সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo

(১)

“রাতুল নিজের ঘরে বসে পড়াশুনো করো”।
“ঠিক আছে মাম”।
ঘরটা বেশ অন্ধকার, শুধু একটা নীল আলো জ্বলছে কাঁচের ভেতর।
“এই জেলি তোর গরম লাগে না? হমমমম... সারাদিন জলের মধ্যে ঘুরে বেড়ালে কার আর গরম লাগবে? দাঁড়া ফ্যানটা চালাই।
“উফফফফ... ফ্যান-এর সুইচটা এত উপরে”। টক করে বৈদুতিক ফ্যানটা চলল।
“জানিস মা-এর একটা বন্ধু এসেছে, কি যেন নাম বলছিল। হ্যাঁ হ্যাঁ সোনামণি। আমি যখন ম্যাথ্‌স বুক নিতে গেছিলাম তখন শুনলাম। কিন্তু জেলি সোনামণি বাচ্চাদের নাম হয়। ওই অত বড় লোকটার নাম সোনামণি!!!”।
রাতুলের চোখ জোড়া খানিক ক্ষণ অনুসরন করল ছোট্ট লাল প্রাণীটাকে।
“এই চল আমরা টিভি দেখি”।
ছোট্ট অথচ নিপুন হাত রিমোটের উপর চলতে থাকল। আর দেখতে দেখতেই টিভির পর্দাটা আলোকিত হয়ে উঠল। তারপর হরেক রকমের জিনিসপত্র ভেসে উঠতে থাকে সেই বড় সোনালি পর্দাটায়। এক জায়গায় এসে আটকে গেল।
“জেলি দেখ দেখ কত মাছ। দেখ কি সুন্দর ঘুরে বেরাচ্ছে জলের নীচে”।
টিভির পর্দায় ফুটে উঠছে অসংখ্য রংবেরঙের ছোট্ট বড় মাপের মাছ। মাছগুলো ঝাঁকে ঝাঁকে সমুদ্রবিহার করতে বেরিয়েছে। রাতুল তার ছোট্ট চোখগুলো ছানাবড়া করে সেদিকেই দেখছিল। কত মাছ আর কত জল।
“দেখ জেলি তোর বন্ধুগুলো কেমন খেলে বেড়াচ্ছে জলে”।
রাতুল দেখল জেলি অ্যাকুইরিয়ামের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত সাঁতার কেটে বেড়াচ্ছে।
“হ্যাঁ তোকে এই ছোট্ট জায়গাতে একাই থাকতে হয়”।

রাতুলের মুখটা বেশ গোমড়া হয়ে গিয়েছিল। একবার তার দৃষ্টি আলোকিত পর্দার দিকে আর পরক্ষণেই তার দৃষ্টি ঘুরে স্থির হচ্ছিল তার ছোট্ট পোষ্যটির উপর, যে নাকি কাঁচের বাক্সের কোণায় চুপটি করে বসেছিল।



(২)

“পাপা আমি জেলিকে খেতে দেব?”
“হ্যাঁ হ্যাঁ দাও, একটুখানি জলের উপর ছড়িয়ে দিবি, ঠিক আছে?”
“ঠিক আছে”
জলে খাবার ছড়িয়ে দিতে দিতে রাতুলের উত্তেজিত কিন্তু চাপা কণ্ঠস্বর।
“জানিস আজ বাবা মা চুপি চুপি ঝগড়া করছিল। মা-এর চোখে জল ছিল। আচ্ছা জেলি তুই যদি কাঁদিস তাহলে আমি কি করে বুঝতে পারব? তুই তো সব সময় জলের মধ্যে থাকিস”।
"রাতুল শুতে এস।"
“যাই, মা ডাকছে। তুই ঘুমিয়ে পড়। গুড নাইট।"

রাতে বড় অদ্ভুত একটা স্বপ্ন দেখল রাতুল। দেখল একটা ছোট্ট ফিশ ট্যাঙ্ক-এর মধ্যে আটকে আছে সে। যেখানে নড়াচড়া করার সামান্য জায়গাটুকুও সে পাচ্ছে না। আর সামনে তাকাতেই তার দৃষ্টি আরও হতবাক হয়ে উঠল। জেলি জলের মধ্যে নেচে বেরাচ্ছে। কিছুদিন আগেই ও যে হিন্দি গানটা টিভিতে শুনেছে সেই তালেই জেলি-র কোমর দুলছে। আর এদিকে রাতুলের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছে এই ছোট্ট পরিসরে। রাতুল কিছু বুঝতে না পেরে জেলিকে একবার খুব জোরে ডাকল। কিন্তু তাতেই কিছুটা জল তার মুখের ভেতর ঢুকে গেল। রাতুলের মনে হচ্ছিল এবার সে মরে যাবে। শেষবারের মতো মতো পা-টাকে ঠেলে বাইরে বেরতে চাইল। কিন্তু একি, এখানে দরজা কোথা থেকে এল। দরজাটা দড়াম করে বন্ধ হয়ে গেল। রাতুলের খুব জোর কান্না পেল। কিন্তু তার পরক্ষণেই দেখল বড় দরজাটা আস্তে আস্তে খুলে যাচ্ছে। জেলি এসে দরজাটা খুলছে। কিন্তু ওখান থেকে রাতুলকে বের না করে জেলি আবার চলে গেছে নাচতে। আবার সে কোমর দুলিয়ে দুলিয়ে নাচছে।

দীপশিখা তরফদার পেশায় লেখক ও সাংবাদিক, সহ-সম্পাদক হিসেবে কলকাতার একটি প্রকাশনা সংস্থায় কর্মরত। বইয়ের দুনিয়ায় বিচরণে সর্বদা আগ্রহী ও কল্পনার জগত সব সময় হাতছানি দেয় তাঁকে। ফাঁক পেলেই সাদা কাগজ লিখে ভরিয়ে দেন।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা