সময়টা ছিল ১৯৮৬ ।তখন খুবই লোডশেডিং হত ।সন্ধ্যাবেলায় লোডশেডিং হলে তো আর কোন কথাই ছিল না ।একটা মোমবাতি জ্বালিয়ে বারান্দায় সবাই একসঙ্গে দাদুকে ঘেরাও করে বসে গল্প শুনতাম ।একবার দাদু একটা গা-ছমছমে গল্প বলেছিল ।এখন ২০২২ সালে যখন ওই গল্পটার কথা মনে হয় এখনো আমার গায়ে কাঁটা দেয় ।গল্পটা ছিল ইছামতি নামের একটি মেয়ের। ইছামতি ছিল একটা সুন্দর দেখতে মাঝ বয়সী মেয়ে। এই ঘটনাটা ঘটেছিল অনেক বছর আগে মহালয়ার দিনে। সেই দিন ভোর হতেই ইছামতির মা কমলিনী ইচ্ছামতীকে বাগানের শিউলি ফুল কুড়াতে পাঠিয়েছিলেন। ইছামতি কোনদিনই ওদের বাগানটা পছন্দ করত না । তাই বলে এমন না যে ও গাছপালা পছন্দ করতোনা। ও যথেষ্ট পরিমানে পছন্দ করত তবে ওর মনে হতো ওদের বাগানে কোনো একটা রহস্য লুকিয়ে আছে ।ও যখনি বাগানে যেতো তখনই কিছু না কিছু একটা অস্বাভাবিক জিনিস হতো। সেই রকমই সেদিনও একটা অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটেছিল ।শিউলি ফুল কুড়াতে কুড়াতে ওর মনে হলো যে কেউ এসে ওর কানের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে । কিছুক্ষণ পরে ও শুনতে পেল যে কেউ ওকে বলছে “ তুই আমার গাছের ফুল তুলছিস তুই চরম শাস্তি পাবি”।ও এদিক ওদিক তাকালো কিন্তু কাউকে দেখতে পেল না। ও বেশ ভয় পেয়ে গেল। ইছামতি মনে বল এনে তাড়াতাড়ি করে শিউলি ফুল কুড়াতে থাকলো । বেশ কয়েকবারই এরকম অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটলো ।তাও কাউকে দেখা গেল না।ঐদিকে কমলিনী এত দেরী হচ্ছে দেখে খুব চিন্তা করছিলেন। আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পরে উনি নিজেই একবার দেখতে গেলেন।গিয়ে দেখেন যে ইছামতি ওখানে নেই। পুলিশকে খবর দেওয়া হল। ওরা পুরো শহর খোঁজ করলো তবুও ওকে খুঁজে পাওয়া গেল না। ইছামতির বাড়ির লোক অত্যন্ত ভেঙে পড়ল। আজ বহু বছর পরেও ২০২২ সালে ইছামতির খোঁজ পাওয়া যায়নি। কোনো গোয়েন্দা এখনো এই রহস্যের উন্মোচন করতে পারেনি। তবে কি চিরকালের জন্য ইছামতি উধাও হয়ে গেল?
আমার কথাঃ
আমার নাম অঞ্জিকা সাহা। আমি সুশীলা বির্লা গার্লস স্কুলে ক্লাস সিক্সে পড়ি ।আমার প্রিয় গল্প হল 'ভুলে ভরা ভুলিদি'। গল্পটা কে লিখেছিল সেইটা তো ঠিক মনে নেই ।আমার ভূতের গল্প লিখতে খুব ভালো লাগে। আমি সমানভাবে কবিতা লিখতেও পছন্দ করি ।একবার দুই হাজার কুড়ি সালে যখন লকডাউন শুরু হয় তখন পুরো ভারতে একটা গল্প লেখার প্রতিযোগিতাতে তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছিলাম ।আমি আবৃত্তিও শিখি ।আমি প্রিয় বন্ধু হলো প্রাণাসি আর অর্চিশা । আমি নাচতেও খুব ভালোবাসি।
ছবিঃ পিক্সাবে