সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
আপেল কেন জলে ভাসে?

বাড়িতে সরস্বতী পুজো। তিন্নিকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে ফল কাটার জন্য। জলভর্তি একটা পাত্রে পেয়ারা, আপেল, কলা, আঙুর, বেদানা, শাঁকালু ইত্যাদি ফলগুলি ও একটা একটা করে ধুয়ে নিচ্ছিল আর দিদি পিঙ্কির সঙ্গে খুনসুটি করছিল। চুপচাপ কাজ করা ওর ধাতে নেই। কারো না কারোর পিছনে লাগবেই, না হলে নিজের মনেই বকবক করতে থাকবে। আমি খবরের কাগজ পড়ছিলাম। খেলার পাতাটা সবে খুলেছি। এমন সময় হাঠাৎ-ই ও চিৎকার করে আমাকে ডাকতে লাগল, "কাকু শিগগির এদিকে এস"। পিঙ্কির সঙ্গে তর্কযুদ্ধে যখন পেরে ওঠে না তখনই ও আমাকে ডাকতে শুরু করে। ওর ধারণা আমি সবসময়ই ওর হয়ে কথা বলবো। ওর ডাক শুনে কাগজটা গুটিয়ে রেখে বসার ঘরে এলাম। এসে দেখি ঘরের আবহাওয়া ঠান্ডা। পিঙ্কি আপন মনে আলপনা দিচ্ছে, আর তিন্নি গামলা ভর্তি জলে চুপচাপ ফলগুলি ধুচ্ছে। এমন দৃশ্য দেখব আশা করিনি। দুই বোন এক জায়গায় অথচ বাগ্‌যুদ্ধ নেই! অবাক হয়ে তিন্নির দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, "কী হয়েছে রে?"

ও গামলার জলে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে বলল, "দেখ, কী কান্ড"।

কিছু বুঝতে না পেরে ওর দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি দেখে তিন্নি ধমক দিয়ে বলল, "কাছে এসে দেখ"।

কাছে যেতেই ও বলল, "দেখ, ছোট্ট আঙুরগুলো জলে ডুবে গেছে, অথচ এত বড় আপেলটা জলে ভাসছে। কেন?"

ওর কথা শুনে পিঙ্কিও ছুটে এল। সব দেখেশুনে অবাক হয়ে বলল, "সত্যিই তো?"

আমিও মাথা নেড়ে বললাম, "অবাক হওয়ার মতোই কান্ড বটে"।

তিন্নি আমার দিকে তাকিয়ে বলল, "হেঁয়ালি না করে বলতো ব্যাপারটা কী?"

পিঙ্কিও বোনের সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই কথা বলতে লাগল।

সত্যিই তো আঙুরের চেয়ে অনেক বড় নিরেট আপেলটা জলে ভাসছে কেন? কৌতূহল হওয়াটাই স্বাভাবিক। উত্তরটা আমার জানাই ছিল। তবুও তিন্নিকে রাগানোর জন্য বললাম, "এর উত্তর আপেলটাই দিতে পারবে"।

তিন্নি উঠে এসে আমাকে জোর করে সোফায় বসিয়ে দিয়ে বলল, "আগে উত্তর দেবে তারপর এখান থেকে উঠতে পারবে, না হলে সারাদিন এখানে বসে থাকতে হবে"।

আমিও রহস্য করে বললাম, "আপেলটা কেটে ফেল তাহলেই উত্তরটা খুঁজে পাবি"।

আপেল কেন জলে ভাসে?

একটা ছুরি দিয়ে তিন্নি আপেলটা কেটে ফেললো। কাটা আপেলটা আমাকে দেখিয়ে বলল, "কই কোনো রহস্যই তো খুঁজে পাচ্ছি না"।

আমি বললাম, "ভালো করে দেখ, পাবি"।

আপেলটা উল্টেপাল্টে দেখে পিঙ্কি, তিন্নি দু"জনেই মাথা নেড়ে জানালো ওরা কিছুই বুঝতে পারছে না। অগত্যা আমাকেই রহস্যটা ফাঁস করতে হল।

পিঙ্কি ও তিন্নির দিকে তাকিয়ে বললাম, "কাটা আপেলটার দিকে ভালো করে তাকিয়ে দেখ এর ভিতরে একটা খোঁদল আছে। এই খোঁদলের ভিতর আছে গোটাকয়েক বীজ আর থাকে বাতাস। গোটা অবস্থায় ফলটাকে নিরেট মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এটা নিরেট নয়। ঐ খোঁদলে থাকা বায়ু বা বাতাস ফলটাকে জলে ভাসতে সাহায্য করে। আঙুর, পেয়ারা ইত্যাদি ফলগুলোতে এই ধরেনের কোনো খোঁদল থাকে না। অর্থাৎ ঐ ফলগুলো প্রকৃত নিরেট। ভিতরে কোনো বায়ু থাকে না। তাই ওরা ডুবে যায়"।

তিন্নি ওর স্বভাব মতো গম্ভীর চালে "বুঝলাম" বলে আবার কাজে বসে গেল।

আমিও সোফা ছেড়ে নিজের ঘরের দিকে পা বাড়ালাম।


ছবিঃ পিক্সাবে

বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদের সহ সভাপতি কমলবিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় ছোটদের এবং বড় দের জন্য বিজ্ঞান বিষয়ক বহু বই লিখেছেন। বিভিন্ন জনপ্রিয় পত্রপত্রিকা এবং ওয়েব ম্যাগাজিনে তিনি নিয়মিত লেখালিখি করেন।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা