সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo


তিন লাইনে সারিবদ্ধ হয়ে যানবাহন চলছে। এক লাইনে মোটরসাইকেল আর রিকশা, এক লাইনে মাঝারি যানবাহন আর এক লাইনে ভার যানবাহন। এই তিনটা লাইনের পর সবচেয়ে ডানপাশে রাস্তার একটা অংশ ফাঁকা রয়েছে। এটা ইমার্জেন্সি লেন, যেখান দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সগুলো যাচ্ছে। এমন শৃঙ্খলা মেনে যানবাহন চলাচলের কথা শুনে কী মনে হচ্ছে? এটা ইউরোপ বা আমেরিকার কোনো দৃশ্য?

একদমই না! তোমার এই ধারণাটা হতেই পারে, কিন্তু ভুলটা ভেঙে যাবে যখন দেখবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ব্যাগ কাঁধে, স্কুল-কলেজের ইউনিফর্ম পরা এক ঝাঁক ছেলেমেয়ে প্রত্যেকটা গাড়ির লাইসেন্স চেক করছে!

হ্যাঁ, গত কয়েকদিন ধরে এমন বিস্ময়কর দৃশ্যই দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার রাস্তায়।

ঢাকার রাজপথ এখন ছোটদের পদচারণায় মুখরিত। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে লাইসেন্স বা ফিটনেসবিহীন গাড়িচালকের শাস্তি- সবকিছুই করছে ছোটরা।

আর তাতে অসহনীয় জ্যামের শহর ঢাকার চিত্র পালটে গেছে দু’দিনেই। এতদিনে বড়রা যা করতে পারেননি, ছোটরা রাস্তায় নেমে দু’দিনে তাই করে ফেলেছে! রাস্তায় যান চলাচলে শৃঙ্খলা এনেছে তারা সবাইকে অবাক করে দিয়ে।

কিন্তু কেন হঠাৎ ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকায় ছোটরা রাস্তায় নেমে এলো?

এর পেছনের ঘটনাটা খুব বেশি মন খারাপ আর কষ্টের। গত ২৯শে জুলাই ঢাকার কুর্মিটোলায় বিমানবন্দর সড়কের পাশে ফুটপাথে দাঁড়িয়ে ছিল শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। হঠাৎ একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাদের গায়ের উপর উঠে যায়। এতে দুইজন মারা যায় এবং বেশ কয়েকজন গুরুতরভাবে আহত হয়।
এই ঘটনার পর থেকেই নিরাপদ সড়কের দাবিতে ঢাকার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। এরপর তাদের সঙ্গে যোগ দেয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরাও।

কিন্তু তাদের আন্দোলনটা একদমই অন্যরকম। তারা শুধু প্ল্যাকার্ড-পোস্টার নিয়ে রাস্তায় দাঁড়ায়নি, সঙ্গে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে যা যা করা দরকার, তা করে দেখিয়েছে বড়দেরকে। তারা ঢাকার রাস্তায় ট্রাফিক আইন অমান্যকারীদেরকে সার্জেন্টের হাতে তুলে দিয়েছে শাস্তির জন্য, শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে যান চলাচলের ব্যবস্থা করে জ্যাম সমস্যার সমাধান করে ফেলেছে বেশ কিছুটা। সেই সঙ্গে তারা নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে ৯ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।

তাদের এই সুশৃঙ্খল আন্দোলন অবাক করে দিয়েছে সবাইকে। ছোটরা এত গুছিয়ে আন্দোলন করতে পারে, দেশের সড়কব্যবস্থার নানামুখী সমস্যার এত চমৎকার সমাধান দিতে পারে, সেটা দেখে বিস্মিত বড়রা। শুধু তাই নয়, ছোটদের বুদ্ধিদীপ্ত প্ল্যাকার্ড-পোস্টারও হতবাক করে দিয়েছে বড়দেরকে। কারো কারো হাতে পোস্টারে লেখাঃ 'রাস্তা বন্ধ। রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ চলছে। সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখিত।'

আবার কারো প্ল্যাকার্ডে লেখাঃ 'যদি তুমি ভয় পাও তবে তুমি শেষ, যদি তুমি রুখে দাঁড়াও তবে তুমি বাংলাদেশ।'

সরকার সব দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলেও শিক্ষার্থীরা সেগুলো বাস্তবায়িত হতে দেখার আগে পর্যন্ত মানতে পারছে না।
দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত ছোটরা কিছুতেই ক্লাসরুমে ফিরে যেতে চায় না। তাই এখনও ঢাকার রাস্তায় দেখা যাচ্ছে স্কুল-কলেজের ইউনিফর্ম পরা ছোটদেরকে।

 

ছবিঃ উইকিপিডিয়া

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা