সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
একমুঠো ছায়া আর ভো-কাট্টার গানঃ অচিন্ত্য সুরাল

'...ছেলেরা যে বই পড়িবে তাহার কিছু বুঝিবে এবং কিছু বুঝিবে না, এইরূপ বিধান থাকা চাই। আমরা ছেলেবেলায় একধার হইতে বই পড়িয়া যাইতাম; যাহা বুঝিতাম এবং যাহা বুঝিতাম না, দুই-ই আমাদের মনের উপর কাজ করিয়া যায়। সংসারটাও ছেলেদের উপর ঠিক তেমনি করিয়া কাজ করে। ইহার যতটুকু তাহারা বোঝে ততটুকু তাহারা পায়, যাহা বোঝে না তাহাও তাহাদিগকে সামনের দিকে ঠেলে। '

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'জীবনস্মৃতি' থেকে নেওয়া এই বক্তব্য দিয়ে শুরু হচ্ছে অচিন্ত্য সুরাল-এর কিশোরবেলার পদ্য সংকলন 'একমুঠো ছায়া আর ভো-কাট্টার গান'। এবং এই ভাবনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই এই বইয়ের বিভিন্ন স্বাদের কবিতাগুলি ছুঁয়ে গেছে ছোট থেকে বড় হয়ে ওঠার পথের নানা অভিজ্ঞতাকে। 'করপুট', 'প্রকৃতি ও পরিবেশ', 'সমাজচেতনা', 'মাতৃভাষা ও মাতৃভূমি', 'ছেলেবেলা' ও 'ছড়ানো ছড়া' — এমন ছয়টি বিভাগে সাজানো রয়েছে পঞ্চাশটির ও বেশি কবিতা। কিশোরমনের ওঠা-পড়া, ভাবনা-চিন্তা, তাদের মনে জেগে ওঠা সম্ভাব্য সমস্যাগুলির খোঁজ মিলবে এই বই এর পাতায় পাতায়।

প্রকৃতি ও পরিবেশ, মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসা এবং সমাজচেতনা — কিশোর-কিশোরীদের মনে এমন বিবিধ বিষয় সহজ ছন্দে সুরে ছুঁয়ে যান তিনি। আধুনিক বাসস্থান তৈরি করার তাগিদে শহরে গ্রামে বুঝিয়ে ফেলা হয় পুকুর, নষ্ট হয় পরিবেশের ভারসাম্য। এই বিষয়ে 'তিরিশতলার বাসিন্দাকে' শীর্ষক কবিতায় তিনি লেখেন,

এই যে তোমার তিরিশতলা বাড়ি
এই সেদিনও এরই নীচে
              ছিল ব্যাঙের ঘর।
মানুষ এসে ভাঙল সে ঘর,
              ব্যাঙের সঙ্গে চিরকালের আড়ি।...

... শুনলে তোমার মনটা খারাপ হবে —
             তাদের ছিল একটা মোটে ঘর।
সেখান থেকে হারিয়ে গেল তারা।
ঘনিষ্ঠতা ছিল তাদের কত
           এর ডাকে ও সাড়া দিত, চিনত পরস্পর।

কিন্তু তোমার তিরিশতলা বাড়ি —
                  অনেকগুলো ঘর।
যে যার খোপে বন্দী হয়ে দরজা দিল টেনে,
কারও কানে পৌঁছাবে না তোমার কন্ঠস্বর
                  বলো তোমায় কয়জন-ই বা চেনে!

কিংবা 'লোকটা' শীর্ষক কবিতায়, যেখানে বাসে একজন মানুষকে দেখে সন্দেহ জাগছে সে চোর বা পকেটমার কিনা, কারণ যে বারবার নিজের জামার পকেটে হাত দিচ্ছিল।কিন্তু কবিতার শেষে গিয়ে দেখি,

শিয়ালদহতে নামল অনেকে
          লোকটা তবুও নড়লো না দেখে
উফ্‌ আমি কী য করি!
          ঠিক তক্ষুনি, হরি হে হরি —
লোকটার ঠোঁটে স্বস্তির হাসি
          পকেটের থেকে ছোট এক বাঁশি
বার করে দিল ফুঁ।
          যেন ছুঁ মন্তর ছুঁ —
লোকটা সত্যি চোর। ...

... বাজালো সে বাঁশি বেশ কিছুক্ষণ
            চুরি করে নিল সকলের মন।

এই বইয়ের মায়াময় প্রচ্ছদটি এঁকেছেন দেবব্রত ঘোষ আর সাদা-কালোয় অপূর্ব অলংকরণগুলি করেছেন শিবশঙ্কর ভট্টাচার্য। বইটি প্রকাশ করেছেন সহজপাঠ।

 

একমুঠো ছায়া আর ভো-কাট্টার গান
অচিন্ত্য সুরাল
প্রচ্ছদঃ দেবব্রত ঘোষ
অলঙ্করণঃ শিবশঙ্কর ভট্টাচার্য
প্রকাশকঃ সহজপাঠ
প্রথম প্রকাশঃ ২০১৬
মূল্যঃ ১২৫/- ( ২০১৬)

বইপোকা অবশ্যই নতুন নতুন বই পড়তে ভালবাসেন। আরো ভালবাসেন সেইসব বই এর খোঁজ সবাইকে দিতে। নতুন নতুন বইয়ের খোঁজ পেতে চোখ রাখ বইপোকার দপ্তরে। আর তোমার কাছে যদি কোন খুব ভাল বই থাকে, যেটার কথা তুমি বন্ধুদের এবং বইপোকাকে জানাতে চাও, তাহলে বইপোকাকে সেই বইয়ের খবর জানিয়ে চিঠি লেখ ইচ্ছামতীর মেইল ঠিকানায়।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা