সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo

উফ!কি গরম!তার মধ্যে আবার নানা রকম ঝামেলা – রোজ রাস্তা-ঘাটে মিছিল, জ্যাম-জট, সব মিলিয়ে জীবন বড় হাঁস-ফাঁস। শুধু কিলো কিলো তরমুজ খেয়ে খেয়েই পাগল হয়ে গেলাম, বুঝলে!আমের কোনো দেখাই নেই।তোমার জীবনেও বেশ সমস্যা, আমি জানি – টিফিন নিয়ে, গরম হয়ে যাওয়া খাবার জল নিয়ে, স্কুলে ওয়াটার বটলে জল শেষ হয়ে যাওয়া নিয়ে, আইস-ক্রিম-কোল্ড ড্রিঙ্ক না খেতে দেওয়া নিয়ে…আরও কত কি! বড্ড বাজে এই গরমকাল, আমার একদম ভালো লাগে না।শুধু নানা রকম রসাল ফলগুলোই যা পাওনা!এই গরমে বাপু সাবধানে থেকো, খেলাধূলা ছাওয়ায় বা ঢাকা জায়গায় করাই ভাল।কি আর বলি বল তো!মনে মনে আবার রাগ কোরো না যেন, শেষমেষ বাবা-মা-এর মতো, তুমিও!!! et tu Brute!!! (You too, Brutus!)

গল্পে ফিরি, বাবা!না হলে আবার কি বলতে কি বলে ফেলব!

ইংরেজরা তো বিষম রেগে গিয়ে, “দেখাচ্ছি মজা” বলে ১৮৫৭ সালের ৮ই এপ্রিল দুম করে মঙ্গল পাণ্ডের ফাঁসি দিয়ে বসল। আর ব্যাস, যায় কোথায়! খবর আগুনের মত ছড়িয়ে পড়ল সারা ভারতে।১০ই মে, ১৮৫৭ সাল। নতুন বিদ্রোহের সূচনা হল মীরাটের সেনা-শিবিরে।

তবে হ্যাঁ, একথা সত্যি, যে সমস্যার কিন্তু অনেক আগে থেকেই। বৃটিশরাই তৈরী করেছিল ভারতীয় সেপাইদের। আর তাদের মধ্যে নানা রকমের ক্ষোভ জমছিল অনেক আগে থেকেই। ১৮০৬ সালে মাদ্রাজ সেনাবাহিনীতে ভারতীয়দের মধ্যে ইউরোপীয় পোশাক, আচার-ব্যবহার জোর করে চাপিয়ে দিতে গেলে বিদ্রোহ দেখা দেয়। ১৮২৪ সালে বেঙ্গল রেজিমেন্টের ভারতীয় পদাতিক সৈন্যদের সেই কোন দূর বার্মা-তে যেতে বললে তারা সেই অভিযানে যেতে অস্বীকার করে। তার ফলে তাদের খুব করে শাস্তি দিয়ে সেনাবাহিনী থেকে তাড়িয়েই দেওয়া হয়। আবার ১৮৪৪ সালে বেঙ্গল আর্মির সাতটি ব্যাটালিয়ন ভাষা-বৈষম্যের বিরূদ্ধে বিদ্রোহ করে।যা দেখা যাচ্ছে তা হল, ভারতীয়রা ইংরেজ-দের সেনাবাহিনী-তে ছিল বটে, কিন্তু সুখে ছিল না।ইংরেজরা তাদের-ই ব্যবহার করত নিজেদের সাম্রাজ্য বিস্তারের জন্য, আবার তাদেরই পদানত করে রাখার জন্য অত্যাচার চালিয়ে যেত পুরোদমে।

শুনলে অবাকই হবে জান!যখন মহাবিদ্রোহ শুরু হল, বাংলার বাহিনীতে বৃটিশ সৈন্যের সংখ্যা ছিল ২৩ হাজার মাত্র, আর ভারতীয় সৈন্যদের সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ২৯ হাজার। তখন ভারতের গভর্নর জেনারেল ছিলেন লর্ড ডালহৌসি। তাঁর মত চতুর মানুষ ঠিকই আশঙ্কা করেছিলেন যে এই রকম সংখ্যানুপাতিক বৈষম্য বিপদ ডেকে আনতে পারে। সাম্রাজ্য বাঁচাতে হলে বৃটিশ সৈন্যের সংখ্যা অবশ্যই বাড়াতে হবে।

ভারতীয় সেপাই-রা ছিল কৃষিজীবী পরিবার থেকে আসা মানুষ। বৃটিশ শাসকেরা এই সেপাইদের সেনাবাহিনী-তে নিয়েছিল নিজেদের শাসনব্যবস্থ্যা ঠিক রাখতে আর তাদের সাম্রাজ্য বাড়ানোর কাজে ব্যবহার করতে।১৮৩০ সালে বৃটিশ সেনাবাহিনীতে ভারতীয় সেপাইদের সংখ্যা ছিল দু-লক্ষের কিছু বেশি। ১৮১৭ থেকে ১৮১৯ সালের মধ্যে মারাঠা-দের সঙ্গে তিনবার যুদ্ধ করার পর পরের তিন দশক আর যুদ্ধ করতে হয়নি। কিন্তু বৃটিশরাও ভারতীয় সেপাইদের নিয়ে তৈরী সেনাবাহিনী ভেঙ্গে দেয় নি। তখন এদের নানা কাজে লাগিয়েছে। কখনও পুলিশের কাজ করিয়েছে, কখনও খাজনা আদায়ের কাজ করিয়েছে, বৃটিশ-বিরোধী অসন্তোষ দেখা দিলে বা দমন করার কাজও তারাই করত। বৃটিশ শাসকদের নির্দেশে তারা এই সব কাজ করতে বাধ্য হলেও, তারা সবসময় বুঝতে পারত যে তারা অত্যাচারীত ও বৈষম্যের শিকার – বেতন, ভাতা, পোশাক-পরিচ্ছদ, বাসস্থান, ব্যক্তিমর্যাদা—সব দিক দিয়েই ভারতীয় সেপাইরা সবসময়েই বৈষম্য আর বঞ্চনার খুব খারাপ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হত। যখন তাদর সাম্রাজ্য বিস্তারের জন্য বাইরে পাঠানো হত, তাদের সুখ-সাচ্ছন্দ্যের প্রতি বৃটিশ অফিসারদের কোনো নজরই থাকত না।এই সব মিলিয়ে ভারতীয় সেপাইদের মধ্যে ক্ষোভ আর অসন্তোষ জমেছিল।আর তারা ছিল সুযোগের অপেক্ষায়…

সেই সাসপেন্স-টা পরের সংখ্যার জন্য ফেলে রাখলাম। তুমি আবার রাগ কোরো না যেন!

আর্য চ্যাটার্জি ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। বেশ কয়েকবছর বিভিন্ন ইংরেজি পত্র-পত্রিকায় নানা বিষয়ে লেখালিখি করেন। বর্তমানে পারিবারিক ঐতিহ্যের টানে একটি সরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। হাওড়া সালকিয়ার বাসিন্দা আর্য নিয়মিত গান বাজনার চর্চা করেন; নিজের ইচ্ছায় একাধিক তাল যন্ত্র বাজানো রপ্ত করেছেন তিনি। নিজের শখের কিছু লেখা আর ইচ্ছামতী-তে লেখা ছাড়া এখন আর কোনো পত্র-পত্রিকার সঙ্গে আপাততঃ যুক্ত নন। শখের লেখা ব্লগে লেখেন। বেশিরভাগই বড়দের জন্য কবিতা।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা