ভেবে দেখো আকাশ তখন নীল খেয়ালে,
আমি তখন যাচ্ছি কোথায় কে বা জানে?
সন্ধ্যামণি পথের ধারে অমনি করে,
ফুটতে তোমায় কে বলেছে মুখ লুকিয়ে?
শিউলি আর কাশ ফুলের ওই কার- সাজিতে,
আগমনীর সুরটি বাজে ভোর বেলাতে।
ইচ্ছে গুলোর রঙীন ফানুস সঙ্গে নিয়ে,
আকাশপ্রদীপ কে জ্বালালো স্বপ্ন দিয়ে?
শরত্ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলিতে,
ছুটতে থাকি ভেসে বেড়াই আলসেমিতে।
এতো সব কাজের কথা মজার খেলায় আসি,
টুকরো টুকরো লেখার ভেলায় ইচ্ছামতীতে ভাসি।
ভাসতে ভাসতে সাত সমুদ্র তেরো নদীর দেশে,
তুমিও কিছু লিখতে পারো রাজপুত্রের বেশে।
সেই লেখার জাল বুনবে চরকা কাটা বুড়ি
ইচ্ছামতী পাল তুলবে হাজার রঙের ঘুড়ি।
শ্রমণ মিত্র
- বিস্তারিত
মৌটুসী
সকালে ঘুম থেকে উঠে মৌটুসি দেখলো আকাশের মুখ ভার। শরতের সেই ঝলমলে সকাল আজ যেন ভ্যানিশ। কালো মেঘে ঢেকে আছে চারপাশ। ছোট্ট মিনিটাও গুটিসুঁটি মেরে পাপোশের ওপর ঘুমোচ্ছে। না হলে এতক্ষণে ম্যাও ম্যাও করে বাড়ি মাথায় তুলতো। স্কুলের টিফিন থেকেও ভাগ দিতে হবে ওকে। সব ঠাম্মার আশকারা। ছোট থেকে এতো মাথায় তুলতে আছে? মাকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না কিন্তু রান্নাঘর থেকে ডিম ভাজার গন্ধ ভেসে আসছে মৌটুসির নাকে। মিনিটাও একবার মাথা তুলে, নাক কুচকে শোঁক শোঁক করে শুঁকে নিল ডিম ভাজার গন্ধ।তারপর গা ঝাড়া দিয়ে চললো সেই দিকে। কিন্তু এতো সবকিছুর মধ্যেও কেন জানি না হাত-পা ছড়িয়ে কাঁদতে ইচ্ছে করলো মৌটুসির।
আজ স্কুল ছুটি। কথা ছিলো ফুল ফুল লাল ফ্রকটার সাথে ম্যাচ করা লাল নেলপলিশ কিনতে যাবে। ঠাম্মার দেওয়া ফ্রকটা তার খুব পছন্দের। সবে তো একটা জামা হয়েছে । আর ওবাড়ির টুবলু, মামন, বুবাইয়ের ছয়-সাতটা করে হয়ে গেলো। যদিও এখনো বড়মামা, ফুলপিসি, রাঙাকাকু...গুনতে বসে মৌটুসি। পঞ্চমী, ষষ্ঠী, সপ্তমী...।
মা তাড়া দেয়। এখনো উঠলো না মেয়েটা।
মা স্নান করে অফিসে চলে যান। মৌটুসি ব্রাশ করে, পাউরুটি আর ডিম ভাজা খায়। টিভি খুলে দেয়। 'গলি গলি সিম সিম' দেখে। তারমধ্যে জোরে বৃষ্টি নামে। বাজ পড়ার শব্দে ভয় পায় মৌটুসি। মিনিটাও খাটের তলায় ঢোকে। বাড়িতে এখন কেউ নেই। সে আর মিনি ছাড়া। ঠাম্মা গেছে জেঠূর বাড়ি। আর বাবা? সেতো অনেক দেরি আছে আসার। গতবারের পুজোয় বাবা এসেছিলো সপ্তমীর দিন সকালে, ঠিক যখন কলা বউকে স্নান করাতে নিয়ে যাচ্ছিল হরিশকাকা। অনেক দূরের চাকরী বাবার, পাহাড়ের ওপরে। যেখানে বরফ জমে থাকে সারা মাস।বাবা নাকি অনেক যুদ্ধ করেছে। মা গল্প করে সেসব। যুদ্ধের গল্প শুনতে ভালো লাগে না মৌটুসির। তার থেকে 'টম এন্ড জেরি' দেখে।
আর তো কয়েক দিন পরেই স্কুল ছুটি। তারপরেই হুড়মুড় করে এসে পড়বে পুজো। কি আনন্দ যে হবে। জানলা খুলে দেয় মৌটুসি । বৃষ্টি ধরে এসেছে। পাশের বাড়ির হাবুদের শিউলি গাছটা জলে ভিজে আরো যেন চনমনে হয়ে উঠেছে। প্রাণ ভরে শিউলি ফুলের গন্ধ নেয় মৌটুসি। হঠাত্ দেখে রাস্তার পাশে নর্দমার ধারে তারই মতো একটা ছোট্ট মেয়ে নোংরা ছেঁড়া ভিজে একটা জামা পরে দাঁড়িয়ে কাঁদছে। শুনশান রাস্তায় কাউকে দেখাও যাচ্ছে না। মৌটুসি মেয়েটাকে ডাকে। কিন্তু মেয়েটা শুনতে পায় না। মৌটুসি দরজা খুলে বেরোয়। পেছন পেছন পা টিপে টিপে মিনিও আসে। খুব বকে দেয় মিনিকে। একে রাস্তায় জল, তার ওপর খালি পা...সর্দি হলে? বকা খেয়ে মিনি ঘরে চলে যায়। মৌটুসি এবার মেয়েটার কাছে যায়। একি কাঁদছিস কেন তুই ? কি হয়েছে তোর? মেয়েটা কোনো জবাব দেয় না। শুধু কাঁদে। অনেক পরে মৌটুসি বুঝতে পারে, মেয়েটা কথা বলতে পারে না, শুনতেও পায় না। মেয়েটাকে বাড়ি নিয়ে আসে। ফ্রিজ থেকে মিষ্টি বার করে খেতে দেয়। মিনি শুধু বিরক্ত হয় ম্যাও ম্যাও করে। লোকজন তার পছন্দ হয় না। কিন্তু মৌটুসি তার নতুন বন্ধুকে খুব যত্ন করে খাওয়ায়। তারপর ভাবতে বসে কি করবে সে। মাকে ফোন করে, পায় না। মোবাইল সুইচড অফ। জেঠূর বাড়ি ফোন বেজে যায়। এবার তাহলে? হঠাত্ তার মনে পড়ে কয়েকদিন আগে স্কুলে এসে পুলিশকাকুরা একটা নাম্বার দিয়ে গেছে সবাইকে। বার বার বলেছে মনে রাখতে। কোনো বিপদে পড়লেই সেখানে ফোন করতে।
স্কুলের ব্যাগ খুলে ডায়রী বের করে মৌটুসি। পেয়ে যায় নাম্বারটা। চাইল্ড হেল্প লাইন থেকে কেউ একজন ফোন ধরে। সব কথা গুছিয়ে বলে মৌটুসি । একটা হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে সে তার বাড়িতে এনেছে।
বেলা বাড়তে থাকে। খেলায় মেতে ওঠে দুজন।স্নান করে।কিন্তু এবার কি পড়বে বন্ধু? মৌটুসি দেখে লাল ফুল ফুল ফ্রকটার দিকে মেয়েটা তাকিয়ে আছে। একবার ভাবলো সরিয়ে রাখবে ফ্রকটা। পুরোনো একটা জামা পরতে দেবে। কিন্তু ছি ছি তা কি করে হয়? সামনে তো পুজো। মেয়েটার কি নতুন জামা হয়েছে? আর কোনো কথা ভাবে না মৌটুসি। ঠাম্মার দেওয়া নতুন ফ্রকটা দিয়ে দেয় তার নতুন বন্ধুকে। নতুন ফ্রক পরে মেয়েটা সারা ঘর নেচে নেচে বেড়ায়। ভারী আনন্দ হয় মৌটুসির।
সন্ধ্যের পর বাড়ি ফিরে মা দেখেন পুলিশে পুলিশ। টেলিভিশন চ্যানেলের ক্যামেরাম্যানরা ছোটাছুটি করছে। আর মৌটুসি বসে আছে মিনিকে কোলে নিয়ে নতুন বন্ধু্র সঙ্গে। কিছুক্ষণ আগে সে একটা কান্ড করে ফেলেছে। যে অবন্তীকে তার বাবা-মা সাতদিন ধরে খুঁজে পাচ্ছিলো না... মৌটুসি তাকে খুঁজে ফেলেছে।
অনেক রাতে সবাই বাড়ি ফিরে যাবার পর মৌটুসির মনকেমন করতে লাগলো নতুন বন্ধু আর সেই ফুল ফুল লাল ফ্রকটার জন্য। হঠাত্ ফোন বেজে উঠলো ক্রিং ক্রিং ক্রিং। মৌটুসি অন্য দিনের মতো ছুটে ফোন ধরতে গেল না। মিনিকে সে ঘুম পাড়িয়ে দিল। অনেকক্ষণ ফোনে কথা বলার পর মা এলো। মৌটুসিকে দু-গালে চুমু খেয়ে অনেক আদর করলো। তারপর বললো, বাবা এবার মহালয়াতেই বাড়ি চলে আসবে। পাহাড়ে আর যুদ্ধ করতে যাবে না। এখন থেকে সবাই মিলে একসাথে থাকবে। মন খারাপটা হুস করে কোথায় যে উড়ে গেল বুঝতেও পারলো না মৌটুসি। শুধু ওপারে টেমিদের পুকুর থেকে কোলা ব্যাঙটা ডেকে উঠলো ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ। আর মিনি কোলের মধ্যে শুয়ে চোখ বুঁজে আনন্দে গড় গড় করতে করতে ল্যাজ নাড়তে থাকলো।
কল্লোল লাহিড়ী
- বিস্তারিত
- ক্যাটfগরি: গল্প-স্বল্প
চ্যাপলিনের গান
পায়ের চেয়ে লম্বা জুতো
হাতে ছড়ির মুন্ডু বাঁকা
বড্ড ঢোলা পাতলুনটি তার,
পকেটে নেই কিস্যু টাকা।
টলটলে সেই চোখের ভেতর
দুখ্যু হাসি যায় খেলে
প্রজাপতি গোঁপের ফাঁকে
মস্ত মানুষ যায় মিলে।
তোমার আমার মনের কথা,
আর যা আছে মগজে
সাদা কালো ছবি দিয়ে
প্রকাশ করেন সহজে।
ভবঘুরে দেখতে হলেও
মন বড় তার সরল সাদা
অন্ধ মেয়ের ফুলের তোড়ায়
ভালোবাসায় পড়লো বাঁধা।
আর এক ছবি 'মর্ডান টাইমস'
কারখানাতে কাজ করে
সকাল বিকেল ইস্ক্রুগুলো
প্যাঁচ কষে সব ঠিক করে
নিজের মাথার প্যাঁচখানা তার
কখন ঢিলে হয়ে গেল
কারখানাতে আগুন দিয়ে
কয়েদখানাতেই গেল।
'কিড' ছবিতে ছোট্ট ছেলের
গভীর স্নেহে ধরেন হাত
দুষ্টু যত লোকগুলোকে
বুদ্ধি-জোরে করেন মাত।
এসব দেখে রেগেমেগে,
সত্যিকারের দুষ্টুলোক
নিন্দে করেন 'দেশদ্রোহী,
দেশের বাহির করা হোক'।
ফিরে গেলেন সেই দেশেতে
জন্মেছিলেন যেই খানে
ছবি করা বন্ধ করেন
যন্ত্রনায়, অভিমানে।
ভক্ত যত জগত জোড়া
হাজির হোলো তারপাশে
তীব্র প্রতিবাদের জোরে
মত পালটায় অবশেষে।
তিনি বলেন,'এবার তবে,
ছবি হবে অন্যতর
দেখবো আমি শয়তানেরা
ভালোর চেয়ে হয় কি বড়ো?'
'মঁসিয়ে ভের্দু' ' লাইমলাইট',
ফিরে এলেন স্বমহিমায়
বিশ্বজগত প্রনাম ঠোকে
চিত্র নির্দেশকের পায়ে।
অন্যরকম গল্প দিয়ে,
এবার তবে করবো শেষ-
একটি মানুষ দুঃখী বড়ো
মুখটি তাহার মলিন বেশ
ডাক্তারকে বলেন এসে,
'আমার কেন পায়না হাসি?
মনে কেন আনন্দ নেই?
এই পৃথিবী শুকনো, বাসি।'
ডাক্তারতো চিন্তা করেন,
বলেন অনেক হাসির কথা
তবুও যে তার পায়না হাসি
মনে কি তার এতোই ব্যাথা।
অনেক ভেবে পথ বাতলান,
'দেখুন ছবি চ্যাপলিনের
হাসি পাবেই, দুঃখ যাবেই
এমনি মজা সব সিনের।
মন খারাপের সেরা দাওয়াই
আপনাকে এই যা দিলাম।'
লোকটি বলে করুণ হেসে,
'চ্যাপলিন আমারই নাম।'
শঙ্খ
সুমন চট্টোপাধ্যায়ের ফেলুদার গান এর সুরে বাঁধা।
- বিস্তারিত
- ক্যাটfগরি: নিয়মিত
তোমার কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থেকে চোখ ফিরিয়ে একবার জানলা দিয়ে বাইরে দেখো ।কি দেখছ? দেখবে বাইরে নীল আকাশ, সোনালি রোদ, সাদা মেঘ, মাঝে মাঝে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি; মাঠ , ময়দান, গাছপালা সব সবুজে সবুজ ; তোমার ব্যালকনির টবের পাতাবাহার গাছটা পর্যন্ত ঝকঝক করছে। ছুটির দিনে যদি বেড়াতে যাও শহরের বাইরে, দেখতে পাবে খেতে ফসল বেড়ে উঠছে। আর কিছুদিন পরেই চাষীভাইদের ঘরে উঠবে সেই সবুজ - সোনালি ফসল। এই হল শরত্কাল। ,উত্সবের সময়। দুর্গাপুজো, ঈদ, কালীপুজো, দেওয়ালি, দসেরা, নবরাত্রি - আর কিছুদিনের মধ্যেই শুরু হয়ে যাবে নানারকমের উত্সবের পালা ।আর এই আনন্দের দিনে যদি পড়তে পাওয়া যায় একটা আনকোরা নতুন ওয়েব ম্যাগাজিন, তাহলে ভাল হয় না?- সেইজন্যই এল ইচ্ছামতী ।ছোটদের জন্য বাংলা ওয়েব ম্যাগাজিন। অবশ্য শুধু ছোটরা নয়, যারা দেখতে বড়, কিন্তু মনে মনে ছোট, তাদের জন্যেও এই ওয়েব ম্যাগাজিন।
ইচ্ছামতীর এই প্রথম সংখ্যা আয়তনে ছোট। একে কিন্তু বড় করে তুলতে হবে। ইচ্ছামতী খালি পড়লে চলবেনা। তোমার লেখা গল্প, আঁকা ছবি দিয়ে ভরিয়ে তুলতে হবে ইচ্ছামতীর পাতাগুলো। তবেই না তোমার সাথে সাথে তোমার মনের মত করে বেড়ে উঠবে ইচ্ছামতী। কি করে ইচ্ছামতীকে সাজিয়ে তুলবে তা জানতে হলে চোখ রাখো লেখালিখি বিভাগে ।
এই সংখ্যায় আছে একটা খেয়াল -খুশীর কবিতা; আছে একটা ছোট্ট মেয়ের উপস্থিত বুদ্ধির গল্প ; আছে হারিয়ে যাওয়া দিনের গল্প। আছে আমাদের প্রিয় এক কবির ছোটবেলার কথা ; যিনি আমাদের মনের সব ভাবনা আগে থেকেই বুঝে যান, আছে সেই প্রিয় লেখিকা লীলা মজুমদার এর কথাও । টিভিতে নিশ্চয় দেখ, বা বড়রা আলোচনা করেন - কোথাও বন্যা হচ্ছে, কোথাও বা ফাটছে ভয়ানক বোমা, মানুষ আহত হচ্ছে । ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের কত কষ্ট হচ্ছে। এইরকমই অন্য রকম জীবন যার, সেই ছোট্ট ছেলে তাহানের খোঁজ পাবে এখানে; কিন্তু এইসব দুঃখ কষ্ট কে তো পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতেই হবে। তাই তো যিনি আমাদের শিখিয়েছিলেন সব দুঃখের মাঝখানে হাসতে, আছে সেই চার্লি চ্যাপলিনের কথাও;
তোমাদের কেমন লাগল ইচ্ছামতী জানিও কিন্তু। আমার ঝাঁপি খুলে বসে থাকব তোমাদের চিঠিপত্রের আশায়। 'চিঠি পাঠাও' বিভাগে পাবে আমার ই-মেল ঠিকানা।
এই ওয়েবসাইট তৈরি হয়েছে Unicode font ব্যবহার করে। এই ওয়েবসাইট সবথেকে ভাল দেখা যাবে Firefox Browser এ। Firefox Browser কি করে ডাউনলোড করবে, তার বিবরণ ডানদিকের কলামে দেওয়া আছে।Internet Explorer 6 & 7 browser দুটি একটি অক্ষর ঠিক করে দেখাতে পারছে না। তাই আমরা "উত্সব", "হঠাত্" এই সব শব্দে 'খন্ড ত' এর বদলে 'ত -এ হসন্ত' ব্যবহার করেছি। না হলে দেখতে খারাপ লাগছে। যাঁরা সব খুব গম্ভীর চশমাআঁটা পড়ুয়া, ভুল বানান দেখলেই রেগে যান, তাঁরা নিশ্চয় আমাদের ওপর এই কারণে রেগে যাবেন না।
ভাল থেকো সবাই।
চাঁদের বুড়ি
ভাবছ চাঁদের বুড়ি কে? ইচ্ছামতী তো ছোট, তাই তার দেখা শোনা করে চাঁদের বুড়ি । ইচ্ছামতীর সম্বন্ধে তোমার সব মতামত, চিঠি, লেখা,ছবি পাঠিয়ে দাও চাঁদের বুড়ির কাছে।
- বিস্তারিত
- ক্যাটfগরি: নিয়মিত
তাহান
তোমরা এর মধ্যে কেউ কি নতুন ছবি (ফিল্ম) দেখেছো? হলে গিয়ে কিম্বা বাড়িতে বসে ডিভিডিতে? আমি কিছু দিন আগে একটা হিন্দি ছবি দেখলাম তাহান (Tahaan)। পরিচালক সন্তোষ শিবন। আমার ছবিটা দেখে বেশ ভালো লাগলো।
তাহান কাশ্মীরে থাকে। তার বাড়িতে আছে মা, দাদু আর দিদি জোয়া। এছাড়াও আছে তাহানের সব সময়ের সঙ্গী বীরবল নামের এক গাধা । যাকে তাহান কখোনো চোখ ছাড়া করে না। সবাই অপেক্ষা করে থাকে তাহানের বাবা কবে বাড়ি ফিরবে। তাঁর খবর অনেক দিন পাওয়া যায় না। মা মিলিটারি ব্যারাকে...মর্গে...খোঁজ নিয়ে ফেরেন। বাবকে তবু পাওয়া যায় না। তাহান বীরবলকে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু একদিন দাদুও মারা যায়। দেনার দায়ে বীরবলকে পর্যন্ত বিক্রি করে দেয় মা। সঙ্গীহারা হয় তাহান। কিভাবে বীরবলকে উদ্ধার করবে সে? আদৌ কি করতে পারবে তাহান? এক টানটান উত্তেজনার মধ্যে বসে থাকি আমরা। না, যদি ভেবে থাকো সব গল্পটা আমি বলে দেবো...তাহলে ভুল। ছবিটা মিস কোরো না, দেখে নাও তাড়াতাড়ি।
আমি কোনো দিন কাশ্মীরে যাই নি। কাশ্মীরকে চিনেছি বই পড়ে...ছবি দেখে...টেলিভিশনের খবরে। এই প্রথম কাশ্মীরকে চিনলাম তাহানের চোখ দিয়ে। যে কাশ্মীরকে সহজে দেখা যায় না কোথাও। এ কোন কাশ্মীরকে দেখলাম আমরা? কি দেখে তাহান গোটা ছবিটা জুড়ে? তাহান দেখে গ্রামের পর গ্রাম মানুষ নেই। যেখানে মানুষ আছে তারা বেশিরভাগই মহিলা, বৃদ্ধ, আর শিশুরা। রাত বিরেতে মিলিটারি বুটের ভারী আওয়াজ। গুলির শব্দ। তাহানকে প্রশ্ন করা হয় এই নদী, জল, পাহাড় কে সৃষ্টি করলো? তাহান উত্তর দিতে পারে না । সবার কাছে জিজ্ঞেস করে। কেউ কি বলতে পারে?
ছবিটা দেখে যখন হল থেকে বেরিয়ে আসছি বাইরে তখন ঝিরঝিরে বৃষ্টি পড়ছে। তাহানের পোষ্টার ভিজে জবজবে। মন কেমন করলো তাহানের জন্য। তাহানের মতো আরও সবার জন্য, যারা বড় হয়ে উঠছে অনেক কষ্ট করে। অনেক কিছুকে মেনে নিয়ে...যা আমরা কল্পনাও করতে পারি না। যে গোটা কয়েক লোক ছবিটা দেখছিলো তারা সবাই বলাবলি করতে থাকলো তাহানের ভূমিকায় পূরব ভান্ডারীর অপরূপ অভিনয়ের কথা। ধন্যবাদ সন্তোষ শিবন, একটা ভালো ছবি আমাদের উপহার দেওয়ার জন্য।
ছবিপোকা
[ ফটো গুলি নেওয়া হয়েছে www.tahaanthefilm.com এর ডাউনলোড বিভাগ থেকে ]
তুমি কি এর মধ্যে কোন নতুন ছবি দেখেছ ? তোমার কেমন লেগেছে সেই ছবিটা ? আমাদের লিখে জানাও । তাহান দেখা হলে কেমন লাগল জানাতে ভুলনা কিন্তু।
- বিস্তারিত