সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
বোবাই

এক বনে ছিলো ছোট্ট শেয়ালছানা। ওর নাম ছিলো বোবাই। দেখতে কী মিষ্টি আর শরীর ছিলো তুলতুলে। স্বাস্থ্য ভালো আর নাদুস নুদুস। তাই সে নিজেকে নিয়ে খুব খুশি ছিলো । সে নিজেকে অনেক শক্তিশালী আর সাহসী ভাবতো । বুদ্ধিতে সে তার বাবার থেকেও অনেক বেশি। দলের সবার চেয়ে তার বুদ্ধি বেশি। কুকুরদের সে ভয় পায় না। একা কোনও কুকুর দেখলে তাকে উল্টো ভয় দেখায়। তাই তো মাঝে মাঝে দলছুট হয়ে একা একা ঘুরে বেড়াতো। আশে পাশে ছোট ছোট গাছের ঝোপে ঘুমিয়ে যেত।

তার বাবা তাকে অনেক বোঝাতো এমন না করতে। মানা করতো দুষ্টুমি করতে। সে খুব মোরগের মাংস পছন্দ করতো। একবার একা একা একটা মোরগ সে ধরেও ফেলেছিলো। তা নিয়ে তার কতো গর্ব ছিলো। সব শেয়ালের ছানারা ইশকুলে যেতো। বোবাইও সবার মতো ইশকুলে যেতো। বোবাই দুষ্টুমি করলেও পড়ালেখায় একদম ফাঁকি দিতো না। মন দিয়ে পড়তো সে। তবে তার খুব ছবি আঁকার শখ ছিলো। যা দেখতো তা আঁকতে চাইতো। আর টিফিনে যখন মাঠে সবাই খেলতো তখন সে সবার আড়ালে বনে বনে ছবি আঁকতো।

এভাবে মাঝে মাঝে বোবাই দিব্বি জেলেদের নৌকায় ঢুকে যেতো ঘুরতে ঘুরতে তারপর জেলেদের মজার মজার রান্না খেয়ে ভোঁ দৌড় দিতো। গরীব জেলেরা খেপে যেতো। বলতো, এবার এলে দেখাবো মজা দুষ্টু শেয়াল কোথাকার।

এমনি করেই শেয়ালের ছানা বোবাইয়ের দিন কাটছিলো। তারপর হলো কী- এক ঝড়ের রাত।

বনে শোঁ শোঁ শন শন করে ঝড়ো বাতাস বইছে।
কড় কড় কড়াৎ মেঘ ডাকছে। পশু পাখিরা যে যার বাসা বাড়িতে ঢুকে পড়ছে। শেয়ালেরাও তাদের যার যার বাড়ী চলে গেছে। কিন্তু বোবাই দুষ্টু শেয়ালের বাড়ী ফেরার নামটিও নেই। বোবাইয়ের আর দুই ভাই বাড়ি পৌঁছে গেছে।
বাবা মা সবাই আছে কেবল বোবাই ফেরেনি।

বাইরের আবহাওয়াও ভালো না। বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বোবাই তখনও নাক ডাকিয়ে ঘুমোচ্ছিল বনের পাশের একটা গাছের কোটরে। হঠাৎ শব্দে ঘুম ভাঙ্গে তার। দেখে সামনে দাঁড়িয়ে আছে পাঁচটা কুকুর। চোখ রাঙা করে চেয়ে আছে ওর দিকে। বোঝাই যাচ্ছে তারা বোবাইকে আজ ছাড়বে না সহজে।

বোবাই

বোবাই বাইরের অবস্থাও দেখলো। বুঝলো আজ তার বিপদ। সাহস হারানো যাবে না। তখন সে কুকুরদের বললো, তোমরা আমায় মারতে চাও, খেতে চাও আর শাস্তি দিতে চাও- দাও। তবে একটা শর্ত আছে তোমাদের ভেতর কে আমায় মারবে? আমি তো ছোট আর একা। তোমরা যে কেউ একজন আমায় মারবে সেটা আগে ঠিক করো। তারপর মারতে এসো। দল বেঁধে মারলে তো আনন্দ নেই। বরং একা মারলে আনন্দ আর বীর মনে হবে নিজেকে। তখন কুকুর পাঁচটি ভাবলো, শেয়ালের ছানাটা ঠিকই বলেছে। একা একা মারলেই তো মজা। বোবাই দেখলো কুকুরগুলো নিজেরা কে তাকে আগে মারবে তা নিয়ে কথা বলছিলো। কিন্তু কেউ কাউকে আগে মারতে দিতে চায় না। তাই ঝগড়া বেঁধে গেলো ওদের মধ্যে। সে এমন ঝগড়া যে ওরা ভুলেই গেল শেয়ালের ছানাটা আছে ওদের সামনে। তারপর যখন ঝগড়া থামলো দেখলো শেয়ালের ছানা আর নেই।

আসলে বুদ্ধিমান বোবাই সাহস করে ওদের সাথে কথা বলে নিজের বাঁচার রাস্তা তৈরি করেছিলো।


ছবিঃ অঙ্কুশ চক্রবর্তী

এহসান হায়দার প্রকৌশলী রূপে পড়াশোনা করলেও, পেশায় সাংবাদিক। ঢাকা, বাংলাদেশের বাসিন্দা এহসান বর্তমানে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার সহ-সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আর নিজেকে পরিচয় দেন ছোটকাগজ কর্মী হিসেবে। কারণ, কবিতা প্রবন্ধ এই ছোটকাগজেই ছাপতে ভালো লাগে। একান্ত ইচ্ছে শিশুদের জন্যে একটি নতুন ধরনের পত্রিকা‌ ‌‍'রূপকথা' প্রকাশ করা। ছেলেবেলায় শিশুসাহিত্যর প্রতি যে আগ্রহ জন্মেছিল তা থেকে দূরে যাওয়া যায়না- আরতাই শিশুদের নিয়ে লিখতে ভালো লাগে।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা