সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
চাঁদের বুড়ির চরকা-চিঠি - ১৪২২/০৭- প্রসঙ্গঃ রামধনু

কয়েকদিন আগে এক বিকেলে হঠাৎ দমকা হাওয়ার সাথে সাথে গুরুরগুরু করে ডেকে উঠল মেঘ, ঝমঝম করে নামল বৃষ্টি। অবাক হয়ে জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি, ঠিক আমাদের মাথার ওপরেই যদিও এক গাঢ় ধূসর মেঘ হাত -পা ছড়িয়ে বেদম রাগারাগি করছে, কিন্তু তার নাগালের বাইরের আকাশেই চলছে নানা রঙের খেলা। সূর্য তখন অস্তাচলের শেষ স্টেশনে প্রায়। সেখানে থেকেই সোনালি-রূপালি-কমলা-বেগুনী নানা রঙের রাঙিয়ে দিয়ে যাচ্ছেন আকাশকে- যতদূর চোখ যায়। অনেক দূরে, দিগন্তের কাছে ঘর-বাড়ী-গাছ-পালা সব ঝিকমিক করছে । এদিকে আমাদের মাথার ওপরে জেদী মেঘখানা বৃষ্টি দিয়েই চলেছে - ঝমঝম থেকে কমে বৃষ্টিফোঁটারা এখন টাপুর -টুপুর ছন্দে নেমে আসছে। এইরকম শেষ বিকেলের সোনালী-কমলা আকাশ তো আর রোজ দেখা যায়না ! ইচ্ছামতী তো 'গোধূলি-ই-ই-ই-' করে লাফাতে লাফাতে সিঁড়ি বেয়ে ছাদে উঠে গেল। পেছন পেছন আমিও গেলাম...অত জোরে কি আর পারি- আমি ধীরে ধীরেই গেলাম। ছাদে উঠে দেখি - ওমা ! এই মেঘ-বৃষ্টির খেলার মধ্যে, পূবের আকাশ জুড়ে একখানা এত্ত বড় সাতরঙা রামধনু ! সেই দেখে আমাদের কি ফূর্তি ...রামধনুর দেখা কি আর রোজ রোজ মেলে ?

রামধনু দেখা অবধি থাকলেই বেশ হত। কিন্তু এইবার তো শুরু হল ইচ্ছামতীর প্রশ্ন করার পালা। - রামধনুটা কি করে আকাশে এল? কে বানালো? আমরা রোজ রোজ রামধনু দেখতে পাই না কেন ? - এই সব নানা প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করতে করতে ভাবলাম, ইচ্ছামতীর সাথে রামধনু নিয়ে যত গল্প করছি, সেগুলিকে তো ইচ্ছামতীর বন্ধুদের সাথেও ভাগ করে নেওয়া উচিত। তাই নিয়ে এলাম তোমার জন্য এই 'প্রসঙ্গঃ রামধনু'। রামধনু নিয়ে শুধু লোককথা বা কবিতাই নয়, আমাদের ঝুলিতে রয়েছে রামধনু সৃষ্টির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও। সাথে আছে রামধনু রঙ সিঁড়ির খোঁজ এবং সাথে আছে আরো বেশ কিছু লেখা, যেগুলি সরাসরি রামধনু বিষয়ে নয়, কিন্তু সেইসব লেখাগুলিতে শুধু সাতটা নয়, এত এত রঙের সমাহার যে সেগুলিকে এই সিরিজে দিব্যি মানিয়ে যায়।

দুটো খুব ভাল কথা জানাই। প্রথমটা হল, ইচ্ছামতী যে একটু সাজবদল করেছে, সেটা লক্ষ্য করেছিল নিশ্চয়। এখন ইচ্ছামতীর বিভিন্ন লেখাগুলিকে তাদের বিষয় এবং বৈশিষ্ট অনুযায়ী বিভিন্ন বিভাগে খুঁজে পাওয়া যাবে। একেকটা লেখা এমনই হয় যে , সেগুলি একাধিক বিভাগে থাকতে পারে। সেইরকমই এক গোছানোর কাজকম্ম চলছে ইচ্ছামতীতে এখন। এই কাজটা খুবই সময়সাপেক্ষ, তাই শেষ হতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে। কিন্তু আশা করা যায়, এর পরে ইচ্ছামতীতে তোমার পছন্দের বিষয়ের লেখাগুলিকে তুমি আরো সহজে খুঁজে নিতে পারবে।

দ্বিতীয় ভাল খবরটা হল, ইচ্ছামতীকে ভালবেসে তাকে গল্প শোনাবেন এবং তার জন্য ছবি এঁকে দেবেন বলে ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন এমন দু'জন বন্ধু, যাঁরা আদপেই বাঙালি নন, বাংলা ভাষাটাও কাজ চালানোর মত বোঝেন । কিন্তু ভাষার ব্যবধান তাঁদের থামিয়ে রাখতে পারে নি। এটা অনেকটা ভাল গানের সর্বজনীনতার মত - গানের কথা বোঝ বা না বোঝ, সুর ভাল হলে সেই গান তোমার মন মাতাবেই। অথবা ছোট্ট ছোট্ট কোমল তুলতুলে খোকাখুকুদের মত - যাদের আবোল তাবোল মিঠে বুলি বুঝতে না পারলেও তাদের সাথে দিব্যি গল্প করে, খেলা করে সময় কাটিয়ে দেওয়া যায়। ইচ্ছামতীও ঠিক সেরকমই, কথা বলছে সবার সাথে - তার নিজের ভাষায়, নিজের মত করে।

আর মাত্র কিছুদিন পরেই ইচ্ছামতী সাতে পা দেবে। বড় হওয়ার সাথে সাথে দেশ-বিদেশে তার বন্ধু সংখ্যা আরো বাড়তে থাকুক, জাতি-ভাষা-ধর্ম-নির্বিশেষে।

রামধনুর সাতটা রঙের সবগুলো সমান ভাবে রাঙিয়ে তুলুক গাছ-ফুল-ফল-পাখি-পশু-প্রজাপতি-মাছ-প্রবাল-ঝিনুক-পাহাড়-নদীর সাথে তোমার ছোট্ট, নরম মনটাকেও, এটাই চাই।

ভাল থেক।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা