সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo

ঘুমটা অ্যালার্ম বাজার আগেই ভেঙে গিয়েছিল। আগের রাতেও ঘুম হয়নি বলে মাথা ধরে ছিল। কিন্তু এখন ঘুমের থেকে বেশি জরুরি আমার আবিষ্কারের সফলতা। এই আবিষ্কারের মূলে ছিল আমার মায়ের উপর রাগ ও আমার অতীত বদলার জেদ। ছোটবেলায় আমার বন্ধু যখন পুতুল খেলত তখন আমি পড়াশোনা করতাম। একদমই ভাল লাগত না । কিন্তু করতে হতো মায়ের ভয়ে। জন্মদিনেও উপহারে বই পেতাম। তাই আমার বন্ধুও ছিল কম। বইয়ের সঙ্গে আমার বেশি বন্ধুত্ব ছিল। আমার মা জীব বিজ্ঞানের অধ্যাপিকা ছিলেন। পরে চাকরি ছেড়ে আমার পড়াশোনা নিয়ে সব সময় থাকতেন। আমি আঁকতেও ভালোবাসতাম, হাত ও ছিল ভাল,ইচ্ছে ছিল বড় হয়ে ফ্যাশন ডিজাইনার হব। কোনরকমে হাত-মুখ ধুয়ে প্রোটিন শেক নিয়ে ঢুকলাম ল্যাবে।।আমার আবিষ্কার, টাইম মেশিন যদি সফল হয় তাহলে আমার জীবন বদলে যাবে। বিফল হলে এখানেই পড়ে থাকতে হবে ।সময় কিছুতেই কাটতে চাচ্ছিল না । একসময় আমার যন্ত্র জানান দিলো যে টাইম মেশিন তৈরি।

ভিতরে গিয়ে বসতেই গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো। উত্তেজনায় হাত-পা কাঁপতে লাগলো। কী করব আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম। অনেক বছর ধরে সেই মতো কাঁপা হাতে সময় সেট করে বোতাম টিপলাম আর এক নিমেষের মধ্যে পৌঁছে গেলাম আমার ছোটবেলার বাড়িতে। আমার পাড়ার ঘরের দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম আর দেখলাম ছোট আমি পড়ছে আর আঁকার খাতা গুলো গুছিয়ে রাখা আছে এক তাকে। ইচ্ছে হলো ছুটে গিয়ে আঁকার খাতা গুলোকে নিয়ে ছোট আমি কে দিয়ে দিই আর পড়ার বইগুলো রেখে আসি কোথাও ভবিষ্যতে, কিন্তু খানিকক্ষণ পরে নিজেকে বোঝালাম যে কোন দরকার নেই অতীত বদলাবার । আমার মা যা করেছেন তা তো ভালোবেসেই করেছেন। তখন পড়তাম মায়ের ভয়,এখন পড়ি নিজের ইচ্ছেতে, ভালোবেসে । আমি এখন পদার্থবিজ্ঞানের গবেষক, দেশ-বিদেশে আমার খ্যাতি । যেখানে যাই লোকেরা আমাকে চেনে। এটা নিয়ে আমি খুশি। মনে মনে মা কে ধন্যবাদ জানালাম। ফিরে এলাম নিজের সময়। আমার অবস্থাতে আমি খুশি,কিন্তু আমার সন্তানদের অবস্থা চাইনা যে আমার মত হোক। শেষবারের মতো টাইম মেশিন ব্যবহার করব ভবিষ্যতে যাবার জন্য। আবার সময় সেট করে বোতাম টিপলাম আর পৌঁছে গেলাম ভবিষ্যতে, বড় আমিকে দেখে অবাক হলাম, এ কী? ও টেবিলে বসে দুটো ছেলে মেয়েকে পড়াচ্ছে। ওদের পড়ার একদমই ইচ্ছে করছিল না। যখন ওরা চোখ রগড়াতে রগড়াতে চলে গেল তখন আমি ঢুকলাম ঘরে । বড় আমি খানিকক্ষণ চুপচাপ থেকে বলল "এখানে এসেছ কেন ?আর তাহলে কি এখন ও টাইম মেশিন নষ্ট করনি?" মাথা নেড়ে বললাম "না এখনো নষ্ট করিনি। ভাবলাম ভবিষ্যতে দেখব আর তোমার মনে করিয়ে দেবো যে তোমার সন্তানদের ভালো করে ওদের ইচ্ছে মতো জীবন কাটাতে দাও। খেলাধুলা, আঁকাঝোকা,পড়াশোনা সব ওদের ইচ্ছেতে। তুমি ভাবতে পারো এখন পড়াশোনা করলে ওরা সফল হবে কিন্তু ওরা জীবনে খুশি নাও হতে পারে। তোমার মত ওদের অবস্থা যেন না হয় "।এই বলে আর এক কাজ করলাম। বাচ্চাদের ঘরে গিয়ে বললাম "আর পড়তে হবে না। এখন যা ইচ্ছে করো। তারপর বিকেলে ঘুরতে নিয়ে যাব। এক জিনিস মনে রেখো পড়তে ইচ্ছে না করলে কখনো পড়বেনা। বলে দেবে ইচ্ছে করছে না । আমি রাগ করবো না, তোমাদের খুশিতেই আমি খুশি । ঠিক আছে? খুশি মুখে মাথা নেড়ে হ্যাঁ জানিয়ে দিল।

চলে গেলাম টাইম মেশিনে। ফিরে এলাম বাড়ি । বুঝতে পারলাম লোকেরা যদি জানতে পারে এই আবিষ্কারের কথা তাহলে আমার খ্যাতি বাড়বে দেশে-বিদেশে। কিন্তু অত খ্যাতি নিয়ে কাজ নেই । টাইম মেশিন নষ্ট করে ফর্মুলা গুলো ছিড়ে আঁকতে বসলাম এক গবেষণার কাগজ নিয়ে । কতদিন পরে আবার শান্তি মনে আঁকছি।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা