সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
গাঁদাফুলের গপ্পো

নভেম্বরের ১ -২ তারিখে,মেক্সিকো আর মধ্য আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলে পালিত হবে 'ডে অফ দ্য ডেড' (Day of the Dead) । এই উৎসবে সবথেকে বেশি ব্যবহার হয় সোনালি হলুদ রঙের গাঁদা ফুল। মেক্সিকোতে এই ফুল flor de muerto বা flower of the dead নামেও পরিচিত। কেন জানো? কারণ এই ঝলমলে ফুল মানুষকে বারে বারে মনে করায় জীবন আসলে ক্ষণস্থায়ী। দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলের অধিবাসীরা এই ফুল অর্পণ করে মৃত আত্মীয়দের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

গাঁদাফুল ( বৈজ্ঞানিক নাম Tagates erecta) আদতে দক্ষিণ আমেরিকার নিজস্ব ফুল। কলম্বাস দক্ষিণ আমেরিকা পৌঁছানোর অনেক আগে থেকেই, স্থানীয় মানুষ, যারা 'নাহুয়া' নামে পরিচিত ছিলেন, তাঁরা মনে করতেন এই ফুল সূর্য দেবতার দান। সূর্য তাঁদের এই উপহার দিয়েছেন যাতে তাঁরা পূর্বজদের শ্রদ্ধা জানাতে পারেন।

গাঁদাফুলের গপ্পো

স্থানীয় ভাষায় এই ফুলের নাম cempazúchitl বা cempasúchil। Cempazúchitl (cempasúchil) শব্দটা তৈরি হয়েছে স্থানীয় নাহুয়া শব্দ 'cemposalli' মানে 'কুড়ি' আর 'xochitl' মানে 'ফুল' মিলে। দুটো শব্দ মিলে অর্থ দাঁড়ায় 'কুড়ি পাপড়ির ফুল'। এগুলি Aztec marigold/ Mexican marigold নামেও পরিচিত। 'ডে অফ দ্য ডেড' এর দিনে, মেক্সিকোর মানুষেরা পূর্বজদের কবরে দিয়ে আসেন গাঁদাফুল। তাঁদের ঘরে 'অফ্রেন্দা' সাজান গাঁদাফুল দিয়ে। বাইরে থেকে ঘর অবধি গাঁদাফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে রাখেন , তাঁদের বিশ্বাস যে সেই পথ ধরে পূর্বজদের আত্মা তাঁদের আশীর্বাদ করতে আসবেন। এই অনুষ্ঠান কেমনভাবে হয়, তা জানার জন্য দেখে ফেলতে পারো 'কোকো ' নামের ডিজনির অ্যানিমেটেড ছবিটি। এই পুরো ছবিটিই নির্মিত হয়েছে 'ডে অফ দ্য ডেড' উৎসবকে ঘিরে।

গাঁদাফুলের গপ্পো

প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে, স্পেনীয় এবং পর্তুগীজ বণিকরা প্রথম গাঁদাফুল ভারতে নিয়ে আসে, তারপরে ছড়িয়ে পরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে। ধীরে ধীরে এই ফুল ভারতীয় সংস্কৃতির অঙ্গ হয়ে ওঠে। আমাদের দেশের শেষ বড় উৎসব দীপাবলি এই মাত্র কয়েকদিন আগেই শেষ হল। দীপাবলি মানেই, বাড়িতে বাড়িতে, বিশেষ করে উত্তর ভারতে, আলো দিয়ে সাজানোর সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহার করা হয় উজ্জ্বল হলুদ-কমলা রঙের গাঁদাফুলের মালা। তবে শুধু দীপাবলি নয়, গাঁদাফুলের মালার বহুল ব্যবহার হয় ভারতের প্রায় সব ধর্মীয় উৎসবেই - সেটা বর্ষাকালের শেষে মহারাষ্ট্রের গণেশ পুজোই হোক, কিংবা বসন্তকালে আমাদের স্কুলে স্কুলে সরস্বতী পুজো। সাংস্কৃতিক উৎসব থেকে শুরু করে বিয়েবাড়ি, সব জায়গাতেই, শুভ প্রতীক রূপে গাঁদাফুল আর গাঁদাফুলের মালা দিয়ে সাজানো হয়। নিত্যদিনের পুজো হোক কিংবা অনুষ্ঠানবাড়ি বা ধর্মীয় উৎসব, সবেতেই কমলা-হলুদ গাঁদাফুলের উজ্জ্বল উপস্থিতি দেখা যায়। এমন কি,বাংলা ভাষা গাঁদাফুলকে নিয়ে বেশ কয়েকটি গান ও লেখা আর গাওয়া হয়ে গেছে।

গাঁদাফুলের গপ্পো

আমাদের এত বেশি চেনা, বাগানের কোণে হেলাফেলায় বেড়ে ওঠা গাঁদাফুলেরা যে পৃথিবীর উল্টো পিঠ থেকে সাত সমুদ্র তেরো নদী পেরিয়ে একেবারে আমাদের ঘরের লোক হয়ে গেছে, এও যেন দারুণ এক অভিযানের গল্প, তাই না।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা