সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
ঘরের কাছে জঙ্গলে

পুজোতে স্কুলে লম্বা ছুটি…বেড়াতে যেতে ইচ্ছা করছে জঙ্গলে? একটু বন্য পরিবেশে সময় কাটাতে ইচ্ছা করছে?
কিন্তু ট্রেনের বুকিং পাওয়া যাচ্ছে না.........।। যাওয়ার কোন উপায় নেই..........

একদম মন খারাপ না করে ঘুরে এস কলকাতার খুব কাছে বিভূতিভূষণ অভয়ারণ্য বা পারমাদান অভয়ারণ্য থেকে। ৯২ হেক্টর এলাকা জুড়ে অবস্থিত এই অভয়ারণ্যটি কলকাতা থেকে মাত্র ১০০ কিমি দূরে।বিখ্যাত কথা সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের বাড়ি এই অভয়ারণ্যের খুব কাছে গোপালনগরে। ওনার স্মৃতিতেই পরবর্তীকালে পারমাদানের নাম পরিবর্তন করে বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের নামে নামাঙ্কিত করা হয়।

কি দেখবেঃ এই অভয়ারণ্য মূলত হরিণ সংরক্ষণ কেন্দ্র হলেও গেট দিয়ে ঢুকলেই তোমাদের চমকে দেবে অনেক পাখির সমবেত ডাক। যেন ওরা তোমাকে স্বাগত জানাছে। একটু এগলেই দেখতে পাবে বিশাল খাঁচার মধ্যে রাখা আছে দেশ বিদেশের নানা পাখি। তাদের মধ্যে যেমন আছে ভারতের জাতীয় পাখি তেমনি আছে চোখ ধাঁধানো নানা রঙের ম্যাকাও, আছে অনেক কাকাতুয়া, আছে লেসার অ্যাডজুট্যান্ট স্টকের মতো বিশাল আয়তনের পাখি। এই সমস্ত পাখিদের মধ্যে অনেককেই কোন না কোন সময়ে বিপদের মুখ থেকে উদ্ধার করে এনে এখানে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে। অভয়ারণ্যের মাঝে আয়তক্ষেত্রের মতো করে জাল দিয়ে ঘেরা আছে যার মধ্যেই হরিণদের রাখা হয়েছে। এই খাঁচার ধার বরাবর রাস্তা করা আছে যেখান দিয়ে তুমি পায়ে হেঁটে পুরো অভয়ারণ্যটি ঘুরে দেখতে পার। সবুজ বনানী আর ধার দিয়ে বয়ে চলা ইছামতী নদী তোমাকে মুগ্ধ করে দেবে। তোমরা যদি হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে যাওতো নদীর ধারে বসার সুন্দর জায়গা করা আছে।

এখানে শুধু হরিণ আর খাঁচায় বন্দি পাখি নয় গাছ গুলোর দিকে খেয়াল রাখলে চোখে পড়বে নানা রকমের কাঠঠোকরা, বাবুই, মৌটুসি, টুনটুনি, ফিঙ্গে, হাঁড়িচাচা, ছাতারে, বসন্তবৌরি, নীলগলা বসন্তবৌরি, নানা রকমের ফ্ল্যইক্যাচার, মাছরাঙা, পেঁচা, ঘুঘুর মতো বাংলার অতি পরিচিত পাখিদের। এখনেই শেষ নয়। গাছের উঁচু ডালের সাথে সাথে যদি নিচের দিকেও চোখ রাখ তাহলে দেখতে পাবে নানা রকমের প্রজাপতি, মাকড়সা, ছত্রাক, সাপ;এমনকি অতি ক্ষুদ্র কিন্তু মনোমুগ্ধকর পোকামাকড়, রংবাহারি ফড়িং ও তোমাদের চোখে পড়বে ছোট ঝোপঝাড় গুলোতে।পারমাদানে নানা ধরনের প্রজাপতি দেখতে পাওয়া যায়, যেমন লাল চক্ষু, চইতক, পাঁচবুঁদি, জংলিবড়া, তামট, বাঘবল্বা, কড়ি, কাওয়া, খয়েরচক।

আমি বহুবার পারমাদানে ছুটে গেছি এই সব রংবাহারি প্রজাপতি, ফড়িং, পোকামাকড়দের সাথে সময় কাটাতে। বিভূতিভূষণ অভয়ারণ্য কোনবারেই আমাকে বিফল করেনি।

কি করে যাবেঃ
১। শিয়ালদহ থেকে বনগাঁ লোকাল চেপে বনগাঁ; বনগাঁ থেকে ভ্যানে মতিগঞ্জ গিয়ে সেখান থেকে অটো বা বাস করে কলমবাগান, তারপর ওখান থেকে পারমাদানের অটো বা ম্যাজিক গাড়ি পাবে। ২। শিয়ালদহ থেকে রানাঘাট লোকাল করে রানাঘাট; সেখান থেকে বাসে নলদুগারি; তারপর তুমি অটো বা ভ্যান করে পারমাদান পৌঁছে যাবে।

তুমি চাইলে পারমাদানে রাতেও থাকতে পার। তবে তার জন্য আগে থেকে অভয়ারণ্যের মধ্যে ইছামতীর ধারে থাকা ওয়েস্টবেঙ্গল ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের বনবাংলো বুকিং করতে হবে। এছাড়া কিছু বেসরকারি হোটেল ও আছে।

বিশেষ সতর্কতাঃ সব সময় মনে রাখবে তুমি প্রকৃতি মায়ের কাছে ঘুরতে যাচ্ছ তাই কোন ভাবেই প্রকৃতির কোন রকম ক্ষতি করবে না, জীব জন্তুদের কোন ভাবে বিরক্ত করবে না, প্লাস্টিক ফেলে পরিবেশ নষ্ট করবে না, গাছে হাত দেবে না।
তবে আর দেরি না করে বাড়ির সবার সাথে গিয়ে সময় কাটিয়ে এসো প্রকৃতির মাঝখানে, ঘরের কাছে জঙ্গলে।

শৌনক ব্যানার্জি কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শিক্ষাবিজ্ঞানের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ভবিষ্যতে শিক্ষক হতে চায়। শখের মধ্যে পোকামাকড়ের ছবি তোলা আর প্রচুর ভ্রমণ।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা