সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
আরেক আলাদীনের গল্প

অনেক অনেক দিন আগের কথা, এক দল জলদস্যু একটা বিশাল জাহাজে চেপে সমুদ্রে ঘুরে বেড়াত। জলদস্যুদের সর্দারের একটা ছোট্ট ছেলে ছিল, তার নাম ছিল আলাদীন। আলাদীন মোটেই লোকের জিনিস ছিনিয়ে নেওয়া পছন্দ করত না। সে সবার থেকে আলাদা ছিল। সব জলদস্যুদের মতন, তার বাবারও একটা টিয়া পাখি ছিল, যে তার মালিকের থেকে আলাদীনের কথা বেশি শুনত। এই কারণে সেও জলদস্যুবৃত্তি পছন্দ করত না। একদিন, টিয়াটা উড়ে এসে আলাদীনের টেবিলের উপর একটা জিনিস রেখে বলল, "দেখো, কী এনেছি।" আলদীন দেখল, সেটা একটা হুইসেল। সে সেটা বাজানোর আগে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখতে লাগলো।

আলাদীন হুইসেলটার উপর জমে থাকা ধুলো মুছতে সেটা তার জামাতে ঘষতেই সেটার মুখ থেকে বেরিয়ে এলো একটা জিনি! বেরিয়েই সে বলল, "ধন্যবাদ হুজুর।" আলাদীন প্রশ্ন করল, "কে তুমি? কেনই বা আমায় ধন্যবাদ দিচ্ছ?" জিনি বলল, "আপনার নামটা আমার আগের হুজুরের নামে। আসলে আমি জাদু প্রদীপের জিনি। প্রদীপটা ভেঙে যাওয়ার পর আমি এই হুইসেলটায় আশ্রয় নিয়েছিলাম। অনেকদিন পর আমাকে মুক্ত করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাই হুজুর। বলুন, আপনি কী চান। আমি আপনার তিনটে ইচ্ছে পূরণ করব।"

আলাদীন তো অবাক! সে বলল, "আচ্ছা দাঁড়াও, একটু ভেবে নিই।" তারপর সে বলল, "আচ্ছা, তুমি আমায় এমন একটা খাবার খাওয়াও যা কেউ আগে খায়নি।" জিনি তখন একটু ভেবে বলল, "আচ্ছা আপনি এটা খান।" বলেই কোথা থেকে একটা ধোঁয়া ওঠা পাত্র এনে দিল। তাতে লম্বা লম্বা কী যেন রয়েছে। আলাদীন ভাবল, "এটা কী দিয়ে খাব? হাত দিয়ে, না চামচ দিয়ে?" জিনি তার মনের কথা বুঝতে পেরে বলল, "হুজুর, এটা চামচ দিয়ে খান, ভালো লাগবে।" আলাদীন চামচ দিয়ে একটু খেয়েই বলে উঠল, "এই অসাধারণ খাবারটার নাম কী?" উত্তর এলো, "নুডুলস" সেই থেকেই পৃথিবীতে নুডুলস খাওয়া শুরু হল।

তারপর আলাদীন বলল, "এবার দ্বিতীয় ইচ্ছা।" জিনি বলল, "দাঁড়ান হুজুর, একটু দাঁড়ান। আমি অনেকদিন পর মুক্ত হয়েছি, আশপাশটা একটু ঘুরে দেখতে চাই।" এই বলেই সে সাঁই করে উড়ে গিয়ে বসল জাহাজের মাস্তুলের মাথায়। কিছুক্ষণ এদিক-ওদিক দেখে আবার নেমে আসার পর জিনি বলল, "এবার আপনার দ্বিতীয় ইচ্ছা বলুন।" আলাদীন বলল, "আমায় এমন কিছু দাও যা আমি ওড়াতে পারব। তুমি তো আর সবসময় আমার সাথে থাকবে না! আর টিয়াও যতই ভালো হোক, আমি ওর গলায় দড়ি বেঁধে ওড়াতে গেলেই ও রেগে যায়।" এতকিছু শুনে জিনি ওকে একটা ঘুড়ি এনে দিল আর আলাদীনকে শিখিয়েও দিল ঘুড়ি ওড়ানোর কায়দা। আলাদীনের আনন্দ দেখে কে! সে এবার বলল, "এবার আমার তৃতীয় ইচ্ছে পূরণ কর। আমি চাই আমার বাবা ও তার দলের সকলে জলদস্যুবৃত্তি ছেড়ে দিক। ওরা যখন সমুদ্রেই থাকতে চায়, কোন দ্বীপে থাকাই ভালো!" জিনি খুব খুশি হয়ে বলল, "আপনার হৃদয় খুব বড় হুজুর! এই নিন।" এই বলে সে আলাদীনকে একটা পেন্সিল দিল। তাকে জিনি এও বলল যে ওটা কোন সাধারণ পেন্সিল নয়, জাদু-পেন্সিল। ওটা দিয়ে যাই আঁকো, সত্যি হয়ে যাবে! আলাদীন তখন বুদ্ধি করে হাওয়ায় একটা সুন্দর দ্বীপ আঁকলো। তাতে সে দিল একটা বিশাল, মিষ্টি জলের জলপ্রপাত, ছোট ছোট বাড়ি আর সুন্দর বাগান। তারপর পেন্সিল সরাতেই দেখল একটু দূরে ভেসে আছে তার স্বপ্নের দ্বীপ। সে বুদ্ধি করে পেন্সিলের পিছনের রাবারটা দিয়ে ঝটাপট মুছে ফেলল তাদের জাহাজ। দেখা গেলো সবাই দ্বীপে বসে আছে। আলাদীনের কানের কাছে ফিসফিস করে জিনি বলল, "আমি সবার পুরনো স্মৃতি মুছে দিয়েছি। এদের সবার কাছে এই দ্বীপই এদের আদি বাসস্থান, আপনার বাবা এই দ্বীপের রাজা, আর আপনি সুযোগ্য যুবরাজ। এবার আমায় যেতে দিন হুজুর।" আলাদীন দেখল, জিনি উড়তে উড়তে চলে গেলো দূরে, খুব দূরে, যেন দিগন্তের ওপারে।

 

গল্প লিখেছে আর ছবি এঁকেছেঃ
প্রবাহনীল দাস
ষষ্ঠ শ্রেণি
একমি একাডেমি, কালনা, পূর্ব বর্ধমান

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা