এই মেয়েই ছিল সেই শাহজাদী যার জীবন আহমেদ মেশেদে বাঁচিয়েছিল। তার বাবা, সেই বাদশাহ, ধর্মস্থান দর্শন করে ফিরছিলেন, আর সঙ্গে আসা রক্ষীদের সাথে মজা করার জন্য শাহজাদী অন্য পথে চলে আসে, আর আহমেদের দেখা পেয়ে যায়। তার অনুরোধে, আহমেদ বাদশাহের সাথে চলতে থাক্ল। চলার পথে পরের দিন তারা আহমেদের আব্বাকেও খুঁজে পেল। সবাই মিলে তখন রাজধানীর দিকে চলতে থাকল।
রাজধানী থেকে তিন দিনের দূরত্বে, কাজবিনের কাছে পর্বতের উপরে সঙ্গীসাথীদের নিয়ে থাকত পর্বতের বুড়ো, যে ঘাতকদের রাজা নামে পরিচিত ছিল। তার এতই ক্ষমতা ছিল যে তার এক হুকুমে তার অনুগতেরা দূর-দূরান্তে গিয়ে তার শত্রুদের মেরে আসতে পারত, সেই শত্রু যতই শক্তিশালী হোক না কেন।
যখন সে শুনল পারস্যের বাদশাহ তাকে এবং তার সঙ্গীসাথীদের ধ্বংস করার জন্য সৈন্য সংগ্রহ করছে, সে তখন খুব রেগে গেল, আর নিজের একজন সংগীকে ডেকে বলল, "যাও, পারস্যের বাদশাহকে মেরে ফেল।" সেই লোকটা রুটি, জল আর এটা ধারালো ছোরা নিয়ে চলে গেল।
এদিকে, মরুভূমির বুড়োর হাত থেকে নিস্তার পাওয়ার পর থেকে আহমেদ প্রতি সকালে সেই স্ফটিকের পাত্রে এক ফোঁটা করে জল ফেলে তার ভেতরে দেখত। এক সকালে সে সেই জলের ফোঁটার ভেতরে দেখতে পেল বাদশা ঘুমিয়ে আছেন, আর তাঁর পাশে এক ডাকাত দাঁড়িয়ে আছে, খোলা ছোরা উদ্যত করে। সে তাড়াতাড়ি বাদশাহের কাছে ছুটে গেল এবং তাঁকে বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করল, কিন্তু বাদশাহ ব্যাপারটা শুনে হেসেই উড়িয়ে দিলেন। তিনি তাঁর রক্ষীদের ভরসা করতেন।
কিন্তু তা সত্বেও, আহমেদ ঠিক করল সে খেয়াল রাখবে। অধকার নেমে এল, আর রক্ষীরা সব ঘুমিয়ে পড়ল। প্রাসাদ নিঃস্তব্ধ হয়ে গেল। প্রহর কাটতে লাগল, চেয়ে থাকতে থাকতে আহমেদ ক্লান্ত হয়ে পড়ল, এমন সময়ে সে দেখতে পেল একটা ঘন কালো ছায়ামূর্তি বাদশাহের ঘরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।