই নাও। আর তো সময় নেই তোমার, সামনে পরীক্ষার প্রস্তুতি। জোরালো শীত কামড়ে ধরেছে কি আবার নানীকে? করিম চাচা এখোনো কি রাতে বেরোয় কাঁকড়া ধরতে? আর আনন্দী? সে হয়তো স্কুল ছুটির আনন্দে মেতে উঠেছে। তাকে বলো আমি 'পদিপিসির বর্মী বাক্স' কিনেছি তার জন্য। আর তোমার জন্য লাল রঙের হনুমান টুপি। ওকি...আরে...হনুমান টুপি শুনে রাগ করলে? নাকি...এখোনো মনের ওপরে মন খারাপের গুমোট মেঘটা নিয়ে বসে আছো?

তবে শোনো। যখন মনে দুঃখ হবে, কষ্টরা এসে দাঁড় বাইতে চাইবে মনের ছলাৎ ছল ছলাৎ ছল গভীর গহন অন্ধকারে, তখন মনের শক্তি অনেক অনেক বাড়িয়ে নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে তাদের কথা, যারা শত দুঃখেও মাথা নীচু করেনি। যারা এগিয়ে গেছে আলোর দিকে। ভালো থেকো। আজ এই পর্যন্ত। এরপর খুব তাড়াতাড়ি তোমার মন ভালোর একটা চিঠি পেতে চাই সিরাজুল। অনেক লম্বা একটা চিঠি। যে চিঠিতে মন খারাপের বদলে হয়তো থাকবে কুয়াশা আর নলেন গুড়ের গন্ধ। থাকবে আমার একান্ত ভালোবাসা সিরাজুলের শীতের আনন্দের অনেক ছবি।

ইতি
কল্লোল


পুনশ্চঃ একটা কথা বলতে ভুলে গেছি। চাঁদের বুড়ি তোমার জন্য একটা গল্পের বই কিনেছে। বইটার নাম কী? না সেটা বলবো না এখন। তুমি কলকাতায় এলেই হাতে গরম বই পাবে সেটা বলে রাখলাম। কী খুশি তো? ওই দেখো কে যেন আবার দরজায় কড়া নাড়ছে...।


ছবিঃ ত্রিপর্ণা মাইতি

চলচ্চিত্রবিদ্যা বিষয়ে অধ্যাপনা, তথ্যচিত্র নির্মাণ, ফিল্ম ও টেলিভিশন ধারাবাহিকের চিত্রনাট্যরচনা, এবং ফাঁকে ফাঁকে পেলে নিজের ব্লগে নানা স্বাদের লেখালিখি - বিবিধ ধারার ব্যস্ততার মধ্যে চাঁদের বুড়ির সাথে ইচ্ছামতীর প্রথম পায়ে হাঁটার দিনগুলিতে হাত ধরেছিলেন কল্লোল । এখনো সময় পেলে মাঝেমধ্যেই ইচ্ছামতীর জন্য কলম ধরেন হুগলী, উত্তরপাড়া নিবাসী কল্লোল।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা