অলিম্পিকে ভারতের নক্ষত্ররা
যদিও ২০১২ এর লন্ডণ অলিম্পিক্স্ বেশ কিছুদিন আগেই শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু এবারের অলিম্পিক ভারতের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এবার খেলাধূলা নানা বিভাগে আমরা পেয়েছি ছয়টি পদক। চট করে আরেকবার দেখে নেওয়া যাক, কে কোন বিভাগে আমাদের গর্বিত করেছেনঃ
বিজয় কুমার
২৫ মিটার র্যাপিড ফায়ার পিস্তল শ্যুটিং ইভেন্ট
রৌপ্য পদক (ভারতের প্রথম রৌপ্য পদক)
হিমাচল প্রদেশের হামিরপুর জেলার বারসার গ্রামের এক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের এই ছেলে ভারতীয় সেনার ষোড়শ ব্যাটালিয়নের ডোগরা রেজিমেন্ট এর একজন সুবেদার মেজর। তিনি ২০০৭ সালে অর্জুন পুরষ্কার এবং ২০১১-১২ সালের রাজীব গান্ধী খেল রত্ন পুরষ্কার পেয়েছেন।
যোগেশ্বর দত্ত
পুরুষদের ৫০ কেজি ফ্রিস্টাইল কুস্তি
ব্রোঞ্জ পদক
হরিয়ানার সোনিপত জেলার ভঁইসওয়াল কালানের এই ছেলে আট বছর বয়স থেকে কুস্তি লড়তে শুরু করেন। তিনি ২০১১-১২ সালে রাজীব গান্ধী খেল রত্ন পুরষ্কার পেয়েছেন।
সুশীল কুমার
পুরুষদের ৬৬ কেজি ফ্রিস্টাইল কুস্তি
রৌপ্য পদক
দক্ষিণ-পশ্চিম দিল্লির নজফগড়ের কাছের গ্রাম বাপরোলার ছেলে সুশীল কুমার। তাঁর বাবা ছিলেন ডিটিসি- এর বাস চালক। ২০০৫ সালের অর্জুর পুরষ্কারপ্রাপ্ত ভারতীয় রেলের এই অ্যাসিস্ট্যান্ট কমার্সিয়াল ম্যানেজার, ছোটবেলা থেকে যোগেশ্বর দত্তের সঙ্গে এক সাথে দিল্লির ছত্রসালের সতপাল আখাড়াতে কুস্তির অনুশীলন করতেন, আর অলিম্পিকে পদক জেতার স্বপ্ন দেখতেন। ২০১২ সালে দুই বন্ধুর স্বপ্ন এক সাথে পূর্ণ হল।
সাইনা নেহওয়াল
ব্যাডমিন্টন
ব্রোঞ্জ পদক
হরিয়ানার হিসারে জন্ম সাইনার। তিনি বড় হয়েছেন হায়দ্রাবাদে। তার বাবা ডঃ হরবীর সিং এবং মা উষা নেহওয়াল , দুজনেই একদা হরিয়ানার ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। বাবা-মাই তাকে খেলতে অনুপ্রাণিত করেন। ২০০৯-১০ সালে তিনি রাজীব গান্ধী খেল রত্ন পুরষ্কার এবং ২০১২০ সালে পদ্মশ্রী লাভ করেন।
সাইনা প্রথম ভারতীয় যিনি অলিম্পিকে ব্যাডমিন্টনে পদক পেলেন। তিনি প্রথম ভারতীয় যিনি ওয়ার্ল্ড জুনিয়র ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিলেন। প্রথম ভারতীয় হিসাবে তিনি ২০০৯ সালে সুপার সিরিজ টুর্নামেন্ট জেতেন। ২০১০ সালে ব্যাডমিন্টন ওয়ার্ল্ড ফেডারেশনের র্যাঙ্কিং এ তিনি বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন।
এম. সি. মেরি কম
মহিয়ালদের বক্সিং এ ফ্লাইওয়েট (৫১ কেজি) বিভাগ
ব্রোঞ্জ পদক
মণিপুরের চুরাচানপুর জেলার কাঙ্গাথেই এর 'কম' উপজাতির এর ঝুম চাষী পরিবারের এই মেয়ে পাঁচ বার বিশ্ব বক্সিং চ্যাম্পিয়ন, আর এক মাত্র মহিলা বক্সার যিনি ছয়টি ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের প্রতিটিতে পদক জিতেছেন। ২০০৩ সালে অর্জুন পুরষ্কার, ২০০৬ সালে পদ্মশ্রী, ২০০৯ সালে রাজীব গান্ধী খেল রত্ন পুরষ্কার পাওয়া এই মেয়ে AIBA World Women's Ranking Flyweight বিভাগে চার নম্বর স্থানে নির্বাচিত হয়েছেন।
গগন নারাং
১০ মিটার এয়ার রাইফেল ইভেন্ট
ব্রোঞ্জ পদক
হরিয়ানার পানিপথ জেলার সামহাল্কা-এর নারাং পরিবারের ছেলে গগনের জন্ম নয় চেন্নাইতে। তিনি বেড়ে ওঠেন হায়দ্রাবাদে। মাত্র ছয় বছর বয়সে চেন্নাই-এর মারিনা বিচ কার্নিভালে বেলুন ফাটিয়ে তাঁর বন্দুক চালানোর শুরু। ২০১০ সালে পদ্মশ্রী এবং রাজীব গান্ধী খেল রত্ন পুরষ্কার পাওয়া এই শ্যুটার নিয়মিত অনুশীলনের সাথে সাথে গভীর মনঃসংযোগে বিশ্বাসী।
২০১২ সালে আরেকজন ভারতীয় যিনি অলিম্পকের দুনিয়ায় আমাদের গর্বিত করেছেন, তাঁকে বাদ দিয়ে এই লেখা সম্পূর্ণ হোবে না। তিনি হলেন গিরিশা হোসাঙ্গারা নাগারাজেগৌডা। বাঁ পায়ে প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জন্মানো এই খেলোয়াড় লন্ডনে আয়োজিত ২০১২ সালের প্যারালিম্পিক গেম্স্-এ পুরুষদের হাই জাম্প F-42 বিভাগে তিনি রৌপ্য পদক লাভ করেন। স্বাভাবিক (প্রতিবন্ধকতাহীন) প্রতিযোগীদের সাথে সমান তালে লড়ে যেতে একফোঁটাও পিছপা নন গিরিশা।
তথ্য সংকলনঃ
মহাশ্বেতা রায়
কলকাতা
ছবিঃ
দ্য টেলিগ্রাফ পত্রিকা আর ইন্টারনেট
- বিস্তারিত
- লিখেছেন মহাশ্বেতা রায়
- ক্যাটfগরি: এক্কা-দোক্কা