সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
সেইন্ট নিকোলাসের গল্প

শীতের সাথে যেমন পুলি-পিঠে, কেক, সোয়েটার আর নলেন গুড়ের গন্ধ’র গল্প মিশে আছে, তেমন আছে সান্টাক্লসের গল্প। পৃথিবীর প্রায় সব দেশে সান্টাকে নিয়ে আছে নানা ধরনের মজার গল্প । আজ শোনাব তোমাদের তেমনই আরেকটা গল্প। এটা একদম আদি কালের এক সত্যি সান্টার গল্প। আজ আমি বলব হল্যান্ড-এর সেইন্ট নিকোলাস এর গল্প, বলব কবে কখন কী করে শুরু হয়েছিল এই উৎসব। লালা জামা,সাদা চুল-দাড়ি ঢাকা হাসিমুখ'—আমাদের আজকের পরিচিত খ্রীস্টমাস বুড়ো বা 'সান্টাক্লজ'—কিন্তু আসলে এই সেইন্ট নিকোলাসের আদলেই গড়ে উঠেছে।

অনেক দিন আগের কথা। প্রায় তিনশ খ্রিস্ট পূর্বাব্দ আগে তুরস্ক দেশে এক ধনী পরিবারে জন্ম নেন সেইন্ট নিকোলাস। তিনি মা বাবার অত্যন্ত প্রিয় ও আদরের ছিলেন। মা বাবা তার নামকরন করেন নিনো লাওস (Nino Laos)। ছেলেবেলা থেকেই নিনো ছিল একজন মিশুকে আর বাধ্য ছেলে। সে সব সময় মা বাবার কথা মেনে চলত। চারপাশের মানুষজন'কে সে প্রাণ দিয়ে ভালবাসত। আর পছন্দ করত বই পড়তে। নিনো যখন কিশোর, তখন তাঁর বাবা মা মারা যান আর তিনি একা হয়ে পরেন। আর আশ্রয় নেন তাঁর গ্রামের গির্জায়। নিনো লাওস খুব অল্প বয়েস সম্পূর্ণ বাইবেল পড়ে ফেলেছিলেন। তাঁর এই পড়ার প্রতি আগ্রহ আর অনেক জানার ইচ্ছে তাঁকে খুব অল্প বয়েসে অনেক সহনশীল আর ভালো মানুষে পরিণত করেছিল। নিনো তাঁর উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সমস্ত টাকা, ধন-সম্পত্তি গরিব অসহায় মানুষদের মধ্যে বিলিয়ে দেন।

তিনি সবসময় গরিব দুঃখী মানুষদের পাশে থাকার চেষ্টা করতেন। গির্জায় অনেক মানুষ আসতেন প্রার্থনা করার জন্য। একদিন নিনো লক্ষ্য করলেন একজন মানুষ রোজ পাদ্রীর কাছে আসেন আর তাঁর উপদেশ নেন। মানুষটিকে খুব চিন্তিত আর অসহায় লাগছিল। লোকটি চলে যাবার পরে নিনো পাদ্রিকে জিজ্ঞাসা করলেন, মানুষটি এত চিন্তিত কেন। তখন পাদ্রি তাঁকে বলেন যে ঐ লোকটির কাছে তেমন কোনো টাকা পয়সা নেই যাতে তিনি তার মেয়েদের ভালো বিয়ের ব্যবস্থা করতে পারেন। সেই রাতে নিনো চুপিসারে সেই লোকটির বাড়ি যান আর চিমনির ভিতর দিয়ে একটা সোনার মোহর ভরা থলি ফেলে দেন। তিনি সেই বাবাকে লজ্জিত না করেই উপকার করতে চেয়েছিলেন। পরেরদিন সকালবেলা মেয়েরা অবাক হয়ে যায় চিমনীর নিচে মোহর ভর্তি থলি দেখে।

নিনো লাওস ছিলেন শিশুদেরও খুব প্রিয় আর কাছের মানুষ। তাঁর আরও আনেক গল্প আছে। তবে হল্যান্ডে এই সেইন্ট নিকলাস এর উৎসব শুরু হয়েছিল ১৮৫০ সালে এক শিক্ষক ইয়ান সেঙ্কমান (Jan Schenkman) এর হাতে।

সেইন্ট নিকোলাসের গল্প

তিনি ছোটোদের জন্যে একটি সুন্দর ছবির বই তৈরি করেন। 'সেইন্ট নিকলাস আর তাঁর দাস' নামে তাঁর গল্পে তিনি প্রথম সেইন্ট নিকলাসকে স্পেন থেকে নিয়ে আসেন জাহাজে করে। সাথে তাঁর দাস কালো পিট (Zwarte Piet)। কালো পিটের পিঠে থাকে মস্ত বড় থলি, সেটা ভর্তি বাচ্চাদের জন্যে অনেক খেলনা আর মজার জিনিস। সেইন্ট নিকলাস ডিসেম্বেরর ৬ তারিখে সমাধিস্থ হন। ডিসেম্বরের ৫ তারিখে দেশের সমস্ত শিশুরা তাদের বাড়ির চিমনীর নিচে একটি জুতোর মধ্যে সেইন্ট নিকলাসকে লেখা চিঠি আর তাঁর ঘোড়ার জন্যে গাজর রেখে দেয়। এই উৎসবকে বলে 'পাকেন আভন্দ' । ওলন্দাজ ভাসায় যার অর্থ 'উপহারের সন্ধ্যে' । পরেরদিন, মানে ৬ ডিসেম্বর পরিবারের সবাই একসাথে খাওয়া-দাওয়া করেন। সারা দেশে সেদিন এক অলিখিত ছুটি থাকে। হল্যান্ডে বড়দিনের উৎসব শুরু বলতে সব্বাই 'সেইন্ট নিকলাস ডে'- কে বোঝায়। এদেশের মা-বাবারা ছোটদের বোঝান, সারা বছর তারা যদি ভালো ব্যাবহার করে, তাহলে সেইন্ট নিকলাস তাদের উপহার দেবেন।

সেইন্ট নিকোলাসের গল্প

উপহারের জিনিস গুলি ভারী মজার । একটা বড় থলের মধ্যে সব উপহার রাখা থাকে। থাকে 'পেপার নোটন'(চকোলেট এ মোরা বিস্কুট )। আর থাকে বই। সারা ইউরোপের দেশগুলিতে খ্রিস্টমাসের উপহার হিসেবে বই ভীষণ জনপ্রিয়। সেইন্ট নিকলাস ডে র দিন হোক বা বড়দিন, এখানে পরিবারের সবাই মিলে একসাথে বই পড়ার মজা উপভোগ করে। হল্যান্ডের মত ইউরোপের নানা দেশে বড়দিনের উৎসব পালন নিয়ে এমনি অনেক গল্প আছে।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা