সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
চাঁদের বুড়ির চরকা চিঠি ১৪২২/১৮ - আজ ২১শে ফেব্রুয়ারি

ফিরে এসেছে আরেকটা ২১শে ফেব্রুয়ারি। আরেকটা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এ বছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ইউনেস্কোর থীম হল 'Quality education, language(s) of instruction and learning outcomes.' - যেটাকে বাংলায় বলতে গেলে বলতে হয় 'উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা, শিক্ষাদানের ভাষা (গুলি) এবং শিক্ষার ফলাফল'।

এ কথা স্বীকার করতে বাধা নেই যে , কোন একটা জিনিস বুঝতে গেলে, সেটা নিজের জানা ভাষায় বুঝতে যত সুবিধা হয়, ততটা অন্য কোন ভাষায় বোঝালে নাও হতে পারে। এবার বিষয়টা হল তুমি কতগুলি ভাষাতে দক্ষ; কেউ কেউ নিজের মাতৃভাষা ছাড়াও ইংরেজি এবং আরো একটা বা দুটো ভাষাতে দক্ষ হয়। কেউ কেউ আবার মাতৃভাষাতে যতটা দক্ষ হয়, অন্যান্য ভাষাতে হয় না। এই সমস্যা সবথেকে বেশি হয় সেইসব ছেলে মেয়েদের বা বয়স্ক মানুষদের, যাঁরা ছোটবেলা থেকে স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পান নি, অথবা এমন স্কুলে গেছেন যেখানে দুই তিন রকমের ভাষা শেখানো হয়নি। কিন্তু তাই বলে কি তাঁদের পড়াশোনা, জ্ঞান অর্জনের পথে শুধু মাত্র একটা বিশেষ ভাষা না জানাটা বাধা হয়ে দাঁড়াবে?

সেইরকম কিছু যাতে না হয়, সেই কারণেই ইদানীং কালে মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের বিষয়ে ইউনেস্কো বার বার জোর দিচ্ছে। কারণ এটা প্রমাণিত যে অন্যান্য 'প্রয়োজনীয়' ভাষার সাথে সাথে, মাতৃভাষায় পড়াশোনা বা জ্ঞান লাভ করলে সেটা একজন মানুষের মনে থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তাছাড়াও, প্রতিটা জনজাতির নিজস্ব ভাষায় রচিত পুরাণ এবং লোককথার মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে বহুদিনের অর্জিত জ্ঞানের ভান্ডার। লোকমুখে অথবা লিখিত অক্ষরে সেইসব জ্ঞান এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মে ছড়িয়ে গেছে। সেইসব সঞ্চিত জ্ঞান ভান্ডার অন্যদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার জন্য মাতৃভাষায় দখল থাকা অতি জরুরি।

যতদিন না কোন দেশের প্রতিটি মানুষ - শিশু হোক বা বয়স্ক, পড়াশোনা করতে শিখবে, জ্ঞান অর্জন করবে, নিজেদের বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ করতে শিখবে, ততদিন সেই দেশকে সম্পূর্ণভাবে উন্নত দেশ কখনই বলা যাবে না।

আজকের দিনে, যখন সহজলভ্য ইন্টারনেট পরিষেবার দৌলতে , সারা দুনিয়ার সবরকমের খবর আমাদের হাতের মুঠোয়, তখন আমাদের উচিত আরো বেশি বেশি করে এই প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে নিজের ভাষার প্রসার করা। আমাদের দেশের গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে থাকা মানুষদের সাথে তথ্য এবং জ্ঞান বিনিময় করার হাতিয়ার হয়ে উঠুক ইন্টারনেট। সকলে পাক সমান শিক্ষার সুযোগ ও জ্ঞানের খোঁজ, বেঁচে থাক আমাদের মাতৃভাষা।

ইচ্ছামতীর যাঁরা বয়সে বড় পাঠক, তাঁদের প্রত্যেকের কাছে চাঁদের বুড়ির তরফ থেকে অনুরোধ রইল, আপনি যদি লেখালিখি করতে ভালবাসেন, যদি ছোট-বড় সাথে ভাগ করে নিতে চান আপনার পছন্দের বিষয় এবং ভাবনা, তাহলে সরাসরি যোগাযোগ করুন আমার সাথে, এই ইমেইল ঠিকানাটি spambots থেকে রক্ষা করা হচ্ছে। এটি দেখতে হলে আপনার জাভা স্ক্রিপ্ট সক্রিয় থাকতে হবে। - এই ইমেল আইডিতে। আমরা চাইছি আমাদের সাথে হাত মিলিয়ে ইচ্ছামতীকে সাজিয়ে তুলতে সাহায্য করুন আরো অনেক বেশি সংখ্যক তথ্যভিত্তিক রচনা লেখক এবং অনুবাদকেরা - যাতে আমরা দেশ বিদেশের যত ভাল খবর, যত ভাল তথ্য আরো বেশি বেশি করে ভাগ করে নিতে পারি সব্বার সাথে। আর যাদের জন্য ইচ্ছামতী, সেইসব বন্ধুরা যদি আমাদের সাথে এসে হাত মেলায় তাহলে তো আমাদের আনন্দের শেষ থাকবে না।

ভাল জিনিষ যত বেশি ভাগ করে নেওয়া যায়, তত বাড়ে, তাই না?

চাঁদের বুড়ি

(কোলাজের ছবি বিভিন্ন ফ্রী ইমেজ এবং ইউনেস্কোর ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত)

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা