খেলাঘরখেলাঘর


আরে,স্কুল একেবারে ফাঁকা,একজন স্টুডেন্টকেও ও দেখতে পেল না।না মেম, না দারোয়ান,না চৌকিদার কেউ নেই!মেনগেটের সামনে হাজির হলো ও।কিন্তু একি,গেট যে বন্ধ হোয়ে গেছে!ও জোরে জোরে ধাক্কা দিলো গেটে,গেট খোলার চেষ্টা করল।না,গেট বাইরে থেকে বন্ধ!কান্না পাচ্ছিল চক্রর।ও জোরে জোরে ধাক্কা দিতে লাগলো,চীত্কার করে দারোয়ান,চৌকিদারদের ডাকতে লাগলো।না,কারো কোনো সাড়া নেই!ও চীত্কার করে উঠলো,গার্ড আঙ্কেল,গার্ড আঙ্কেল!কেউ এলো না,কেউ তাকে গেট খুলে দিয়ে গেলো না!
হঠাৎ চক্রর মনে পড়ল,স্কুলের পেছন দিকে আরও একটা গেট আছে।মনে পড়া মাত্র ও কানতে কানতে ছুটে চলল পেছন দিকের গেটের কাছে।দূর থেকেই দেখল গেট বন্ধ।তবু গেটের কাছে এলো,জোরে জোরে ধাক্কালো।এখানেও চীত্কার করে ডাকতে থাকলো গার্ড আঙ্কেল,গার্ড আঙ্কেল,বলে।
কেউ এলো না,কেউ তার ডাক সুনতে পেল না।পেছন গেটের পাশেই ও ব্যাগ, জলের বোতল নিয়ে মেঝেতে লেপটি মেরে বসে গেলো।ও হতাশায় দুটো পা সামনের দিকে ছড়িয়ে দিল।এখন আর কাঁদতে পার ছিলো  না ও,মাঝে মাঝে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে উঠছিল।শরীর শিহরণ দিয়ে উঠছিল।
--মা,মা,মা,কাতর ভাবে বলে উঠলো ও।মা তুমি কোথায়!আমায় এসে নিয়ে যাও,মা!একটু থেমে আবার বাবাকে ডাকতে থাকলো,বাবা,বাবা,বাপি তুমি কোথায়,তুমি কোথায়?ওর দু চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়তে থাকলো।
 

তাপস কিরণ রায় অর্থশাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করেন। স্কুলে শিক্ষকতা করেন বেশ কিছু বছর। পরে আয়কর বিভাগে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি মধ্য প্রদেশের জবলপুর শহরে বাস করেন। তিনি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লেখালিখি করেন। ছোটদের এবং বড়দের জন্য লেখা তাঁর অনেকগুলি বই-ও প্রকাশিত হয়েছে।