পাঠশালার ছবি
লালপাতা আর নাককাটা গাছ দিয়ে
পাঠশালাটার তিন দিক হল ঘেরা,
বর্ষার জল স্যাত-স্যতে হওয়া মাটি -
খুঁড়ে ফেলি সব ছোট ছোট বালকেরা
আনকোরা হাতে হরগৌরির গাছ
মাটিতে বসাই বেড়াটার কাছে কাছে,
নামতার ফাঁকে চোখ আছে সকলেরই
গরু-টরু এসে খেয়ে যায় গাছ পাছে।
আলো হাওয়া মেখে হরগৌরির গাছ
ঢাকা পড়ে গেল রঙ মাখা ফুলে ফুলে,
তারি লোভে কত প্রজাপতি দল বেঁধে
ভিড় করে এলো আমাদের স্কুলে।
মনে হয় যেন এই সেদিনের কথা
এখনো ফুলের গন্ধটা পাই নাকে,
ফেলে আসা সেই পাঠশালাটার ছবি
খুঁজে পাই আমি হাজারো কাজের ফাঁকে।
- বিস্তারিত
- লিখেছেন তরুণ কুমার সরখেল
- ক্যাটfগরি: ছড়া-কবিতা
ধোপা আর নাপিত
বলে ধোপায়,‘নাপিত হায়!
আরে,বড় নোংরা তুই,
দাড়ি কামাস,চুল ছাঁটাস,
মন কয় তোরে না ছুঁই !’
‘ময়লা জলে,সাবান গুলে,
তুই চুল দাড়ি ঘাঁটিস,
লোক ঠকিয়ে,মুখ বকিয়ে,
খাবার ফন্দি আঁটিস !’
‘রঙ চং এঁটে,দোকান পাটে,
লিখে রাখিস,সেলুন,
নামের ঘটায়,তকমা আঁটায়,
বাকী ফুটুস বেলুন !’
‘কোথাও দেখি,নাম তার সে কি--
মেনস পার্লার!
সে নাপিতখানা,সবার তা জানা,
আসল হাল তার !’
‘কি দিস ছাঁট!কি করিস কাট?
কি করিস বাজিমাত?
ইটে বসাস,লোক হাসাস--
কি ইতালিয়ান ছাঁট?’
‘তুই কেন বল,করিস নকল?
দিস উত্তম কাট!
শারুখ কাট?দিয়ে বাটি ছাট,
নিজেকে ভাবিস স্মার্ট?’
‘কি তোর মূল্য,কিসের তুল্য!
সমাজে কি তার দাম?
অতি সামান্য,সব অমান্য,
করে তোর বদনাম।’
নাপিত বলে,‘কি হবে জ্বলে?
তুই কি করিস বল?
অন্যকে বলিস,এ কেমন নালিশ!
এতে কি পাবি ফল?’
‘কাপড় সে এতো,ময়লা যে কত !
জড়ো করিস এনে,
অশুদ্ধ জল,ছিটে লাগা মল,
নোংরা ডিপো জেনে !’
‘তোদেরও কাছে,দোকান আছে,
বাব্বাঃ,নাম তার লন্ড্রি!
এও ফুঁস ঠাঁই,থেকেও তো নাই!
শুধু কামাবার ফন্দি !’
‘সব কিছু ফাঁকা,উপরেতে ঢাকা,
আনতে উটকো ফিলিং,
ধোপার দোকান,শুধু বাড়াতে মান,
সে হোল ড্রাই ক্লিনিং !’
‘তোরাও কষিস,সাবান ঘষিস,
কাপড় দিস আছাড়,
সেই এক মতে,সেই এক পথে—
তুইও তো এক লাচার !’
‘না হলে আমি,সমাজের কমি,
হতো যে নিশ্চয়,
চুল হতো বড়,দাড়ি ঘোরতর,
হত বিভীষিকাময়।’
‘জটাজুট দেহ,চিনত না কেহ,
জঙ্গলে হতো বাস,
কেউ হত রাক্ষস,কেউ খোক্কস,
হতো যে সর্বনাশ !’
‘তাই জানিস মোর,সেই সাথে তোর,
আছে প্রয়োজন,
চিকনাই গাল,চাই পোশাকি চাল,
সদা সর্বক্ষণ।’
‘শোন বলি তাই,বলাবলি নাই,
যার যার কর কাজ,
নিজের ধার্য,নিজের কার্য,
কিসের এতে লাজ?’
তাপসকিরণ রায়
জবলপুর, মধ্যপ্রদেশ
- বিস্তারিত
- লিখেছেন তাপস কিরণ রায়
- ক্যাটfগরি: ছড়া-কবিতা
চাউমিন
কপকপ চাউমিন,
খেয়ে চলে রাতদিন!
ডালভাত দিলে পরে,
থালাবাটি ছুঁড়ে মারে।
করেছ কি রান্না,
এঁচোড়ের ডালনা?
ফুলকপি পাতা বাঁটা?
মিছে কেন এত খাটা!
দই ভাত মাখিয়ে,
দাও যদি এগিয়ে;
কটমট চোখেতে,
কী ভীষণ রোষেতে;
সপ্তমে তুলে স্বর,
কেঁদে ভাসে ঝরঝর!
বুক করে দুরুদুরু,
এই বুঝি হল শুরু;
সেই এক বায়না,
আর কিছু খায় না!
নিঃঝুম মাঝরাত,
বেশ ছিল শুয়ে কাত;
স্বপ্নেতে এল বুঝি,
চাউমিন এক ঝুড়ি;
ঘুম গেল পালিয়ে,
খিদে পেট চাগিয়ে;
নেইকোনো নিস্তার,
চাউমিন চাই তার।
হাউমাউ কান্না,
ধরেছে সে বায়না;
যত বলো যত সাধো,
ক্ষীর-পুলি দাও যতো;
নিমকি কি চিড়ে ভাঁজা,
বাদশাহী খাজা গজা;
কিছু মুখে দেবে নাকো,
কোনো কথা শোনে নাকো।
বুককাঁপা চীৎকার,
চাউমিন চাই তার!!!!
মধুমিতা প্রামাণিক
গিরীশ পার্ক , কলকাতা
- বিস্তারিত
- লিখেছেন মধুমিতা প্রামাণিক
- ক্যাটfগরি: ছড়া-কবিতা
একের পিঠে দুই
বাবার কোলে শুই
গুটি শুটি রই
(তবু) শান্ত মোটেও নই
পাশটি ফিরে রই
করি কুঁই কুঁই,
তখন বাবা বলে ছড়া
আমার রূপু কই?
পড়ছে খুলে বই,
যেন শুনছি সত্যিই
না না না, বাবা
(তুই) জানিস না কিচ্ছুই
একের পিঠে দুই
বলে সুকুমারের বই
দিই দুষ্টুমিতে মই
(বাবা), কাঁদিস কেন তুই?
অভ্র পাল
কলকাতা
- বিস্তারিত
- লিখেছেন অভ্র পাল
- ক্যাটfগরি: ছড়া-কবিতা
সেরা কদাকার কে?
ন্যাশ্নাল জিওগ্রাফিক চ্যানেল কিছুদিন আগে একটা প্রতিযোগিতা করেছিল -পৃথিবীর সবথেকে কদাকার প্রাণীর কে?
এই প্রতিযোগিতার ফল বেরিয়েছে। গভীর সমুদ্রের বাসিন্দা ব্লবফিশ এর কপালে জুটেছে এই খেতাব!
কিন্তু এই খেতাবের প্রয়োজন কেন? আর এই প্রতিযোগিতারই বা প্রয়োজন কেন? সে নিয়ে আলোচনায় পরে আসছি, আগে একটু ব্লবফিশের বর্ণনা দিই।
অস্ট্রেলিয়ার উপকূলে সমুদ্রের ২,০০০-৪,০০০ ফিট নিচে থাকে ব্লবফিশ। মাছ ধরার ট্রলারের জালে হামেশাই ধরা পরে ব্লবফিশেরা। ব্লবফিশ প্রায় ১২ ইঞ্চি মত লম্বা হতে পারে। কিন্তু এর গায়ে কোন পেশি নেই, তাই একেবারে এক থলথলে চেহারা। কিন্তু এই জেলির মত মাংস তাদের সাহায় করে সমুদ্রের জলের মধ্যে ওঠা-নাম করে ভেসে বেড়াতে আর শিকারে জন্য ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করতে।
এবার আসি কেন এই প্রতিযোগিতা তার কথায়। ইংল্যান্ডের Ugly Animal Preservation Society বা কদাকার প্রানী সংরক্ষণ সংগঠনের উদ্যোগে হয় এই প্রতিযোগিতা। উদ্দেশ্য ছিল, সেই সব বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীদের সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ান, যারা হয়ত প্যান্ডাদের মত আদুরে বা বাঘেদের মত রাজকীয় নয়; যাদের কদাকার চেহারার জন্য মানুষ তাদের খুব একটা পাত্তা দেয় না।
তাঁরা ১১ জন জনপ্রিয় তারকা এবং কমেডিয়ানদের দায়িত্ব দেন একটা করে প্রাণীকে নিয়ে শর্ট ফিল্ম বানাতে, যেখানে সেই প্রানীকে সব থেকে কদাকার দেখতে বলে জোর দেওয়া হবে। সেই ভিডিওগুলি দেখেন হাজার হাজার মানুষ।
বৃটিশ সায়েন্স ফেস্টিভ্যালে ৭৯৫ ভোট পেয়ে প্রথম হয় ব্লবফিশ! ব্লবফিশ এখন হল Ugly Animal Preservation Society- এর ম্যাস্কট। এই সংগঠন মনে করছে, এই ভাবে পৃথিবীর কদাকার বিপন্ন প্রাণিদের প্রতিও মানুষের নজর এবার বাড়বে।
তথ্য ও ছবিঃ ন্যাশ্নাল জিওগ্রাফিক
- বিস্তারিত
- লিখেছেন মহাশ্বেতা রায়
- ক্যাটfগরি: জানা-অজানা