সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
খুব বেশি কথা

এ হল পশ্চিম আফ্রিকার ঘানা দেশের গল্প।
একদিন এক চাষা কিছু ওল খুঁজতে গেল।

খুব বেশি কথা

সে যখন মাটি খুঁড়ছিল, তখন একটা ওল তাকে বলল, "তুমি আমাকে জল দাও নি। তুমি আমাকে নিড়েন দাওনি। আর দিব্যি এসে গেছ খুঁড়ে নিয়ে যেতে!"
"অ্যাঁ !" বলে চাষা এদিক ওদিক তাকাল।
তারপরে সে নিজের কুকুরটার দিকে তাকিয়ে বলল, " তুই কি আমার সাথে কথা বলছিলি?"

খুব বেশি কথা

"না," ধমক দিল কুকুর,"ওল বলছিল।"
"ওরে বাবা রে!" চেঁচিয়ে উঠল চাষা। সে দৌড় লাগাল, চড়াই থেকে উৎরাই;আর সে দৌড়াতে থাকল, উৎরাই থেকে চড়াই। দৌড়াতে দৌড়াতে এক সময়ে তার সাথে একজন লোকের দেখা হল। সেই লোকটা কিছু মাছ নিয়ে যাচ্ছিল।

খুব বেশি কথা

"এই দিন দুপুরে গরমের মধ্যে দৌড়াও কেন?" জানতে চাইল সেই জেলে।
"আর বল কেন!" বলল চাষা, "প্রথমে আমার ওলটা কথা বলল, তারপরে আমার কুকুরটা কথা বলল।"
"যাহঃ" বলল জেলে, "সে হতে পারে না।"

খুব বেশি কথা

"আরে, হতে পারে তো," বলল একটা মাছ।
"ওরে বাবা রে!" চেঁচিয়ে উঠল চাষা আর জেলে।
তারা দৌড় লাগাল, চড়াই থেকে উৎরাই;আর তারা দৌড়াতে থাকল, উৎরাই থেকে চড়াই। দৌড়াতে দৌড়াতে এক সময়ে তাদের সাথে একজন লোকের দেখা হল। সেই লোকটা তাঁতে কাপড় বুনছিল।

খুব বেশি কথা

"এই দিন দুপুরে গরমের মধ্যে দৌড়াও কেন?" জানতে চাইল সেই তাঁতী।
"আর বল কেন!" বলল চাষা, "প্রথমে আমার ওলটা কথা বলল, তারপরে আমার কুকুরটা কথা বলল, আর তারপরে মাছটা কথা বলল।"
"যাহঃ" বলল তাঁতী, "সে হতে পারে না।"

খুব বেশি কথা

"আরে, হতে পারে তো," বলল তার কাপড়।
"ওরে বাবা রে!" চেঁচিয়ে উঠল চাষা আর জেলে আর তাঁতী।
তারা দৌড় লাগাল, চড়াই থেকে উৎরাই;আর তারা দৌড়াতে থাকল, উৎরাই থেকে চড়াই। দৌড়াতে দৌড়াতে এক সময়ে তাদের সাথে একজন মহিলার দেখা হল। সেই মহিলা সাঁতার কাটছিল।

খুব বেশি কথা

"আহ" জলের মধ্যে ভাসতে ভাসতে বলল সেই সাঁতারু,"এই দিন দুপুরে গরমের মধ্যে দৌড়াও কেন?"
"আর বল কেন!" বলল চাষা, "প্রথমে আমার ওলটা কথা বলল, তারপরে আমার কুকুরটা কথা বলল, তারপরে মাছটা কথা বলল, আর তারপরে কাপড়টা কথা বলল।"
"যাহঃ" চিৎসাঁতার দিতে দিতে বলল সেই সাঁতারু, "সে হতে পারে না।"

খুব বেশি কথা

"আরে, হতে পারে তো," বলল তাকে জল।
"ওরে বাবা রে!" চেঁচিয়ে উঠল চাষা আর জেলে আর তাঁতী আর সাঁতারু।
তারা দৌড় লাগাল, চড়াই থেকে উৎরাই;আর তারা দৌড়াতে থাকল, উৎরাই থেকে চড়াই। দৌড়াতে দৌড়াতে এক সময়ে তারা গ্রামের মোড়লের বাড়ি এসে পৌঁছাল।

খুব বেশি কথা

মোড়ল বেরিয়ে এসে নিজের সিংহাসনে বসল।
"এই দিন দুপুরে গরমের মধ্যে দৌড়াও কেন?" জিজ্ঞেস করল সে।
"আর বল কেন!" বলল চাষা, "প্রথমে আমার ওলটা কথা বলল, তারপরে আমার কুকুরটা কথা বলল, তারপরে মাছটা কথা বলল, তারপরে কাপড়টা কথা বলল, আর তারপরে জল কথা বলল।"
"কথা, কথা, কথা!" রেগে গেল মোড়ল।" খুব বেশি বাজে কথা বলছ! ওল মোটেও কথা বলে না। মাছ মোটেও কথা বলেন না। কাপড় মোটেও কথা বলে না। আর জল মোটেও কথা বলে না। এই সব হাবিজাবি কথা বললে গ্রামের মানুষের শান্তি নষ্ট হবে। যাও, যাও, নাহলে সব ক'টাকে গারদে পুরে দেব।"

খুব বেশি কথা

এই শুনে চাষা, জেলে, তাঁতী আর সাঁতারু দৌড়ে পালাল।
"ভাব!" নিজের মনে বলল মোড়ল," কথা বলা ওল! সেটা কখনও হয়!"
"যা বলেছ!" বলে উঠল তার সিংহাসন, "কেউ কোনদিন শুনেছে ওল কথা বলে!"

খুব বেশি কথা

"ওরে বাবা রে!" চেঁচিয়ে উঠল মোড়ল।
তারপরে সে চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এমন দৌড়াল যে তাকে আর খুঁজেই পাওয়া গেল না।

(ঘানার লোককথা)
মূল গল্পঃ টু মাচ্‌ টক্‌
লেখকঃ অ্যাঞ্জেলা শেলফ মেডিয়ারিস

ছবিঃ দেবিকা সারাওগি

মহাশ্বেতা রায় চলচ্চিত্রবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করেন। ওয়েব ডিজাইন, ফরমায়েশি লেখালিখি এবং অনুবাদ করা পেশা । একদা রূপনারায়ণপুর, এই মূহুর্তে কলকাতার বাসিন্দা মহাশ্বেতা ইচ্ছামতী ওয়েব পত্রিকার সম্পাদনা এবং বিভিন্ন বিভাগে লেখালিখি ছাড়াও এই ওয়েবসাইটের দেখভাল এবং অলংকরণের কাজ করেন। মূলতঃ ইচ্ছামতীর পাতায় ছোটদের জন্য লিখলেও, মাঝেমধ্যে বড়দের জন্যেও লেখার চেষ্টা করেন।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা