সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
বিজ্ঞানে বিদূষী: হ্যারিয়েট ব্রুক্স্‌, নিউক্লীয়ার সায়ান্টিস্ট
হ্যারিয়েট ব্রুক্স ও ইউরেনিয়াম মৌলের তেজস্ক্রিয় সিরিজ, মাঝে রেডন

নমস্কার বন্ধুরা। আমি গেছোদিদি। আমার ভাইকে হয়ত তোমরা চেনো, সে যেখানে খুশি যেতে পারে। আর আমি? আমি যখন খুশি যেতে পারি। গত চার’কিস্তিতে আমরা কেটি বাউম্যানের (Katie Bouman) কৃষ্ণগহ্বরের ছবি, রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিনের (Rosalind Franklin) ডিএনএ অণুর ছবি, মার্গারেট হ্যামিল্টনের (Margaret Hamilton) অ্যাপলো ১১ কম্পিউটার প্রোগ্রামিং, হেডি লামারের (Hedy Lamarr) ফ্রিকোয়েন্সী হপিং, ও লিজে মাইটনারের (Lise Meitner) নিউক্লীয় বিভাজন তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। জেনেছিলাম কীভাবে ছবিদুটো তোলা মোটেও সহজ ছিল না, প্রচুর মেহনত ও গণনা করেই ফল মিলেছিল। জেনেছিলাম কীভাবে হ্যামিল্টনের প্রায়রিটি ডিস্প্লে না থাকলে হয়ত আর্মস্ট্রং আর অল্ড্রিনের চাঁদে নামাই হত না। জেনেছিলাম কীভাবে লামারের ফ্রিকোয়েন্সি হপিং স্প্রেড স্পেক্ট্রাম প্রযুক্তি ব্যবহার করেই প্রথমদিকের ব্লুটুথ ও ওয়াই-ফাই শুরু হয়েছিল। জেনেছিলাম কীভাবে নিউক্লীয় বিভাজনের (nuclear fission) তাত্ত্বিক ব্যাখা দিয়েছিলেন মাইটনার ও অটো ফ্রিশ। ডিএনএ আবিস্কারের জন্য প্রাপ্য নোবেল ফ্র্যাঙ্কলিন পাননি। নিউক্লীয় বিভাজনের জন্য প্রাপ্য নোবেলও মাইটনার পাননি (ফ্রিশও পাননি, পেয়েছিলেন অটো হান ও ফ্রিৎস স্ট্রাসমান)।

প্রফেসর মাইটনারঃ দেখ হে বাউমশোয়েস্টার, আমি পাইনি ঠিক আছে, অন্তত অটোকে দিতে পারত। ছেলেটা অনেক খেটেছিল। অটো ফ্রিশ, আমার ভাইপো। হান নয়।
বলতে ভুলে গেছি, প্রফেসর মাইটনার আমায় বাউমশোয়েস্টার বলে ডাকেন। জার্মান ভাষায় বাউম অর্থ গাছ, আর শোয়েস্টার দিদি। দিব্যি নামটা। বেশ মনে ধরেছে।

মাইটনারঃ চল ভাই বাউমশোয়েস্টার, আর কতক্ষণ এই ঠান্ডায় দাঁড়িয়ে থাকব, বাড়ি ফেরা যাক, একটু গরম লাঞ্চটাঞ্চ করা যাক।
বুঝতেই পারছ, আমরা এখনও সুইডেনের ক্যুনগেল্ভ শহরেই আছি। ক্রিসমাসের সময়, ১৯৩৮ সাল। অর্থাৎ “এখন” থেকে ঠিক চুরাশি বছর “আগের” ঘটনা। “এখন” আর “আগের” বলছি অবিশ্যি ২০২২ সালের নিরিখে। সময় বেয়ে চললে এইগুলো একটু খেয়াল রাখতে হয়, বুঝতেই পারছ।

লাঞ্চ সেরে মাইটনার আর ফ্রিশ কাজে লেগে পড়লেন। গতবারের লেখায় নিশ্চয়ই পড়েছ, নিউক্লীয় বিভাজনের তত্ত্ব “এইমাত্র” আবিষ্কার হয়েছে। অতএব প্রচুর কাজ সামনে। খাতা কাগজ কলম কালি ফর্মুলা ক্যালকুলেশনে স্টাডি ভর্তি। অপেক্ষা করতে লাগলাম। সুইডেন সুমেরু বৃত্তের কাছে, আমাদের বাংলাদেশের মত ঝপ করে সন্ধ্যে নামে না, রয়েসয়ে আসে। বারান্দায় বসে গোধূলি বা twilight উপভোগ করছি এমন সময়ে প্রফেসরের গলা পেলাম। এখনকার মত আঁক শেষ, এবার রাতের খাবারের আয়োজন। ফ্রিশ রাঁধিবে। অতএব প্রফেসরের হাতে কিছু সময় আছে। বসার ঘরে এসে বসলেন, নতুন আবিষ্কারের আনন্দে মুখেচোখ উজ্জ্বল।

মাইটনারঃ বুঝলে বাউমশোয়েস্টার, এই নিউক্লীয় বিভাজনের ইতিহাসটা বেশ মজার। শুরুটা হয় অবশ্যই তেজস্ক্রিয়তা বা radioactivity দিয়ে। ১৮৯৬ সাল। গবেষণায় তিন দিকপাল বিজ্ঞানী --- অঁরি বেক্যরেল (Henri Becquerel), মারি স্কোডফস্কা ক্যুরি (Marie Skłodowska Curie), ও পিয়ের ক্যুরি (Pierre Curie)। ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয় রশ্মির ছবি উঠল ফোটোগ্রাফিক প্লেটে। এরপর সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ল এই ফীল্ডে। অগ্রগণ্য নিঃসন্দেহে প্রফেসর স্কোডফস্কা ক্যুরি। কিন্তু এ ছাড়াও আরও তিনজনের কথা আলোচনা করা উচিত। তিনজনেই নারী, এবং তিনজনের অবদানই অনস্বীকার্য। ডিনার আসার আগে অন্তত একজনের গল্প বলা যেতেই পারে। হোক?
আর বলতে? #হোকহোক!

বিজ্ঞানে বিদূষী: হ্যারিয়েট ব্রুক্স্‌, নিউক্লীয়ার সায়ান্টিস্ট
হ্যারিয়েট ব্রুক্স

এফএইচবি (FHB)! এমআইকে (MIK)!
১৮৮০র দশক। কানাডাদেশের অন্টারিও প্রদেশের এক্সেটার শহর। ছোট শহর, ছিমছাম শহর। জর্জ আর এলিজাবেথ উওর্ডেনের সংসার। বেশি বড় নয়, মাত্র আট ছেলেমেয়ে। জর্জের আটার কলে বিমা করানো ছিল না, আগুন লেগে সব ধ্বংস হয়ে যায়। অতিথিবৎসল পরিবার, হুট করে গিয়ে ধরুন গিয়ে পড়লেন। না খাইয়ে ওঁরা যেতে দেবেন না। শুধু, মন দিয়ে শুনলে হয়ত বা শুনবেন, ওঁরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছেন, FHB বা MIK।
না, কোন গূঢ় রহস্য নয়। সাধারণ কোড মাত্র। FHB, অর্থাৎ ফ্যামিলি হোল্ড ব্যাক, আর MIK হল মোর ইন কিচেন। দ্বিতীয়টির অর্থ সব ঠিক, খাবারদাবার আছে, আর প্রথমটির অর্থ ভাঁড়ার শূন্য। জর্জ এখন সেলস্ম্যান, তাই টানাটানি।

হ্যারিয়েট সেজ মেয়ে। জন্ম দোসরা জুলাই ১৮৭৬। অঙ্কে বেশ ভাল, তাই ইস্কুল কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে ১৮৯৪ সালে ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ে (McGill University) পড়াশোনার সুযোগ পান। স্কলারশিপের যোগ্যতা ছিল, কিন্তু মহিলা বলে চার বছরের প্রথম দু’বছর জলপানিভাতা পাননি। অনার্সে ফার্স্ট ক্লাস পেলেন অঙ্ক ও প্রকৃতিবিজ্ঞানে (natural philosophy)। অঙ্ককে অসামান্য দক্ষতার জন্য অ্যান মলসন (Anne Molson) মেমরিয়াল প্রাইজ পেলেন। ততদিনে ইংল্যান্ড ছেড়ে ম্যাকগিলে এসে গেছেন নিউজিল্যান্ডের পদার্থবিদ আর্নেস্ট রাদারফোর্ড (Ernest Rutherford)। ব্রুক্স হলেন ম্যাকগিলে রাদারফোর্ডের প্রথম গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট। তড়িৎচুম্বকীয় পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করে ১৯০১ সালে মাস্টার্স ডিগ্রী পেলেন ব্রুক্স। এরপর শুরু হল তেজস্ক্রিয় থোরিয়াম (Thorium) মৌল নিয়ে কাজ। থোরিয়াম থেকে যেটা নির্গত হচ্ছে, সেটা কী? গ্যাস, বাষ্প, নাকি সূক্ষ্ণ পাউডার? ব্রুক্স প্রমাণ করে দিলেন নির্গতমান বস্তুটি আসলে গ্যাস। শুধু তাই নয়, ব্রুক্স এও দেখালেন গ্যাসের আণবিক ভর ২২২, থোরিয়ামের (২৩২) চেয়ে অনেকটাই কম। অতএব গ্যাসটি আদপে থোরিয়ামই নয়, সম্পূর্ণ নতুন একটি গ্যাসীয় মৌল। পরে অনেক গবেষণা ও তর্কবিতর্কের পর তেজস্ক্রিয় এই গ্যাসের নাম রাখা হয় রেডন (Radon)।

বিজ্ঞানে বিদূষী: হ্যারিয়েট ব্রুক্স্‌, নিউক্লীয়ার সায়ান্টিস্টআর্নেস্ট রাদারফোর্ড

তেজস্ক্রিয় প্রতিক্রিয়ার সময় ভরবেগের জেরে তেজস্ক্রিয় পদার্থ এক তল থেকে অন্য তলে যে লাফিয়ে যেতে পারে, সেটাও ব্রুক্সেরই আবিষ্কার। তেজস্ক্রিয়তার সময় পারমাণবিক নিউক্লিয়াস থেকে বিভিন্ন পদার্থ উচ্চগতিতে নির্গত হয়, ঠিক যেমন কামান থেকে গোলা। সাঁ করে গোলা বেরিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভরবেগের নিয়ম মেনে কামানও পেছন দিকে লাফিয়ে যায় খানিকটা। ঠিক তেমনই নিউক্লিয়াস থেকে আলফা বা বিটা রশ্মি নির্গত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কখনও কখনও নিউক্লীয়াসও উল্টো দিকে ছুটে বেরিয়ে যায়। ব্রুক্সের আবিষ্কৃত এই তত্ত্ব পরে কাজে লাগিয়েছিলেন স্বয়ং লিজে মাইটনার ও অটো হান।

এর পর ব্রিন মর ফেলোশিপ পেয়ে (Bryn Mawr Fellowship) রাদারফোর্ডের সুপারিশে কেম্ব্রিজের ক্যাভেনডিশ গবেষণাগারে (Cavendish Laboratory) জে জে টমসনের (JJ Thomson) সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেলেন ব্রুক্স। প্রচুর ভাল কাজ করলেন বটে, কিন্তু টমসন নিজের কাজ নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকতেন, ছাত্রীর কাজ দেখার সময় তিনি পেতেন না।

১৯০৫ সালে নিউ ইয়র্কের বার্নার্ড কলেজে (Barnard College) চাকরি পেলেন ব্রুক্স। পরের বছরই কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (Columbia University) প্রফেসর বার্গেন ডেভিসের সঙ্গে বিয়ের ঠিক হল। বেঁকে বসলেন বার্নার্ড কলেজের ডীন লরা ড্রেক গিল (Laura Drake Gill)। বললেন, “that whenever your marriage does take place it ought to end your official relationship with the college”। ভাই, বিয়ে করবে কর, কলেজে পড়ানোটড়ানো চলবে না। বরের ঘরের মাসি কনের ঘরের পিসি চলবে না।

ব্রুক্স ছাড়ার পাত্রি নন। চিঠি লিখলেন, বললেন নারী হিসাবে আর মানুষ হিসাবে বিয়ে করাটা তাঁর অধিকার। আবার একই সঙ্গে দক্ষ পদার্থবিদ হিসাবে পেশাদারী কাজকর্মেও তাঁর অধিকার আছে বৈকি। ব্রুক্সকে সমর্থন করলেন বার্নার্ডের পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রধান মার্গারেট মল্টবি (Margaret Maltby)। গিল মানলেন না। কলেজের ট্রাস্টিরাই নাকি বলেছেন বিবাহিত মহিলা কখনই সফল গবেষক ও শিক্ষাবিদ হতে পারেন না। দুঃখের বিষয়ে, ব্রুক্স শেষমেশ হার মানলেন। বিয়ে ভেঙে গেল। ব্রুক্স বার্নার্ডে রয়ে গেলেন।

বিজ্ঞানে বিদূষী: হ্যারিয়েট ব্রুক্স্‌, নিউক্লীয়ার সায়ান্টিস্ট
লরা ড্রেক গিল (বাঁদিকে) ও মার্গারেট মল্টবি (ডানদিকে)

বেশিদিনের জন্য নয় যদিও। চাকরি ছেড়ে দিলেন ব্রুক্স। কেন ছাড়লেন, তার কোনও সদুত্তর পাওয়া যায় নি। ব্রুক্সের আলাপ হল রুশ লেখক ম্যাক্সিম গোর্কির সঙ্গে। গোর্কির সঙ্গে গেলেন ইতালির ক্যাপ্রি (Capri) দ্বীপে, সেখানে আলাপ হল মারি ক্যুরির সঙ্গে। কাজ শুরু করলেন ক্যুরির সঙ্গে প্যারিসে, যদিও গবেষণার পেপারে তাঁর নাম থাকত না। পরে ম্যাঞ্চেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে (Manchester University) চাকরির খোঁজ করলেন। সুপারিশ করলেন ফের সেই রাদারফোর্ডই, লিখলেন, “next to Mme Curie she is the most prominent woman physicist in the department of radioactivity”। অর্থাৎ তেজস্ক্রিয় পদার্থবিদ্যায় মারি ক্যুরির পরই (নারীদের মধ্যে) ব্রুক্সের স্থান।

ম্যাঞ্চেস্টারে আর ব্রুক্সের যাওয়া হয়নি। অজানা কোনও কারণে ব্রুক্স তারপর পদার্থবিদ্যা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন। ১৯০৭ সালে ম্যাকগিলের ফ্র্যাঙ্ক পিচারকে বিয়ে করে কানাডার মন্ট্রিয়লে বসবাস শুরু করলেন। তিন সন্তান হল, দু’জন কমবয়সে মারাও গেল। ১৭ এপ্রিল ১৯৩৩ সালে মাত্র ৫৬ বছর বয়সে মারা গেলেন হ্যারিয়েট ব্রুক্স। নেচার পত্রিকায় অবিচুয়ারি লিখলেন স্বয়ং রাদারফোর্ড। মৃত্যুর কারণ লিউকেমিয়া। থোরিয়াম রেডন ইত্যাদি তেজস্ক্রিয় পদার্থ নিয়ে কাজ করার ফল।

এর পরেও প্রায় পঞ্চাশ বছর পর, আশির দশকে, ব্রুক্সের কাজের সঠিক মূল্যায়ন হয়। থোরিয়াম থেকে নির্গত মৌল যে রেডন, এবং এই গবেষণা থেকেই যে নিউক্লীয়ার বিজ্ঞান ফীল্ডটার উৎপত্তি, সেটা বোঝা যায়। অতএব হ্যারিয়েট ব্রুক্সই হলেন বিশ্বের প্রথম নিউক্লিয়ার সায়ান্টিস্ট! শুধু দুঃখ, কাজ যদি চালিয়ে যেতে পারতেন, ইতিহাসে হয়ত মারী ক্যুরির পরেই তাঁর স্থান হত।

মাইটনারঃ আমার কী মনে হয় জানো বাউমশোয়েস্টার? লরা গিল যদি ওই বিয়ে বিয়ে ব্যাপারটা না বাঁধাতেন, হ্যারিয়েট ব্রুক্স আরও অনেকদিন কাজ চালাতে পারতেন। ওই ঘটনাই ওনার মনোবল ভেঙে দেয়। কী অদ্ভুত, তাই না? নারী পেশাদার হিসাবে গবেষণা করতে চায়, আর মানুষ হিসাবে বিয়ে করতে চায়, কিন্তু তাতেও বাধা। এবং বাধাটা কে দিচ্ছে? না, আরেকজন নারী!
গেছোদিদিঃ মল্টবিও নারী, সমর্থন করেছিলেন ব্রুক্সকে।
মাইটনারঃ ঠিক তাই! হ্যাঁ, গিল পরে ট্রাস্টি-ফাস্টিদের এনেছে বটে, আর ট্রাস্টিরা যে পুরুষ সে নিয়ে খুব একটা সন্দেহ নেই। কিন্তু দেখ, নাটকের মূল তিন চরিত্রই মেয়ে, frau। ভিক্টিম frau, ভিক্টিমের পাশে দাঁড়াচ্ছে frau, আবার পেট্রিয়ার্কির বুলিও কপচাচ্ছে সেই নারীই।
গেছোদিদিঃ আসল কারণটা বোধহয় মেটার্নিটি লীভ।
মাইটনারঃ তা তো বটেই তা তো বটেই। মেয়েরা কাজ করতে করতে বিয়ে করবে? আখটুঙ্গ! তার মানেই বাচ্চা হবে, তার মানেই ছুটি নেবে। সর্বনাশ! তাহলে কী হবে? হাউ ডেয়ার উইমেন ডু দিস? যত্তসব। যাক গে, বাউমশোয়েস্টার, ইডা নডাক আর ইরেন ক্যুরির গল্প ডিনারের পরে হোক, কেমন? আর, ইয়ে, তুমি তো ভবিষ্যতের খবরটবর জানো, ভবিষ্যতে এই frauদের বিয়ে বাচ্চা হওয়া এইসব নিশ্চয়ই কর্মক্ষেত্রে কোনও প্রভাব ফেলবে না আর? কী বল অটো, ভবিষ্যতে মানুষ নিশ্চয়ই আরেকটু সভ্য হবে, ja? ওঃ, ডিনার? Wunderbar!

চুপ করে রইলাম। কী আর বলব? ২০১৭ সালেও নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আর্ডের্নকে (Jacinda Ardern) একই প্রশ্ন করা হয়। বিয়েবাচ্চা, না কেরিয়ার? “আজও” হাজার হাজার নারীকে একই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়।

চুপ করে রইলাম।

সোঘো যাঁর সিক্রেট আইডেন্টিটি তিনি পদার্থবিদ্যার লোক। থিওরেটিকাল ফিজিক্স নিয়ে গবেষণা করেটরে এখন ইংরিজি ও বাংলায় বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখি করেন। জীবনে প্রচুর টেনিদা, জটায়ু , টিনটিন , অ্যাস্টেরিক্স পড়ার সুবাদে সিরিয়াস থাকার ও লেখার প্রাণপণ চেষ্টা করেও প্রবলভাবেই ব্যর্থ হন।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা