সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
papa panov's special christmas

সেদিন ছিল ক্রিস্‌মাস্‌ ইভ, অর্থাৎ কিনা বড়দিনের আগের দিন। যদিও ঘড়ির সময়ে তখনো শেষ দুপুর, কিন্তু রাশিয়ার সেই ছোট্ট গ্রামের বাড়িগুলো আর দোকানগুলোর আলো ধীরে ধীরে জ্বলতে শুরু করেছিল - শীতের ছোট দিন যে প্রায় শেষ হয়ে আসছিল ! সারাদিন বাইরে খেলে বেড়াচ্ছিল যে ছেলেপুলের দল, তারা সব্বাই দুদ্দাড় বাড়ি ফিরতে লাগ্‌ল। একটু পরে বন্ধ জানালার শার্সি-কপাটের ভেতর থেকে তাদের চিৎকার-চেঁচামেচির আওয়াজ অল্পবিস্তর শোনা যেতে থাকল।

গ্রামের মুচি, বৃদ্ধ পানোভ বাবা, নিজের দোকান থেকে বেরিয়ে একবার চারিদিকে ভাল করে দেখলেন। চারিদিকে কত হই-হল্লা, আলোর রোশ্‌নাই; আশেপাশের বাড়িগুলির থেকে ক্রিস্‌মাসের নানা সুস্বাদু রান্নাবান্নার হাল্কা হাল্কা গন্ধ ভেসে আসছে- সবকিছু মিলে মিশে তাঁর নিজের পুরনো জীবনের কথা মনে পড়ে গেল - যখন তাঁর স্ত্রী বেঁচে ছিলেন, ছেলেমেয়েরা কাছে ছিল, তখন ঠিক এইরকমই আনন্দ হত। এখন তারা কেউই আর কাছে নেই। পানোভবাবা এমনিতে বেশ হাসিখুশি মানুষ, তাঁর গোল স্টিলের ফ্রেমের চশমার পেছন থাকা চোখ দুটিতে সব সময়েই আনন্দ চিকচিক করে। কিন্তু আজকে তাঁকে বেশ গম্ভীর দেখাচ্ছে। খানিক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকে, পানোভ বাবা ধীরস্থির পায়ে ঘরের ভেতরে ফিরে গেলেন। জুতো সেলাইয়ের কাজ-কারবার চলত তাঁর ছোট্ট ঘরেরই এক কোণে। গ্রামের লোকজনের জন্য নতুন জুতো তৈরি করে দিয়ে বা পুরনো জুতো মেরামত করে তাঁর দিব্যি চলে যেত- শীতে শরীর গরম রাখার জন্য কফি, আর পেট ভরানোর জন্য রুটি আর বাঁধাকপির যোগাড় তিনি সহজেই করে নিতে পারতেন। গ্রামের ছোট-বড় সবাই তাঁকে ভদ্র ব্যবহারের জন্য পছন্দ করত, সম্মান করে 'পানোভ বাবা' বলে সম্বোধন করত।

দরজা-জানালাগুলিকে ভাল করে বন্ধ করে পানোভ বাবা ঘরের তেলের বাতিটি জ্বেলে দিলেন, কফি বানানোর জন্য উনুনে জল গরম করতে বসালেন। তারপরে পুরনো দিনের কথা মনে করতে করতে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে পাপা পানোভ নিজের পুরনো আরামকেদারাটায় বসলেন।

পানোভবাবা এমনিতে বইপত্তর বেশি পড়েন না, কিন্তু সেদিন অনেকদিন পরে তিনি খয়েরি হয়ে যাওয়া পুরনো বাইবেলটি বার করে আবার বড়দিনের গল্পটি পড়তে শুরু করলেন। সেই যে সেই গল্প- যীশুর বাবা আর মা, যোসেফ আর মেরি, পথশ্রমে ক্লান্ত হয়ে বেথেল্‌হেমে এসে পৌঁছালেন, কিন্তু কোত্থাও থাকার জায়গা পেলেন না...অবশেষে এক গোয়ালে খড়ের গাদায় আশ্রয় নিলেন। সেইখানেই শীতের রাতে যীশুর জন্ম হল।

"আহারে, আহারে !" নিজের মনেই বলে উঠলেন পানোভ বাবা, " ওঁরা যদি আমার কাছে আসতেন! আমি নিজের বিছানাটা ওঁদেরকে ছেড়ে দিতাম, আমার নকশী কাঁথাখানা দিয়ে ছোট্ট বাচ্চাটাকে জড়িয়ে রাখতাম গো..."

তারপরে তিনি আবার পড়তে লাগলেন। যীশুর জন্য পূব দেশের তিন জ্ঞানী মানুষ কত দামি দামি জিনিষ নিয়ে এসেছিলেন, সেইসব বর্ণনা পড়ে পানোভ বাবার বড় দুঃখ হল- "আহারে, আমার কাছে তো কোন দামি জিনিষই নেই, যা শিশুটিকে উপহার দিতে পারি..."

খানিক্ষণ গোমড়া মুখে বসে থাকার পরেই পানোভ বাবার মুখে হাসি ফুটে উঠল। হাত বাড়িয়ে পাশের উঁচু তাক থেকে একটা ছোট, পুরনো, ধুলোমাখা বাক্স নামিয়ে আনলেন তিনি। বাক্সের ভেতরে ছিল ছোট্ট একজোড়া চামড়ার জুতো। পানোভবাবার তৈরি করা সেরা জুতো সেটা। যেমনটি ভেবেছিলেন, ধুলোমাখা বাক্সের ভেতরে তেমনটিই রয়েছে। "ছোট্ট খোকাটাকে আমি এইগুলোই দেব..."- এই ভেবে পরম যত্নে জুতোজোড়াকে আবার বাক্সে ভরে রাখলেন তিনি।

সারাদিন কাজ করার ক্লান্তিতে পানোভ বাবার দুচোখ জড়িয়ে আসছিল। বইটাকে আর ভালো করে পড়তেও পারছিলেন না। এক সময়ে তাঁর চোখ বুজে এল, আর পানোভ বাবা এক লহমায় ঘুমিয়ে পড়লেন।

ঘুমের মধ্যে বুড়ো পানোভ স্বপ্নে দেখলেন, কে যেন তাঁর ঘরে এসেছেন। স্বপ্নে যেমন হয়, ঠিক তেমনই তিনি বুঝতে পারলেন, তাঁর ঘরে এসেছেন স্বয়ং যীশু।

papa panov's special christmas

"পানোভ বাবা, তুমি চেয়েছ আমি যেন তোমার বাড়ি আসি, " সুমিষ্ট গলায় বললেন যীশু, " আগামিকাল বড়দিন। তুমি খেয়াল রেখ, আমি আসব তোমার বাড়ি। ভাল করে খেয়াল রেখ, কারণ আমি কিন্তু বলব না কোন জন আমি..."

পানোভ বাবার যখন অবশেষে ঘুম ভাঙল , তখন গীর্জার ঘন্টাগুলি ঢং ঢং করে বাজছে, আর জানালার শার্সির ফাঁক ফোকর দিয়ে হাল্কা আলোর রেখা দেখা যাচ্ছে। " কি কান্ড ! আজ তো বড়দিন"- বলে পানোভ বাবা উঠে আড়মোড়া ভাঙতে শুরু করলেন, ঠাণ্ডায় হাত পা সব যে জমে গেছিল প্রায় ! আর তখনি তাঁর রাতের স্বপ্নের কথা মনে পড়ল! খুশিতে ভরে উঠল তাঁর মুখ। আজকে স্বয়ং যীশু আসবেন তাঁর বাড়িতে। তাঁকে চিনে নিতে হবে...কেমন দেখতে হবেন তিনি? ছোট্ট এক শিশু? নাকি এক যুবক, যিনি পেশায় একজন ছুতোর? নাকি রাজার রাজা, ঈশ্বরের পুত্র, চতুর্দিক আলোকিত করে আসবেন? - আজ সারাদিন খুব ভাল করে লক্ষ্য রাখতে হবে, যাতে যীশু এলেই তিনি চিনে নিতে পারেন।

নিজের ছোট্ট ঘরখানিকে গুছিয়ে নিয়ে, পানোভ বাবা জানালাগুলিকে খুলে দিলেন। উনুনে আঁচ বাড়িয়ে ভাল করে কফি তৈরি করার জন্য জল গরম করতে বসালেন।রাস্তায় কাউকেই দেখা যাচ্ছিল না, একমাত্র এক ঝাড়ুদার রাস্তা পরিষ্কার করছিল। তাকে পোষাক বড়ই নোংরা, মুখখানা দুঃখী! হওয়ারই কথা, এই ঘোর শীতে, ভয়ানক কুয়াশার মধ্যে, উৎসবের দিনে কারই বা কাজ করতে ভাল লাগে?

পানোভবাবা দোকানের দরজাটা অল্প খুললেন; এক ঝলক হিমঠাণ্ডা বাতাস ফাঁক দিয়ে ঢুকে পড়ল। তিনি হাঁক পেড়ে বললেন- "ওহে, এসে এক কাপ কফি খেয়ে যাও! ঠাণ্ডার মধ্যে ভাল লাগবে...!"

ডাক শুনে ঝাড়ুদার হাঁ করে খানিক তাকিয়ে রইল। তারপরে ঝাঁটা ফেলে রেখে সে রাস্তা পার হয়ে এল। উনুনের আঁচে গরম ঘরটাতে ঢুকে তার বড়ই আরাম লাগল। দুটো লাল, ঠাণ্ডায় জমে যাওয়া হাতে কফির কাপটাকে জড়িয়ে সে ধীরে ধীরে চুমুক দিল। উনুনের আঁচে তার আধভেজা ঠাণ্ডা জামাকাপড়গুলি শুকিয়ে হাল্কা হাল্কা বাষ্প বেরোতে থাকল।

তাকে আরামে কফি খেতে দেখে পানোভ বাবারও বেশ তৃপ্তি হল। কিন্তু তাঁর চোখ বারবার রাস্তার দিকে চলে যাচ্ছিল- আজকের বিশেষ অতিথিকে দেখতে যেন ভুল না হয়...

"কেউ আসবে বুঝি?" ঝাড়ুদার জিজ্ঞেস করল। পানোভ বাবা তখন তাকে নিজের স্বপ্নের কথা খুলে বললেন।

সব শুনে ঝাড়ুদার অবশেষে অল্প হাসল -" তুমি বড়ই ভাল লোক পানোভবাবা। আজকের দিনে তুমি আমাকে ডেকে কফি ভাগ করে খেলে, এরকম কিছু আমি আশাই করিনি। তোমার ঘরে নিশ্চয়ই যীশু আসবেন"।

ঝাড়ুদার চলে গেল। পানোভবাবা দুপুরের খাওয়ার জন্য বাঁধাকপির স্যুপ রান্না করার ব্যবস্থা করলেন। উনুনের ওপর স্যুপের পাত্র বসিয়ে তিনি আবার দরজায় গিয়ে দাঁড়ালেন। ঘোর ঠাণ্ডা, ছুটির দিন, কুয়াশা এখনো কাটেনি, তাই রাস্তায় কোন লোকই ছিল না।

কিন্তু একটু পরেই তিনি লক্ষ্য করলেন, একটু দূরে একটি অল্পবয়সী মেয়ে। সে খুব ধীরে ধীরে রাস্তার পাশের বাড়িগুলির দেওয়াল ধরে হাঁটছে। তাকে দেখে মনে হচ্ছে সে বড়ই ক্লান্ত আর অসুস্থ। হাতে কিছু একটা ধরে রয়েছে সে। মেয়েটি কাছাকাছি এলে পানোভবাবা বুঝতে পারলেন, তার কোলে রয়েছে পাতলা একটি কাপড়ে জড়ানো একটি ছোট্ট মেয়ে। মেয়েটি এবং তার কোলের শিশুটির মুখ শীতে এবং যন্ত্রণায় এতটাই কাতর যে তাদের দেখে পানোভবাবার বেজায় কষ্ট হল।

তিনি বাইরে বেরিয়ে এসে মেয়েটিকে বললেন, "তুমি একটু ভেতরে এস। তোমাদের দুজনেরই তো একটু বিশ্রামের প্রয়োজন। এসে আগুনের পাশে একটু বস।"

দয়ালু মানুষটির কথা শুনে, মেয়েটি তার পিছু পিছু ঘরে এসে সেই বিশাল আরামকেদারাটা বসল। নিশ্চিন্তে একটা বড় নিশ্বাস ফেলল সে।

"তোমার ছোট্ট সোনাটার জন্য একটু দুধ গরম করি আমি," বললেন পানোভ বাবা। " আমারও তো ছেলেমেয়ে ছিল, আমার অভ্যাস আছে, আমি তোমার মেয়েকে খাইয়ে দিতে পারব"।

তিনি দুধ গরম করে ছোট্ট মেয়েটিকে চামচ করে ধীরে ধীরে খাইয়ে দিতে লাগলেন। সাথে সাথে চুল্লীর আঁচে তার ঠাণ্ডা পা গুলিকে সেঁকে দিতে থাকলেন।

"ওর দেখছি এক জোড়া জুতো চাই," শিশুটির খালি পা'দুটির দিকে তাকিয়ে বললেন বুড়ো পানোভ।

" আমি বড়ই গরিব, আমার কেউ নেই, " শিশুটির মা বিমর্ষমুখে বলল, " আমি পাশের গাঁয়ে কাজের খোঁজে যাচ্ছি। আমি তো ওকে জুতো কিনে দিতে পারব না..."

মেয়েটির কথা শুনতে শুনতে পানোভ বাবার মাথায় হঠাৎ এক চিন্তা এল ! গতরাতের সেই ছোট্ট জুতোজোড়ার কথা মনে পড়ল তাঁর - কিন্তু তিনি তো ভেবেছিলেন, সেগুলি যীশুকে দেবেন, তাহলে?- খানিক ভেবে পানোভ বাবা সিদ্ধান্ত নিলেন।

তিনি ছোট্ট জুতোজোড়া বাক্স থেকে বের করে শিশুটির মা'কে দিয়ে বললেন, "ওকে এগুলি পরিয়ে দেখ তো!" - দেখা গেল জুতোজোড়া যেন ছোট্ট মেয়েটির পায়ের একেবারে সঠিক মাপে তৈরি। পায়ে জুতো পরে তার ভারি আরাম হওয়াতে সে খুব আহ্লাদি একখানা হাসি দিল। তার হাসি দেখে তার মা'ও হেসে উঠল।

মেয়েকে কোলে তুলে নিয়ে চলে যাওয়ার আগে সে পানোভ বাবাকে বলল, "আপনি আমাদের এত দয়া করলেন। এই বড়দিনে আপনার সব স্বপ্ন পূরণ হোক।"

কিন্তু পানোভ বাবা অন্য কথা ভাবছিলেন। সত্যি সত্যি কি তাঁর এই বড়দিন এক বিশেষ বড়দিন হবে? তাঁর স্বপ্ন পূরণ হবে? তিনি তাঁর বিশেষ অতিথিকে হারিয়ে ফেললেন না তো? ততক্ষণে বেলা বেড়ে গেছে, রাস্তায় ধীরে ধীরে লোকজনের চলাচল বেড়েছে। কিন্তু সেইসব মুখ তাঁর পরিচিত, তারা সবাই তাঁর পাড়ার, বা গ্রামের লোক, তাঁর বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে তারা হাত নেড়ে, মাথে নেড়ে বা একগাল হেসে তাঁকে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে গেছে। এছাড়াও ছিল ভিখারীর দল, পানোভ বাবা তাদের কাউকে গরম স্যুপ দিয়েছেন, কাউকে রুটির টুকরো খেতে দিয়েছেন। কিন্তু সর্বদাই তাঁর চোখ থেকেছে রাস্তার দিকে, সেই অদেখা অচেনা অতিথির খোঁজে।

শীতের ছোট বেলা আবার খুব তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে এল। ধীরে ধীরে গ্রামের বাড়িঘরগুলির ওপরে সন্ধ্যার ছায়া ঘনিয়ে আসছিল। সেই আবছা আলোতে রাস্তার মানুষদের মুখ ভাল ভাবে দেখা যাচ্ছিল না- রাস্তায় বেশি লোক ছিলও না, বেশিরভাগ মানুষই ঠাণ্ডার জন্য ঘরে ঢুকে গেছিল। বিষণ্ণ মনে পানোভ বাবা ঘরে দোর দিলেন, জানলার কপাট বন্ধ করলেন, তার পরে ধীর গতিতে গিয়ে নিজের আরামকেদারাটাতে বসলেন।

ওটা তাহলে শুধুমাত্র স্বপ্নই ছিল। যীশু তো এলেন না !

মূহুর্তের মধ্যেই পানোভ বাবা বুঝলেন, ঘরে তিনি আর একা নন।

papa panov's special christmas

এ তো স্বপ্ন হতে পারে না, তিনি তো জেগেই আছেন। প্রথমে তাঁর মনে হল তাঁর সামনে এসে সেইসব মানুষেরা এসে দাঁড়িয়েছে, যারা সারাদিন কোন না কোন সময়ে তাঁর কাছে এসেছিল - সেই ভোরবেলার ঝাড়ুদার, তারপরে সেই ছোট্ট শিশুটিকে নিয়ে ক্লান্ত মেয়েটি, সেইসব ভিখারীরা, যাদের তিনি সারাদিন ধরে খাইয়েছেন। তারা একে একে তাঁর পাশ দিয়ে চলে যাওয়ার সময়ে বলল, " আমাকে তুমি দেখনি, পানোভ বাবা?"

"তোমরা কারা?" অবাক বিস্ময়ে প্রশ্ন করলেন বৃদ্ধ পানোভ।

তখন তিনি শুনতে পেলেন আগের রাতের সেই সুমিষ্ট কন্ঠস্বর,

"আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম, আর তুমি আমাকে খেতে দিয়েছিলে; আমার পরণের কাপড় ছিল না, তুমি আমাকে কাপড় দিয়েছিলে। আমায় তুমি শীতের দিনে উষ্ণতা দিয়েছে। আমি সেই সমস্ত মানুষের মধ্যে ছিলেম, যাদের তুমি আজকে আদর যত্ন করেছ, সাহায্য করেছ।"

তারপরে চতুর্দিক নিঃস্তব্ধ হয়ে গেল। শুধুমাত্র বড় দেওয়ালঘড়িটার টিক টিক শব্দ শোনা যেতে লাগল। সারা ঘরটা জুড়ে যেন বিরাজ করতে লাগল পরম শান্তি আর আনন্দ। সেই আনন্দ ধীরে ধীরে ভরিয়ে দিল বুড়ো পানোভ বাবার মন, সেই অপার আনন্দে তাঁর ইচ্ছা করল জোরে জোরে গেয়ে উঠতে, হেসে উঠতে, নেচে উঠতে।

" তাহলে যীশু সত্যিই এসেছিলেন," নিজের মনে বলে উঠলেন পানোভ বাবা।


(১৮৮৮ সাল নাগাদ , সাধারণ মানুষদের বাইবেলের কথা এবং যীশুর উপদেশ সহজ ভাষায় বোঝানোর জন্য মূল গল্পটি লিখেছিলেন ফরাসী ধর্মযাজক ও লেখক রুবেন সেইলেন্স। পরে রুশ সাহিত্যিক লিও টলস্টয় ফরাসী গল্পটিকে অনুসরণ করে 'পাপা পানোভের বিশেষ বড়দিন' গল্পটি লেখেন। ছোটদের জন্য জনপ্রিয় এই বড়দিনের গল্পটি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নানাভাবে পুনর্কথিত হয়েছে। এই বড়দিনে ইচ্ছামতীর তরফ থেকে গল্পটি রইল সবার জন্য।)


ছবিঃপারিজাত ভট্টাচার্য্য

মহাশ্বেতা রায় চলচ্চিত্রবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করেন। ওয়েব ডিজাইন, ফরমায়েশি লেখালিখি এবং অনুবাদ করা পেশা । একদা রূপনারায়ণপুর, এই মূহুর্তে কলকাতার বাসিন্দা মহাশ্বেতা ইচ্ছামতী ওয়েব পত্রিকার সম্পাদনা এবং বিভিন্ন বিভাগে লেখালিখি ছাড়াও এই ওয়েবসাইটের দেখভাল এবং অলংকরণের কাজ করেন। মূলতঃ ইচ্ছামতীর পাতায় ছোটদের জন্য লিখলেও, মাঝেমধ্যে বড়দের জন্যেও লেখার চেষ্টা করেন।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা