সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo

গতবছর মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে পুরুলিয়ায় পলাশ দেখতে গিয়েছিলাম মামার গাড়ি চড়ে। সঙ্গে ছিল মামা, মা, দিদিভাই আর রঞ্জিতমামা। রঞ্জিত মামাকে আমরা খুব ভালোবাসি, উনি মামার গাড়ি চালান। সারাদিন অযোধ্যা পাহাড়ে ঘুরেও বেশি পলাশ দেখতে পাইনি। শেষে দিদিভাই বলল, আমরা মনে হচ্ছে আগে চলে এসেছি, আরও কিছুদিন পরে পলাশ ফুটবে।

সন্ধ্যেবেলা ফেরার সময় দেখলাম সারা অযোধ্যা পাহাড় জুড়ে আগুন জ্বলছে। মা বলল, একে বলে দাবানল।

গাড়ি থামিয়ে আমরা অবাক হয়ে দাবানল দেখলাম। সব গাছ পুড়ে যাচ্ছে, হয়ত পশুপাখিরা মরেও যাচ্ছে।

গাড়ি চলতে শুরু করার পর আমরা পেরিয়ে যাচ্ছিলাম শাল-পলাশ-মহুয়ার জঙ্গল। বাইরে ঘুটঘুটে অন্ধকার। হঠাৎ জানালা দিয়ে দূরে একটা বড় গাছের তলায় আমার মনে হল কেউ দাঁড়িয়ে আছে। আমি মাকে তখনই বললাম, মা আমার মনে হচ্ছে ওটা একটা ভূত!

মা সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি থামিয়ে দিল। মামাকে বলল, চল তো দাদা! দেখে আসি!

মা আর মামা টর্চ নিয়ে গাছটার কাছে দেখতে গেল। চারিদিকে টর্চ ফোকাস করেও কিছুই দেখা গেল না। মা আর মামা ফিরে এলো। আমরা আবার গাড়ি স্টার্ট দিলাম। আবার কিছুটা এগিয়ে দেখলাম আরেকটা গাছের তলায় একইরকমভাবে একটা লোক দাঁড়িয়ে আছে।

এইবার মা-ও লোকটাকে দেখতে পেয়েছিল। শুনে সামনের সিট থেকে গাড়ি থামাতে বলল মামা। এইবার আমি, মা আর মামা তিনজনই একসঙ্গে দেখতে গেলাম। আমরা গাছের তলায় টর্চ দিয়ে দেখলাম কিছুই নেই। মামা টর্চ বন্ধ করতেই আবার লোকটার ছায়া দেখা গেলো। মামা আবার টর্চ জ্বালালো, আমরা দেখলাম আবার কিছু নেই। এবার টর্চ বন্ধ করতেই আমরা দেখলাম একটা ছায়ামূর্তি আমাদের দিকে দৌড়ে আসছে! মা আর মামা দৌড়ে আসা লোকটাকে হাত দিয়ে থামাতে গেল, কিন্তু লোকটা যেন আমাদের ভেদ করে চলে গেল! লোকটা ছুটে গেল আমাদের গাড়ির দিকে, আমরাও গাড়ির দিকে দৌড়াতে শুরু করলাম।

শেষে লোকটা কিন্তু আমাদের গাড়ির দিকে সোজা না গিয়ে, দৌড়ে রাস্তা পেরোতে গেল। তখনই দেখলাম, একটা ট্রাক লোকটাকে ধাক্কা মেরে চলে গেল! আমরা চিৎকার করতে করতে গিয়ে দেখলাম যে ওখানে কোন মানুষ পড়ে নেই! এমনকি রক্তও পড়ে নেই!

আমরা তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠে পড়লাম। গাড়িতে তখন দিদিভাই গুড় বাদাম খাচ্ছিল আর ফেসবুক দেখছিল। রঞ্জিত মামা তখনই গাড়ি স্টার্ট দিল। খুব তাড়াতাড়ি গাড়ি চালিয়ে আমরা প্রায় কুড়ি কিলোমিটার যাওয়ার পর কয়েকটা দোকান দেখতে পেলাম।

আমরা নেমে একটা দোকানে বসলাম। মা-দিদিভাইরা কোল্ড ড্রিঙ্কস খাচ্ছিল। আমি চিপ্স নিলাম। দোকানদার আমাকে ভয় পেয়ে হাঁফাতে দেখে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কি হয়েছে?

আমি যা হয়েছে বললাম। দোকানদার শুনে বললেন, ওটা একটা ভূত ছিল। তবে এই ভূত কারোর ক্ষতি করেনা।

অনেক বছর আগে নাকি এরকমই একবার দাবানল লেগেছিল অযোধ্যা পাহাড়ে। সেই রাতে কালবৈশাখী ঝড় ওঠে । লোকটার বাড়ির পাশে বাজ পড়েছিল। লোকটা ভয় পেয়ে গ্রামের দিকে দৌড়ে পালাচ্ছিল, কিন্তু রাস্তা পেরোনোর সময় ট্রাকের ধাক্কা খেয়ে সে মারা যায়। সেদিন নাকি সারারাত বৃষ্টি হয়েছিল, তাতে দাবানল নিভে যায়।

দোকানদার বললেন, আজ ও দেখা দিয়েছে, মানে আজ রাতে আবার ঝড় উঠবে। সারারাত বৃষ্টি হয়ে কাল সকালে দাবানল নিভে যাবে।

কিছুক্ষণ চুপ করে আমরা অবাক হয়ে অযোধ্যা পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে আবার গাড়ি স্টার্ট দিলাম। ফিরে চললাম পুরুলিয়া শহরের দিকে।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা