সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
শুঁড়ের ওপর গুড়াই

বিজুর সঙ্গে গুড়াইয়ের আলাপ বেশিদিনের নয়, তবে এর মধ্যেই ও গুড়াইয়ের খুব কাছের হয়ে গেছে। কারণ খুঁজতে গেলে হয়তো মনে হবে গুড়াই আর বিজু সমবয়সী, তাই। এই জঙ্গলের মধ্যে এসে গুড়াই আর কাকেই বা পাবে? তবে এরকমভাবে বললে বিজুকে ছোট করা হয়, বিজু যে ভীষণ স্পেশাল তা এই গরুমারা জঙ্গলের অনেকেই জানে, সঙ্গে আমরাও।

গুড়াই যখন বাবার চাকরিসূত্রে বাবা-মায়ের সঙ্গে এই লাটাগুড়ি অঞ্চলে এসেছিল, ও ভীষণই মনমরা হয়ে গিয়েছিল। ও ওর বন্ধুদের থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছিল বলেই হয়তো সবচেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছিল। মা বুঝলেও বাবা যেন বোঝেনি, তাই আসতেই হয়েছিল ওদের। এইজন্য বাবার উপর একটা রাগও ছিল ওর কিছুদিন। ওর বাবা ফরেস্ট অফিসার হওয়ায় একটা ভালো বাংলোই পেয়েছে ওরা, কিন্তু বাংলোটা বড় নির্জন। বাজারের দিকে একটা বাড়ি নেওয়ার জন্য ওর মা জোরাজুরি করলেও বাবা এখনও আমল দেয়নি, শুরুর দিনই বলেছিল কিছুমাস এখানে থেকে পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে। জঙ্গলের থেকে ভালো নাকি কিছু হয় না। কিন্তু গুড়াইয়ের তো সমুদ্র ভালো লাগে, সেখানে গেলে ও আনন্দের সঙ্গে মানিয়ে নিত। কিন্তু এসব ও বাবাকে বলতে যায়নি, বাবার সঙ্গে যে একটা কোল্ড ওয়ার ও চালাচ্ছিল, তা কি বাবা বুঝেছিল? বাবা ওকে নিয়ে রোজ ভোরে আর বিকেলে বেরোলেও ওর মন ভালো হতো না, বরং ও মোবাইল, ভিডিও গেমস নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করতো। এরকমই একদিন বিকেলে ওরা জিপসিতে থাকাকালীন দেখতে পেয়েছিল সেই অদ্ভুত ঘটনা। দেখেছিল, একটা হাতির দল ওদের সামনে রাস্তা পারাপার করছে। গাড়ি থামিয়ে স্টার্ট বন্ধ করে ওরা চুপচাপ বসেছিল যাতে হাতির দল নির্বিঘ্নে রাস্তা পেরোতে পারে। আর তখনই ও হাঁ করে দেখেছিল, এই চোদ্দ-পনেরোটি হাতির দলের একদম সামনের সারির একটি হাতির শুঁড়ের উপর বসে আছে একটি ওরই বয়সী ছেলে। কী খোশমেজাজে ছেলেটি রাজার মতো বসেছিল, দুলতে দুলতে ভাসতে ভাসতে যেন কোথায় যাচ্ছে তার কোনও চিন্তা নেই। ওরা কেউ কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই ওদের ড্রাইভার ভোলাদা বলেছিল, "স্যার, ও বিজু। দূর থেকে দেখেও ওকে চেনা যায়। একমাত্র ওই এই জঙ্গলের সবার এত কাছে যেতে পারে, ওদের সঙ্গে থাকতে পারে। ওকে দেখে আমরা সবাই অবাক হয়ে যাই। আপনাদের বাংলো থেকে দক্ষিণদিকে গেলে জঙ্গলের শেষ প্রান্তে ওদের বাড়ি। ওদের বাড়ি গেলেই দেখবেন নানা পাখি, নানা পশুর আনাগোনা। সবসময় যে ওদের বাড়িতে পশুপাখিগুলো থাকে তা নয়, তবে যেন বন্ধুর মতো সবাই আসে বিজুকে দেখতে, তারপর যেন দেখা করে, খেলাধুলো করে চলে যায়। জানেন স্যার, চোরাচালানকারী যে দল…"
গুড়াইয়ের বাবা দিগ্বিজয় রায় ভোলাকে থামিয়ে বলে উঠলেন, "ও, এই তাহলে সেই ছেলে, এ যে এত ছোট, ভাবিনি। যাইহোক, চলো। "

সবাই শেষ অবধি ব্যাপারটাকে স্বাভাবিকভাবে নিলেও গুড়াই যেন পারেনি, ওর বিস্ময় শেষ হচ্ছিল না। কী করে একটা ওরই বয়সী ছেলে এই ভয়ঙ্কর পশুগুলোর মাঝে, পশুগুলোর সঙ্গে, এমনকী ওদের গায়ে চেপে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ছোটবেলায় তো ওরা যখন জলদাপাড়ার দিকে জঙ্গল সাফারিতে গিয়েছিল, তখন হাতির পালের তাড়া খেয়েছিল। সেই ঘটনা মনে পড়লেই ও শিউরে ওঠে। তাছাড়া বাবা আর ভোলাদা কী যেন বলছিল চোরাচালানকারী দলের কথা… সেটা কী ব্যাপার? আর ঐ হাতির শুঁড় কী করে পারে অত ওজন তুলতে? ওর মনে অদম্য কৌতূহল সবকিছু নিয়ে, এখানে আসার এতদিন পর যেন কিছুতে ওর এই প্রথম ইন্টারেস্ট এসেছিল, কিন্তু কাকে সব জিজ্ঞেস করতে পারতো ও?

রাতে ডিনারের পর গুটিগুটি পায়ে ও বাবার স্টাডিতে ঢুকেছিল। ফরেস্ট অফিসার দিগ্বিজয় রায়ের অনুভবশক্তি বেশ প্রখর। দীর্ঘদিন জঙ্গলে কাটানোর দরুণ ঘ্রাণ, শ্রবণ আর দৃষ্টিশক্তি যেন আগে থেকেই সব বুঝিয়ে দেয়। সামান্য পাতার খসখস আওয়াজ বুঝিয়ে দেয় বিপদ আসছে কিনা। গুড়াই রুমে ঢুকতেই বড় আদর করে ডেকে কাছে বসিয়েছিলেন। গুড়াই কিছু বলার আগেই বলেছিলেন,
"ছেলেটার গল্প শুনবি?"
গুড়াই অবাক হয়ে তাকাতে তিনি বলেছিলেন, "তুই যে বিকেল থেকে ওটাই ভেবে যাচ্ছিস, তা তো বুঝতেই পারছি।"
এতদিনের জমিয়ে রাখা ঠান্ডা রাগ যেন কোথায় উবে গিয়েছিল। গুড়াই বাবার কোলে উঠে বসে গলায় জড়িয়ে ধরে বলেছিল, "বলো তাহলে।"
"দাঁড়া, দাঁড়া, চল ছাদে গিয়ে বসে সব বলি তোকে। রাতের আকাশের নীচে জঙ্গলের নিস্তব্ধতায়, জ্যোৎস্নার আলোতে দেখবি সব কত সুন্দর।"
ওর একটু একটু ভয় করছিল, "মা যাবে?"
"তোর মা এখনই হয়তো ঘুমিয়ে কাদা। আর চিন্তা নেই, আমি তো আছি।"

দুজনে যখন সত্যিই রাতের আকাশের নীচে ছাদের উপর রাখা চেয়ারে বসেছিল, যেন জঙ্গলের সব গাছ, পশুপাখি কান পেতে শুনতে চাইছিল সব কথা। দিগ্বিজয়বাবু বলা শুরু করেছিলেন,
"জানিস তো, জঙ্গল থেকে হেন জিনিস নেই যা বেআইনিভাবে পাচার হয়। গাছের কাঠ থেকে শুরু করে হরিণের শিং, বাঘের ছাল, হাতির দাঁত প্রায় সবকিছু। আর এই কাজ করার একটা মস্ত বড় দল প্রতি জঙ্গলের আশেপাশেই থাকে। আর আমাদের কাজই হলো তাদের আটকে জঙ্গলকে জঙ্গলের মতো থাকতে দেওয়া। আমি এখানে এসেই শুনেছিলাম যে এই জঙ্গলে নাকি চোরাচালানকারী কারোর টিকি দেখা যায় না, চুরির বালাই নেই বেশ কিছুদিন হলো, আর তার পেছনে নাকি মস্ত বড় কারণ হলো ঐ বাচ্চা ছেলেটি, যাকে দেখলি, বিজু। সে নাকি বুঝতে পারে জঙ্গলের কোনও বিপদ হলে, কোনও পশু যখন বিপন্ন বা কোনও পাখি যখন আহত, সে সবটাই বুঝতে পারে। ছোট থেকেই নাকি নিজে আঘাত পেলে সে কোনওদিন কাঁদেনি, কিন্তু জঙ্গলে থাকা পশুদের বিপদে বা মৃত্যুতে সে ভীষণ কষ্ট পায়, তখন কান্না থামানো যায় না। তুই তো শুনেই থাকবি মাঝেমধ্যে ট্রেনে কাটা পড়ে পশুরা, এরকম এক ঘটনা ঘটতে পারে ভেবে সে পৌঁছে গিয়েছিল রেললাইনের ধারে, কিন্তু বাঁচাতে পারেনি পশুটিকে। সে ঐ মৃত পশুর পাশে বসেছিল একা, যতক্ষণ না অন্য কেউ এসে সেই মৃতদেহ সরিয়ে নিয়ে যায়। মৃত পশুর দেহকে একা ফেলে আসতে পারেনি।"
গুড়াইয়ের মুখ হাঁ হয়েই ছিল শুনতে শুনতে। বিস্ময়ে চোখের পলক পড়ছিল না। ওর বাবা বলে যাচ্ছিল।
"তো এইরকম অনেক কান্ড আছে। কখনও কখনও কোনও পাখির শুশ্রূষা করে তাকে বাঁচিয়েছে, বা কোনও পশুর শরীর থেকে কাঁটা বের করে দিয়েছে, এরকমও শোনা গেছে। তো দুই বছর আগে চোরাচালানকারী দল ঠিক করে জঙ্গলে বড়সড় সর্বনাশ করবে, মূল টার্গেট ছিল হাতির দাঁত। বিজু দেখেছে যত দিন গেছে তত তার অনুভবশক্তি প্রখর হয়েছে, দূরে কোথাও বিপজ্জনক ঘটনা ঘটার আগে সে বুঝতে পেরেছে। আর এটা কোনও অলৌকিক ঘটনা নয় কিন্তু।"
"মানে, দূরের কোনও বিপদ আগে থেকে বুঝতে পারা অলৌকিক নয়?"
"না, অলৌকিক নয়। হাতির পাল যখন একসঙ্গে চলাফেরা করে তখন তারা হাঁটার সঙ্গে সঙ্গে তথ্য সংগ্রহও করে আর এটা করতে সাহায্য করে তাদের শুঁড়। শুঁড়ের সাহায্যে কোনও প্রাপ্তবয়স্ক হাতি সেই পথে অন্য কোনও হাতির ছেড়ে যাওয়া কোনও কেমিক্যাল সিগনাল গ্রহণ করে তাদের মনকে অ্যালার্ট করতে পারে। অন্য হাতির পাল এই পথে কোনও বিপজ্জনক কিছুর সম্মুখীন হয়ে থাকলে এরাও সেটা জানতে পারে এইভাবে। হাঁটার সময় হাতিরা সবসময়ই সজাগ থাকে পথে অন্য কোনও পশু লুকিয়ে তাদের ক্ষতি করতে চাইছে কিনা সেই ব্যাপারে। এই হাতিরাই শুঁড়ের সাহায্যে উচ্চনাদে চিৎকার বা গর্জন করলে সেটা শান্ত জঙ্গলে ছড়িয়ে পড়ে, এমনকী সেই শব্দ মাটির সারফেসের ঠিক নীচ দিয়ে গুড়গুড় কম্পনের মাধ্যমে সামনের দিকে পৌঁছে যায়। জানিস কতটা? প্রায় দশ কিলোমিটার। হাতিরা তাদের পায়ে সেই কম্পন অনুভব করতে পারে আর বুঝে যায় সামনে দূরে অন্য হাতিদের অবস্থানের কথা। তো ঐ বিপদের দিনে বিজুও এরকমভাবেই বুঝেছিল নিশ্চয়ই। আর ও সেটা বুঝতে পেরে কালক্ষেপ না করে ফরেস্ট অফিসারদের জানিয়ে তাদের নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিল সেই বিপদের জায়গায়। হাতেনাতে ধরা পড়েছিল ঐ দল। এবং ঐ দলের থেকে খবর বের করে আরও বড় দলের খোঁজ পেয়ে তাদেরও জেলে পুরেছিল পুলিশ। এভাবেই এই জঙ্গলে বদমাশদের উপদ্রব কমে যায়। তারপর থেকে নাকি বিজু জঙ্গলে থাকা হাতির দলেরই একজন হয়ে উঠেছে। এখনও নাকি কোনও বিপদ ঘটলেই বিজু ঐ হাতির দলকে নিয়ে পৌঁছে যায় সেই জায়গায়। বিজু যেকোনও জায়গায় থেকে বুঝতে পারে কোনও বিপদের কথা, হাতিরা কোনওভাবে শুঁড়ের সাহায্যে নিশ্চয়ই সিগনাল পাঠায় ওকে, আর ও হাতিদের খুঁজে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে মিশনে।"
সবটা শুনে ভীষণ মজা পাচ্ছিল গুড়াই। উত্তেজনায় ও বারবার জিজ্ঞেস করছিল, "হাতির শুঁড়… হাতির শুঁড় কী করে, মানে হাতির শুঁড় এসব করতে পারে, সত্যি? দেখলাম বিজুকেও শুঁড়ের উপর বসিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল।"

শুঁড়ের ওপর গুড়াই

হেসে উঠলেন দিগ্বিজয়বাবু। "হ্যাঁ, হাতির শুঁড় বড় অদ্ভুত জিনিস, আর কোনও প্রাণীর কাছে এরকম কিছু খুঁজে পাওয়া যায় না। হাতি শুঁড় দিয়ে গন্ধ শোঁকে। পৃথিবীতে যত প্রাণী আছে তাদের মধ্যে হাতিই সর্বশ্রেষ্ঠ স্নিফার, যারা সবচেয়ে ভালো বা সবচেয়ে দূরের জিনিস, এমনকী কয়েক কিলোমিটার দূরে থাকা জলাশয়ের অবস্থানও শুঁকে নিয়ে চিনতে পারে। শুঁড় দিয়ে খাবার সংগ্রহ তো করেই, হাতি তার শুঁড়কে মানুষের হাতের মতোও ব্যবহার করে। একটা আট বছরের হাতিও পড়ে থাকা ছোট গাছের গুঁড়ি বয়ে নিয়ে যেতে পারে। জানিস, ওদের শুঁড়ে কোনও হাড় নেই কিন্তু প্রায় চল্লিশ হাজার মাসল বা পেশি আছে। শুঁড় দিয়ে কোনো গাছের ডাল ভেঙে হাতি তার কাজে লাগায়, কখনো কখনো আশেপাশে ভনভন করতে থাকা কীটপতঙ্গ উড়িয়ে হাঁটতে থাকে। আবার একইসঙ্গে শুঁড়কে সূক্ষ্ম কাজেও ব্যবহার করতে পারে। মানুষের হাতের আঙুলের মতো ব্যবহার করে, যেমন উঁচু জায়গা থেকে ফল পেড়ে খাওয়া বা মাটিতে পড়ে থাকা ফলকে ঠিক আঙুলের মতো ধরে মুখে ঢোকানো বা চোখে কোনওকিছু পড়লে শুঁড়ের ডগা দিয়ে সরিয়ে দেয়।
একটু বড় হাতির শুঁড়ের দৈর্ঘ্য হয় প্রায় দেড় মিটার আর সেই শুঁড়কে তারা যেকোনো ফর্মে বেঁকিয়ে ফেলতে পারে। ওরা শুঁড়কে সংকুচিত করে প্রায় আট লিটার জল ভরে নিতে পারে শুঁড়ের মধ্যে, তারপর আবার প্রসারিত করে নিজের গায়ে ঢেলে নিয়ে ঠান্ডা হয়ে যায়। দারুণ না? কী না করতে পারে হাতি তার শুঁড় নিয়ে? এই শুঁড়ের সাহায্যে শুঁকেই হাতি তার দলবলের সবার খোঁজ রাখে, প্রত্যেকের আলাদা আলাদা গন্ধ চিনে মনে রাখে আর ওদের স্মৃতিশক্তির ব্যাপারে তো শুনেছিসই… "

সেদিন রাতে খোলা আকাশের নিচে, অল্প ঠান্ডা হাওয়ার মাঝে এরকম নানা কথা শুনতে শুনতে কখন যে ঘুমের চাদর এসে জড়িয়ে ধরেছিল গুড়াইকে, ও বুঝতেই পারেনি। ওর বাবা ওকে কোলে করে নামিয়ে মায়ের পাশে শুইয়ে দিয়েছিল।

গুড়াইয়ের বেশি সময় লাগেনি বিজুকে খুঁজে বিজুর সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে। জঙ্গলে সাধারণত যখন দুটি বারো বছরের ছেলে একদম আলাদা পরিবেশ থেকে এসে একসঙ্গে মেশা শুরু করে, তখন শহুরে মন গ্রাম্য মনের উপর প্রভাব বিস্তার করে সহজে, কিন্তু এখানে হয়েছে উল্টো। গুড়াই নিজের সাধের মোবাইল, কম্পিউটার গেমস, ভিডিও গেমস, পাজল, ইউটিউব সব ছেড়ে বিজুর সঙ্গে হাতে একটা কঞ্চি নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। পাখি খোঁজে, শুকনো পাতার উপর বসে থাকে, পশুদের কাছে গিয়ে তাদের সঙ্গে মিশে যায়। বিজু এই বয়সেই হরবোলা। নানা পাখি আর পশুর ডাক এমন নকল করতে পারে তা না দেখলে বা না শুনলে বিশ্বাস করা যায় না।
বিজু ওর হাত ধরে নিয়ে যায় হাতির দল, হরিণের দল, পাখিদের মাঝে। আর ও অবাক হয়ে দেখতে থাকে, রোমাঞ্চিত হতে থাকে। বিজু চেষ্টা করে গুড়াইকে হাতির শুঁড়ে ওঠাতে, কিন্তু গুড়াই ভয় পায় পড়ে যাওয়ার। তবে হাতিরা অত মানবে কেন, একটি মা হাতি একদিন তাই গুড়াইকে দেখতে পেয়েই তুলে নিয়েছিল শুঁড়ের সাহায্যে, বসিয়ে দিয়েছিল শুঁড়ের উপর। ভয় পেয়ে প্রথমে চিৎকার করলেও যখন দুলকি চালে হাতিটি চলতে শুরু করে, ওর ভয় ধীরে ধীরে কেটে যায়। পাশে থাকা আরেকটি হাতির শুঁড়ে বিজুও উঠে বসে। ওরা দুলতে দুলতে ভাসতে ভাসতে এগিয়ে যায় সামনের দিকে, সবুজ জঙ্গলের মধ্যে।

ছবিঃ
শিল্পী ঘোষ
উইকিপিডিয়া

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা